নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও) আসনের এমপি লিয়াকত হোসেন খোকাকে কড়া জবান দিয়েছেন ব্যবসায়ী মামুন ভূইয়া। তাদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যে ক্রমশ উত্তেজনা ছড়াচ্ছে সোনারগাঁয়ে। আগামী পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে তাদের এ পাল্টাপাল্টি বক্তব্য, আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
শুক্রবার ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় সোনারগাঁয়ে মতবিনিময় সভা করেন মামুন ভূইয়া। একই দিনে সিলেটে কয়েক শ নেতাকর্মী ও অনুগামী নিয়ে মাজার জিয়ারত করতে যান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।
এর আগে সোনারগাঁও রয়েল রিসোর্টে পৌর নাগরিক কমিটির সভায় স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা বক্তব্যে শিল্পপতি সিআইপি মামুন ভূইয়াকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘বহু সিআইপি দেখেছি। অনেক সিআইপি খোকাকে সালাম দিয়ে খোকা বলেন। আমাকে সিআইপিগিরি দেখাবেন না। আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠু। প্রশাসনের ভয় দেখাবেন না।’
জবাবে শুক্রবার সভায় মামুন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে একটি রেস্টুরেন্টে মিটিং হচ্ছিল যার কিছু ভিডিও আমি দেখেছি। একজন জনপ্রতিনিধি তিনি বলতেছিল সিআইপিরা আমাকে সালাম দিয়ে কথা বলে, আসলে সিআইপির ইলাভোরেশন (পূর্ণাঙ্গ রূপ) কি মে বি সে হয়তো জানেনা। সিআইপি হতে হলে কারো পায়ে ধরে, হাত পা ধরে কান্না করে সিআইপি হওয়া যায়না। সিআইপি হতে হলে সিআইপির মত যোগ্যতা লাগে। তো একজন সিআইপি সম্পর্কে কথা বলতে হলে ভেবে চিন্তে বলা উচিত, আবার ভয় দেখায় তিনি নারায়ণগঞ্জে এই করবে সেই করবে।
ব্যবসায়ী ভূইয়া আরও বলেন, আমাদের একটি ব্যবসায়ীদের সংগঠন আছে বিকেএমইএ, সেই সংগঠনের নেতা হলো আমাদের প্রাণপ্রিয় এমপি সেলিম ওসমান সাহেব, তো উনার কাছে বিষয়টি আমি শেয়ার করবো, এখনও করিনি, ইনশাহআল্লাহ করবো। আমরা নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা করি। সেখানে শামীম ওসমান সাহেব আমাদের বটগাছ, উনি সব সময় আমাদেরকে ভালবেসে কথা বলে। আমরা উনাদের নিচেই আছি, উনাদের সাথেই আছি, উনাদের দলেই আছি। সোজা কথা উনারা আমাদেরকে সব সময় ছায়া দিয়েই রাখেন।
সেলিম ওসমান সাহেব আমাদেরকে ছায়া দিয়েই থাকেন। সেখানে এমন কোন ব্যক্তি জন্মায় নাই, সে নারায়ণগঞ্জে আমাদেরকে ছিড়ে ফেললো খাইয়া ফেললো, হুমকি ধমকি হুংকার এগুলো আমরা সহ্য করি না। আমরা এ সমস্ত হুংকারকে প্রশ্রয় দেইনা। আপনারা নির্ভয়ে ভোট দিবেন। গত দুই নির্বাচনে আপনারা যেভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিয়েছেন সেভাবেই ভোট দিতে পারবেন, এর কোন ব্যত্তয় ঘটবে না।
অপরদিকে সন্ধ্যায় যে মতবিনিময় সভা করেন মামুন ভূইয়া সেখানে তিনি এমপি খোকার নাম উচ্চারণ না করে পরোক্ষভাবে কঠোর সমালোচনা করেছেন। বিগত ৭ বছরে তিনি কি উন্নয়ন করেছেন তারও ফিরিস্তি জনগণের সামনে তুলে ধরার আহবান রেখেছেন।
মামুন ভূইয়া রাজনীতিক না হলেও এবার খোকার জন্য তিনি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাছাড়া খোকার প্রতিপক্ষ হিসেবে সেখানে সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল কায়সার রয়েছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালামও বেশ প্রভাবশালী। কায়সার ও কালামের পর মামুন – এ তিনজনকে মোকাবেলা এখন খোকার বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে মামুনকে যে গুরুত্ব দিয়েছেন খোকা সেটাও প্রতীয়মান হয়েছে।
সোনারগাঁয়ে এখনো তফসিল এখনও ঘোষণা না করা হলেও নির্বাচনী মাঠ গরম করে রেখেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে নাগরিক কমিটির প্রার্থী হিসেবে সেখানকার জাতীয় পার্টির এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার স্ত্রী ডালিয়া লিয়াকতের নাম ঘোষণা করেছেন বর্তমান মেয়র সাদেকুর রহমান। তিনি এও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি আগামীতে নির্বাচন করছেন না। এখানে আওয়ামী লীগ এখনো স্পষ্ট কিছু ঘোষণা দেয়নি। তাছাড়া জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের সম্প্রতি সোনারগাঁয়ে আসলেও সেখানেও তিনি স্পষ্ট ঘোষণা দিতে পারেনি।








Discussion about this post