দীর্ঘদিন যাবৎ এমন জাল ওকালতনামা, হাজিরা ও জামিননামা জালিয়াতি করার অভিযোগে ৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার ফতুল্লা থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাইসুল আহমেদ রবিন ।
কাটায় কাটায় ঠিক এক সপ্তাহের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ২ কোটি টাকার জাল রেভিনিউ স্ট্যাম্পসহ সিআইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছে রাজু আহমেদ অমিত নামের এক অপরাধী ।
এমন পৃথক দুই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হয়েছে নারায়ণগঞ্জে এই অপরাধী চক্রের দৌড়াত্ম চলছে দীর্ঘদিন যাবৎ ।
দীর্ঘদিন ধরে জাল স্ট্যাম্প, রেভিনিউ, সিটি কর্পোরেশন ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন সরকারি চিঠি তৈরি করে দিতেন মো. রাজু আহমেদ অমিত।
তার এই প্রতারণার কাজে আরো বেশ কয়েকজন জড়িত।.
২ কোটি ১১ লাখ টাকার জাল ট্যাম্পসহ সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার রাজু আহমেদ অমিতকে (১৯) তিন দিনের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে সিআইডি।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আসামী অমিনকে আদালতে পাঠায় সিআইডি ।
পরে শুনানি শেষে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ন কবির।
আসামী মো. রাজু আহমেদ অমিত বগুড়া জেলার তালতলী থানার কবিরাজপাড়া এলাকার ফারুক আকনের ছেলে। সে যাত্রাবাড়ীর রায়েরবাগ এলাকায় থেকে কেয়ার প্রিন্ট্রিংয়ে কাজ করতেন।
এ বিষয়ে কোর্ট পুলিশ (এএসআই) রাজীব বলেন, ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে পুশিল আসামীকে আদালতে উঠান। পরে শুনানি শেষে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৃহস্পতিবার ১৫ অক্টোবর দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতারের সময় রাজুর কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকার জাল কোর্ট ফি স্ট্যাম্প, জার্মানিতে প্রস্তুত একটি অত্যাধুনিক মেশিন ও কম্পিউটার যাতে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, রেভিনিউ স্ট্যাম্প, কোর্ট ফি ও ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করা হতো, ১৭টি টিনের ডিভাইসসহ অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
সিআইডর অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রেজাউল হায়দার জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের মধ্য কান্দাপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ রোডের একটি প্রিন্টিং প্রেসের আড়ালে জালিয়াত চক্রের সদস্যরা তাদের অপকর্ম চালিয়ে আসছে। চক্রটি বাংলাদেশ সরকারের সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেসে মুদ্রণযোগ্য বিভিন্ন ধরনের জাল রাজস্ব স্ট্যাম্পসহ সরকারি নথি প্রতারণামূলকভাবে বিপণন করে আসছে। এই জালিয়াতি চক্রের কারণে দেশের রাজস্ব আয় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা রাজুর কাছ থেকে ১ কোটি ৮১ লাখ টাকার স্টাম্প জব্দ করলেও সারা দেশে এই চক্রের আনুমানিক ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার জাল স্টাম্প রয়েছে। জালিয়াতির সঙ্গে আরও চারজন পলাতক, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রতারণা এড়াতে সবাইকে রেজিস্টার্ড ভেন্ডরের কাছ থেকে স্টাম্প সংগ্রহ করার আহ্বান জানান সিআইডি কর্মকর্তা রেজাউল হায়দার।









Discussion about this post