“নির্বাচনের আগে কিছু কিছু পত্রিকা মানুষের চরিত্র হনন করেছে পয়সার বিনিময়ে। অনেক নেতা চেয়ারম্যানদের চরিত্র হনন করেছে। কুত্তা হাড্ডি চায় এমন কিছু হাড্ডি পাড্ডি পায়। আমি এসব দেখিও না পড়িও না। দেশের বড় বড় পত্রিকা অনেক কিছু করেও আমার কিছু পায়নি। এখন গাছের পাতায় পাতায় আওয়ামী লীগ। সব স্থানে আওয়ামী লীগ ও সরকারি দল। সব সেক্টর আওয়ামী লীগ হয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে আমার, চন্দন, খোকন সাহাদের মনে হয় আমরা বোধহয় বিএনপি জামায়াত করি।” এমন মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের রাইফেল ক্লাবে সদর, বন্দর ও সোনারগাঁয়ের নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এমপি শামীম ওসমান বলেন, ‘সদ্য অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনেক সুষ্ঠ হয়েছে। নির্বাচনের আগে আমি দেশের বাইরে ছিলাম। আমি নির্বাচনে কোনো হস্তক্ষেপও করিনি। আমরা তো হাইব্রিড রাজনীতিবিদ না। তাই আমরা মাটির গন্ধ বুঝতে পারি। যখন দেশে আসলাম তখন জানতে পারলাম যে আমার ও বন্দর এলাকায় নির্বাচনী এলাকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। তারা চেয়েছিল কোনো লাশ ফেলে বিশৃঙ্খলা করবে। এটা চেয়েছিল তৃতীয় কোনো পক্ষ। সেটা প্রতিহত করা হয়েছে। আমি খুশি যে, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই নির্বাচন হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ছাত্রলীগ অনেক সভ্য। তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রশ্ন কেউ তুলতে পারেন না। কোনো ভুল বোঝাবুঝি হোক যেভাবেই হোক সেখানে আওয়ামী লীগের সভাপতি কামালের (এনায়েতনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ) সামনে একটি ঘটনা সাজানো হয়। আমি সেখানে গিয়ে র্যাবের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলার পর অফিসাররাও বুঝেছে এটা সাজানো। সেখানে কিছু অনিবন্ধিত পত্রিকার গাড়িও সেখানে দেখেছি । সবকিছু ছিল ফিটফাট। সেখানে ভুল বোঝাবুঝির কারণে ছাত্রলীগ সভাপতির পায়ে ফ্র্যাকচার হয়ে গেছে । যেখানে যা জানানোর প্রয়োজন সেখানে আমরা জানাবো।’
তিনি বলেন, আমি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। আমার ১০ নভেম্বর আমার জন্য শারীরিক সমস্যার জন্য মেডিক্যাল টিম বসেছিল। দেশের সেরা ১১ জন ডাক্তারের মেডিক্যাল টিম আমাকে পিজি হাসপাতালে দেখেছে। অনেক টেস্ট দিয়েছে। কিন্তু রোগ চিহ্নিত করতে পারেনি। আল হামদুলিল্লাহ আল্লাহ মানুষের রোগ দেন পাপ মোছনের জন্য। আমাদের নবীজীরও রোগ দিয়েছিল আল্লাহ।
উল্লেখ্য, ১১ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম মাসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পিটুনীর পর সেখানে এমপি শামীম ওসমানের উপস্থিতিতে নেতাদের কথোপকথন এখন দেশজুড়ে আলোচিত। শুধু নারায়ণগঞ্জ বা বাংলাদেশ না বরং এটা বিশ্বব্যাপী এখন ভাইরাল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রীতিমত ট্রল শুরু হয়।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনায় বিকেল সোয়া ৩টায় কেন্দ্রে যান শামীম ওসমান। তাকে অভিযোগ করে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ বলেন, ‘আমাদের কুত্তার (কুকুর) মতো পিটিয়েছে’। তখন শামীম ওসমান উপস্থিত র্যাব কর্মকর্তাদের অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেন। জবাবে সিদ্ধিরগঞ্জের র্যাব-১১ এর স্কোয়াড্রন লিডার এ কে এম মনিরুল আলম বলেন, ‘ওদেরকে মারি নাই স্যার। ওরা দেখেন এসব জিনিসপত্র নিয়ে (ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা দেখানো হয়) আসছে। ওখানে ককটেল আছে। তারা এখানেই ছিল। আপনি সবাইকে জিজ্ঞাসা করেন।’
জবাবে শামীম ওসমান বলেন, ‘এখন নারায়ণগঞ্জ আপনি সামাল দেন। দেখি আপনি পারেন কিনা আর আমি পারি কিনা। আপনি ছাত্রলীগের জয়েন্ট সেকেটারিকে চোরের মতো মারবেন ?’
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি সর্বদা চেষ্টা করব। ব্যাপারটা ওইরকম নয় স্যার। চোরের মতো পিটানো হয় নাই স্যার। তাদের প্রতিহত করা হয়েছে। এগুলো নিয়ে আসায়।’ এ সময় সাংবাদিকেরা শামীম ওসমানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি কিছু না বলেই চলে যান।









Discussion about this post