এনএনইউ রিপোর্ট :
“শ্রমিকলীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশ একজন পরহেজগার নেতা, পলাশ গরীব ও মেহনতি মানুষের প্রাণের স্পন্দন, পলাশ শ্রমিকদের প্রাণ, পলাশ একজন সহি ঈমানদার ব্যাক্তি” ইত্যাদি ইত্যাদি ভাষায় পলাশ অনুসারী অনেকেই এবং পলাশ নিজেও অনেক সভা সমাবেশে শ্রমিক দরদী হিসেবে নিজেকে গলা ফাটিয়ে দাবী কররেও এখন কি বলবেন এই শ্রমিক নেতা ও তার অনুসারীরা । এখন কি কেউ বলতে পারবে ফতুল্লায় কোন চাদাবাজির ঘটনা ঘটে না ?
সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশের নিয়ন্ত্রিত এমন অসংখ্য চাঁদাবাজদের প্রকাশ্য চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের সংবাদ প্রকাশিত হলেই সাংবাদিকদের নানাভাবে হুমকি দেযার পাশাপাশি, একের পর এক মামলা দেয়ার ঘটনা ঘটায় পলাশ নিজেই। অসাধু পুলিশ, প্রশাসনের লোকজনকে ম্যানেজ করে এবং সরকার দলীয় ব্যানারের বদৌলতে নারায়ণগঞ্জের অনেক সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানীর ঘটনা ঘটানোর পরও থেমে যায় নাই মেহনতি মানুষের উপর পলাশ বাহিনীর নির্মম চাঁদাবাজির ঘটনা । চাঁদাবাজি না করার কারণে এবার হত্যার হুমকিতে ফতুল্লা থানায় সাধারণ ডায়রী করে জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছে হাসান বাবু ও শহিদুল হক প্রমিত নামে দুইজন ।
ফতুল্লা থানায় জিডি করার ঘটনা জানাজানি হলে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় উঠেছে । “সকলেই বলছে এবার কি বলবেন পলাশ ও তার অনুসারীরা ?”
জানা যায়, শুক্রবার রাতে ফতুল্লা মডেল থানায় হাজির হয়ে হাসান বাবু ও শহিদুল হক প্রমিত নামে দুইজন জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পৃথক দুটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় বেটারী চালিত ইজিবাইকের চাঁদাবাজী না করলে দুই ইজিবাইক মালিককে হত্যার হুমকি দিয়েছে শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশের খলিফা হিসেবে ফতুল্লায় ব্যাপক পরিচিত শীর্ষ চাঁদাবাজ আজিজুল হক।
হাসান বাবু জানান, আমার কয়েকটি বেটারি চালিত ইজিবাইক আছে। এজন্য চাঁদাবাজদের ভয়ে ফতুল্লার অক্টো অফিস থেকে পাগলা পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কে আজিজুলের নেতৃত্বে ৮৫০টি বেটারী চালিত ইজিবাইকে দৈনিক চাঁদাবাজী করতাম। প্রতিটি ইজিবাইক থেকে দৈনিক ৩০ টাকা লাইন খরচ আর মাসে প্লেট ভাড়া ৩০০ টাকা করে আদায় করেছি। একই সঙ্গে প্রতিটি প্লেট ইজিবাইক চালকদের কাছে সাড়ে ৬ হাজার টাকা করে বিক্রি করেছি। কয়েক বছর এ লাইনে চাঁদাবাজী করেছি।
তিনি আরো জানান, এ চাঁদাবাজীর একটি টাকাও সরকার পায়না। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের ঘামের এ টাকা কেড়ে নিতে সম্প্রতি আমার বিবেক বাধা দিচ্ছে। এটি অপরাধ তাই আজিজুলকে বলেছি আমি আর খেটে খাওয়া মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজী করবো না। এতে আজিজুল ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বলেছে শান্তি পাইবা না মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও। এছাড়াও আমাকে জীবনে মেরে ফেলবে বলে বিভিন্ন জনের কাছে বলে বেড়াচ্ছে। এবিষয়ে আমার পরিবার ও এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিগনের সঙ্গে আলাপ করে আজিজুলসহ তিন জনের বিরুদ্ধে জিডি করেছি।
শহিদুল হক প্রমিত জানান, আমার প্রায় ২০/২৫টি বেটারি চালিত ইজিবাইক ও প্যাডেল চালিত রিকশা আছে। এজন্য চাঁদাবাজদের ভয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সামনে থেকে ফতুল্লার তল্লা রেললাইন পর্যন্ত সড়কে আজিজুলের নেতৃত্বে প্যাডেল ও বেটারী চালিত ৫০০ অটো রিকশায় চাঁদাবাজী করতাম। প্রতি রিকশায় দুই হাজার টাকা করে প্লেট বিক্রি করেছি। আর সেই প্লেটের ভাড়া হিসেবে ১২০টাকা করে মাসে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছি। চাঁদার পুরো টাকা আজিজুল আমার কাছ থেকে বুজে নিয়েছে। কয়েক বছর এ চাঁদাবাজী করেছি। এখন বিবেক বাধা দিচ্ছে ঘাম ঝড়ানো উপার্যনের টাকা গরীবদের কাছ থেকে আর কেড়ে নিবোনা। তাই আজিজুলকে বলেছি আমি আর চাঁদাবাজী করবো না। এতে আজিজুল ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে বলেছে শান্তি পাইবা না মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও। এছাড়াও আমাকে জীবনে মেরে ফেলবে বলে বিভিন্ন জনের কাছে বলে বেড়াচ্ছে। এবিষয়ে আমার পরিবার ও এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিগনের সঙ্গে আলোচনা করে আজিজুল ও তার আরো দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে জিডি করেছি।
ঘটনার বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের বলেন, আজিজুলকে এর আগে পঞ্চবটি মোড়ে চাঁদাবাজীর সময় পুলিশ ধাওয়া করে ধরতে পারেনি। তখন তার ৪ সহযোগীকে চাঁদাবাজীর টাকাসহ আটক করা হয়। আটককৃতদের তথ্য মতে আজিজুলসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেছে পুলিশ। এ মামলায় চার্জশীটও আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এরপর পুলিশ সকল ইজিবাইক মালিক ও চালকদের বলে দিয়েছে কাউকে চাঁদা না দিতে। দুই ইজিবাইক মালিকের জিডি তদন্ত চলছে। আজিজুল এখন পঞ্চবটি থাকেনা। তার সন্ধান বের করে গ্রেফতার করা হবে।









Discussion about this post