নারায়ণগঞ্জ শহরের চারটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে তিনটিকে সিলগালা (বন্ধ) এবং মোট ২ লাখ ৮০ টাকা জরিমানা করেছে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত।
এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করার পাশাপাশি মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে শহরের নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের খানপুর ও ডন চেম্বার এলাকায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মানজুরা মুশাররফ ও নুশরাত আরা খানমের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন।
অভিযানে খানপুর এলাকার আশ্শিফা ডায়াগনস্টিক এন্ড জেনারেল হসপিটাল, নিউ স¤্রাট জেনারেল হাসপাতাল ও ডন চেম্বারের সোহেল জেনারেল হাসপাতালের অনুমোদন না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয় প্রশাসন।
পাশাপাশি ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সোহেল জেনারেল হাসপাতালের অনুমোদন, ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন ওষুধ মজুদ রাখার অপরাধে ১ লাখ ৫৫ হাজার, অনুমোদনহীন নিউ স¤্রাট জেনারেল হাসপাতালকে ১ লাখ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট মজুদ রাখার অপরাধে ইউনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে অনুমোদনহীন আশ্শিফা ডায়াগনস্টিক এন্ড জেনারেল হসপিটালের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুশরাত আরা খানম।
অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুশরাত আরা খানম ও মানজুরা মুশাররফ জানান, হাসপাতাল পরিচালনার জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য সিটি কর্পোরেশনের কোনো ধরনের লাইসেন্স ছাড়াই এইসব প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিল। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তথ্যের সত্যতা পেয়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে মোট ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে।
একটি প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষকে না পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হবে। পাশাপাশি তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। সিলগালা করে দেওয়া অনুমোদনহীন ক্লিনিকগুলোতে নিয়মিত কোনো চিকিৎসক বা সার্জন না থাকলেও সার্জারির মতো জটিল প্রক্রিয়াসহ সবধরনের চিকিৎসা এই হাসপাতালগুলোতে দেওয়া হতো।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় লাইসেন্সবিহীন ১৮টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও প্যাথলজি পরিচালিত হচ্ছে। এমন তালিকা তাদের কাছে রয়েছে। এই তালিকা ধরে আগামীতেও এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে অভিযানের খবর পেয়ে আশেপাশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ও ফার্মেসি বন্ধ করে দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যান। খানপুর এলাকায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের আশেপাশে শতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ফার্মেসি গড়ে উঠেছে।
এদের অধিকাংশেরই অনুমোদন নেই। বিভিন্ন সময় ভুল চিকিৎসার অভিযোগ ওঠে এইসব হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কাম ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।
তবে অনুমোদনহীন সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। তালিকা ধরে পর্যায়ক্রমে অভিযান পরিচালনা করা হবে।









Discussion about this post