নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের একটি সমবায় সমিতি গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সর্বস্ব হারিয়ে এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে সমিতির ২ হাজার গ্রাহকের।
এ ব্যাপারে সোমবার ভুক্তভোগীরা আড়াইহাজার থানায় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন ।
সমিতির শত শত প্রতারিত গ্রাহকরা জানান, ২০০৮ সালের ১৪ অক্টোবর উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ইজারকান্দী গ্রামের জব্বার হাজীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম তার নিজস্ব লোকজন নিয়ে নিজ বাড়িতে ‘গণপ্রত্যাশা সমিতি’ নামে একটি মাল্টিপারপাস ব্যবসার অফিস খোলেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মাসিক সুদ দেয়া এবং সুদের বিনিময়ে টাকা ধার দেয়াই ছিল সমিতির প্রধান কাজ।
ধীরে ধীরে সমিতির কার্যক্রম ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়। ফলে বর্তমানে তাদের গ্রাহকসংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ১০০ জন।
ভুক্তভোগীরা জানান, সমিতির পক্ষ থেকে প্রত্যেক গ্রাহকের কাছ থেকে তিন লাখ থেকে শুরু করে ১২-১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জমা রাখা হয়েছিল। কিন্তু করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই সমিতির লোকজন তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে আনতে শুরু করে। গ্রাহকরা বিষয়টি বুঝে উঠার আগেই গত ৩০ অক্টোবর সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সুফিয়া বেগম, প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ফজলুল হক ওরফে ফজুল্লাহ, ম্যানেজার সফিউল্লাহ সুমন, সচিব ও পরিচালক মুক্তি আক্তার এবং ক্যাশিয়ার রাশেদ রাজন অফিস গুটিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান৷
এরপর থেকে গ্রাহকরা প্রতারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এলাকা ছাড়ার পাশাপাশি তাদের সবারই মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়া হয়।
গ্রাহকরা জানান, সমিতির কাছে প্রায় দুই হাজার গ্রাহকের রাখা কমপক্ষে ১৫ কোটি টাকা গচ্ছিত আছে।
ভুক্তভোগী সেলিনা আক্তার বেবী, সাদিয়া আক্তারসহ একাধিক মহিলা সদস্য জানান, সমিতির সব কর্মকর্তাই কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। নিজেদের কষ্টার্জিত জমানো টাকা হারিয়ে তারা এখন পথে বসেছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা সমবায় অফিসার নাহিদা নাছরিন বলেন, আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
আড়াইহাজার থানার ওসি নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তাদের কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।
আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সোহাগ হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে ।









Discussion about this post