ক্যান্টিনে কর্মরত মো. জাবেদ হোসেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন। একই স্কুল থেকে জাবেদ জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং সাধারণ গ্রেডে মেধাবৃত্তি পেয়েছিল। জাবেদ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের টেকদাশের দিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা রমজান আলী কৃষি কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন মাটির জিনিসপত্রও বিক্রি করেন। মা জান্নাতুল ফেরদৌস গৃহিণী। চরম অর্থনৈতিক সংকটেও জাবেদকে পড়াশোনা করিয়েছেন তার মা-বাবা।
এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিনে কর্মরত মো. জাবেদ হোসেন নামের এক কর্মচারী।
তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন।
একই স্কুল থেকে জাবেদ জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এবং সাধারণ গ্রেডে মেধাবৃত্তি পেয়েছিল।
জাবেদ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের টেকদাশের দিয়া গ্রামের বাসিন্দা। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় জাবেদ। ছোট বোন একটি স্কুলে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। জাবেদের বাবা রমজান আলী কৃষি কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন মাটির জিনিসপত্রও বিক্রি করেন। মা জান্নাতুল ফেরদৌস গৃহিণী।
চরম অর্থনৈতিক সংকটেও জাবেদকে পড়াশোনা করিয়েছেন তার মা-বাবা।
জাবেদের মামা মো.সোহেল বিজয় একাত্তর হলের ক্যান্টিনে বাবুর্চি হিসেবে কর্মরত। এই বছরের আগস্টে মামার কাছে বেড়াতে আসেন জাবেদ হোসেন। কিছুদিন থাকার পর মামার পরামর্শে ক্যান্টিনের কাজে যোগ দেন জাবেদ।
পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ছুটি নিয়ে জাবেদ অক্টোবরে বাড়িতে যায়। নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা শেষে ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ফের কাজে যোগ দেন এই পরীক্ষার্থী।
এরপর থেকে ক্যান্টিনের কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন বিকেলে নীলক্ষেতের একটি দোকানে কম্পিউটারও শিখছেন জাবেদ হোসেন। রাতে এসে যোগ দেন কাজে।
পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে জাবেদ হোসেন বলেন, ‘দুপুরের দিকে আমি ক্যান্টিনে তরকারি আনা-নেয়ার কাজ করছি। সামান্য টেনশন কাজ করছিল। দুপুর দেড়টার দিকে আব্বু ফোন দিয়ে আমার পরীক্ষার রোল আর রেজিষ্ট্রেশন নম্বর আমার চাচাতো বোনের মোবাইলে পাঠাতে বলেন। তখনও আমি কাজ করছি।’
‘একটু পর আমার চাচাতো বোন ফোন দিয়ে বলে, আমি ফেল করেছি। আমি পাভজি খেলতাম সেজন্যই রসায়ন পরীক্ষায় ফেল আসছে বলেন তিনি। সেটা শুনে আমার কান্না চলে আসে। এরপরই চিৎকার করে বলে, আমি জিপিএ ফাইভ পেয়েছি। তখন এতোই খুশি হয়েছি, বলে বুঝানো সম্ভব না। কাজের সব কষ্ট মুহূর্তেই ভুলে যাই। দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ শুরু করি,’ যোগ করেন জাবেদ
‘আমার রেজাল্টের খবর ক্যান্টিনে খেতে বসা বড় ভাইয়েরা শুনে ফেলেন। তারা আমাকে মিষ্টি খাওয়ান। অনেকে বিভিন্ন উপহারও দিয়েছেন।’
এখন কী পরিকল্পনা জানতে চাইলে জাবেদ হোসেন বলেন, ‘ঢাকার কোন একটা কলেজে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছে আছে। ক্যান্টিনের কাজটাও চালিয়ে যাবো। বড় হয়ে ভালো কোন পেশায় কাজ করতে চাই।’









Discussion about this post