আমি এই শহরে চাঁদাবাজি করি না, আমার দু-চারটা বাড়িও নাই, ব্যবসাও নাই। আমি তেল ব্যবসা করি না, ঝুটের ভাগ নিতে যাই না। আমার দলের পদ-পদবী নিয়েও আমি প্রতিযোগিতা করি না। আমি এই শহরে নিরীহ মানুষের মতো রাজনীতি করি। আমি মানুষের সেবা করি। এর মানে এই না যে, এই শহরে খুন করবেন, চাঁদাবাজি করবেন আর আমি তাকিয়ে দেখবো। এই চরিত্রের কথা আপনারা জানেন। আমি আইভী এইসব অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করি।’
এভাবেই চিরাচরিত ভঙ্গিমায় দৃঢ়তার সাথে কঠোর ভাষায় বুধবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে নিজ বাসভবনের পাশে খেলাঘর আসরের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র চিকিৎসক সেলিনা হায়াৎ আইভী মন্তভ্য করেছেন ।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহবায়ক তৈমুর আলম খন্দকারকে ‘কাকা’ সম্বোধন করে আইভী আরও বলেন, ‘আপনি আপনার ভোট চান, আমি আমার ভোট চাইবো। জনগণ যাকে খুশি তাকে নির্বাচিত করবে।’
সরকারি দলের প্রার্থী হলেও কোনো অতিরিক্ত সুবিধা তিনি নিচ্ছেন না জানিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বলেন, গত তিনটি নির্বাচনেও কোনো সুবিধা নেননি তিনি। একবার বিরোধী দলে ছিলেন। অন্য দুইবার সরকারি দলে থেকেও কোনঠাসা অবস্থায় ছিলেন। এইবারও তিনি কোনঠাসা অবস্থায়। এই নির্বাচনে বেশি সুবিধা নিচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম।
তিনি আরও বলেন, ‘উনি কাদের থেকে সুবিধা নিচ্ছেন তা শহরবাসী জানেন। সুতরাং আমি ওইদিকে হাঁটবো না। আমি কোনঠাসা অবস্থায় থেকেই মানুষের দ্বারে যেতে চাই, মানুষের দুয়ারে যেতে চাই। আমি সেবা করতে চাই। আমার স্বার্থ এতটুকুই।’
সদ্য সাবেক মেয়র ও আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘জনগণ যাকে পছন্দ করে ভোট দেবে, আগামীতে সে সিটি কর্পোরেশন চালাবে। আমরা যেন কোনো ধরনের সহিংসতা, বিভেদের আশ্রয় না নেই। কারও প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য কোনো গলদ (ভুল) কাজ যেন না করি।’
নৌকা প্রতীকের জন্য মনোনীত প্রার্থী হলেও নিজেকে ‘সকলের আইভী’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। আইভী বলেন, ‘আমার মার্কা আইভীই। আমার মার্কা ছিল মোমবাতি, দোয়াত-কলম, আমার মার্কা ছিল নৌকা। এখনও আমার মার্কা নৌকা হলেও আমি আপনাদের আইভী। এই শহরের মানুষ আমার দ্বারা কখনও নির্যাতিত হবে না। এই কথা মনে রেখে আমার জন্য দোয়া করবেন।’
নির্বাচন ঘিরে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সরকারদলীয় প্রার্থী। ২০১১ সালেও এমনটা করা হয়েছিল, বলেন তিনি। সাধারণ জনগণকেই এইসব প্রতিহত করার আহ্বান জানান ডা. আইভী।
এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন খেলাঘর আসরের সভাপতি রথীন চক্রবর্তী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, ফারুক মহসিনসহ অনেক সাংস্কৃতিক নেতা ও কর্মী উপস্থিত ছিলেন ।









Discussion about this post