নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
সদর উপজেলার ফতুল্লার বিভিন্ন সড়কে আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তাদের শেল্টারে দীর্ঘদিন যাবৎ অটো ও ব্যাটারী চালিত রিক্সার চাঁদাবাজদের মূল হোতা আজিজুলকে আটকের পর ব্যাপকভাবে তদ্বির চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে এবার ভিন্ন পথে ফতুল্লার বিশৃংখল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে মাঠে নেমেছে বিতর্কিত শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশের পোষ্য বাহিনীর অপর চাঁদাবাজরা ।
এমন অভিযোগ কয়েকজন অটো ও ব্যাটারী চালিত রিক্সার গ্যারেজ মালিকদের ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে কয়েকজন রিক্সা ও অটোর মহাজনরা জানায়, মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর রাত ৮ টা পর থেকে ফতুল্লা থানা এলাকর পাগলা, কাশিপুর, বাংলাবাজার, মুসলিমসগর, ধর্মগঞ্জ, তল্লা, হাজীগঞ্জ, সাইনবোর্ড, দেলপাড়া, তক্কারমাঠ-নন্দলালপুরের গ্যারেজে হানা দিয়ে ফতুল্লা মাঠে জড়ো হতে কঠোর নির্দেশ দেয় পলাশ অনুসারীরা ।
“থানার তালা ভাঙ্গবো, আজিজুলকে আনবো“- এমন শ্লোগান দিয়ে ফতুল্লা মাঠে জড়ো হয়ে ব্যারিকেট দেয়ার জন্য অটো ও রিক্সার মালিক ড্রাইভারদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেয় পলাশ বাহিনী । যাদেরকে বিভিন্ন সড়েকে দাড়িয়ে আবার গ্যারেজে গ্যারেজে চাঁদা আদায় করতেও দেখা যায় ।
জানা যায় , ৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকা থেকে আজিজুলকে আটক করে পুলিশ । বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শত (অপারেশন) সাখাওয়াত হোসেন।
এ আজিজুলের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কের মোড়ে মোড়ে প্রকাশ্যে ইজিবাইক থেকে চাঁদা আদায় করছে আজিজুল বাহিনী ও তার দোসররা। চাঁদা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলেই ইজিবাইক চালকদের চাঁদাবাজদের অফিসে ধরে নিয়ে নিমর্ম নির্যাতন চালাচ্ছে চাঁদাবাজরা।
২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় কামাল নামের ইজিবাইক চালককে অফিসে ধরে নিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে গেলে থানার এক দালালের কারণে থানা পর্যান্ত পৌছাতে পারেনি চাঁদাবাজদের পিটুনিতে আহত কামাল (৩৬)।
এর আগে ইজিবাইকে চাঁদাবাজী না করলে হত্যা হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে আজিজুলও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় হাসান বাবুও শহিদুল হক প্রমিত নামে দুই ইজিবাইক মালিক আজিজুল হকসহ তার দুই সহযোগী মামুন ও আনোয়ারের বিরুদ্ধে সম্প্রত ফতুল্লা মডেল থানায় জিডি করেছিল।
চাঁদা নেয়ার পর চালকদের টোকেন দেয়া হচ্ছে। তাই এলাকায় এখান চাঁদাবাজদের এ টোকেন বিক্রির হিড়িক পড়েছে।
ইজিবাইক চালক ও মালিকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, আজিজুল সব সময় প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গেই ঘুরে বেড়ায়। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত শতাধিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়া দ্রুত বিচার আইনে চাঁদাবাজির মামলা হওয়ার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ আজিজুলকে ছুতেও পারেনি। তার টোকেন গাড়িতে ব্যবহার করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ সে ইজিবাইক আটক করেনা । তাই তার বিক্রি করা টোকেনকে ইজিবাইক চালক ও মালিকরা গুরুত্ব দিয়ে কিনেন।
ইজিবাইক চালক মোতালেব মিয়া জানান, প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর ধরেই আজিজুল ইজিবাইকে চাঁদাবাজী করে আসছেন। প্রতিটি এলাকায় তার লোকজনকে দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে গ্যারেজে গিয়ে মালিক-মাহজনদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করার। সে অনুয়ায়ী চাঁদা আদায় হয়। কয়েক বছর আগে ইজিবাইকের জন্য টোকেন বিক্রি হতো ৬ হাজার টাকায়। এখন সেই টোকেনের মূল্য বাড়িয়ে ২২ হাজার টাকা করা হয়েছে আর আগের টোকেন বাতিল ঘোষনা করেছে। এরমধ্যে আগে দৈনিক প্রতিটি ইজিবাইক চালকদের কাছ থেকে লাইন খরচ অর্থাৎ যানজট নিরসন কর্মীদের নামে প্রকাশ্যে ৩০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হতো।
ফতুল্লার পাগলা, কাশিপুর, বাংলাবাজার, মুসলিমসগর, ধর্মগঞ্জ, তল্লা, হাজীগঞ্জ, সাইনবোর্ড, দেলপাড়া, তক্কারমাঠ-নন্দলালপুর এলাকায় অন্তত ৫ হাজার ইজিবাইক রয়েছে।
এসবের মধ্যে ফতুল্লার পাগলা, শিবু মার্কেট ও তক্কারমাঠ এলাকায় চলাচল করা অন্তত ২ হাজার ইজিবাইক থেকে আজিজুল চাঁদাবাজী করে।
এমন অসংখ্য অভিযোগে চিহ্নিত চাঁদাবাজ আজিজুলকে গ্রেফতারের পর নানাভাবে তদ্বির চালায় বিভিন্ন চক্র । জোড়ালো তদ্বিরের পর চাঁদাবাজ আজিজুলকে ছাড়াতে না পেরে বুধবার সকাল ১০ টায় ফতুল্লার ডিআইটি মাঠে অটো চালক / মালিকদের উপস্থিত হয়ে আজিজুলকে ছাড়াতে আন্দোলনে নামার জোড়ালো নির্দেশ দেয় পলাশ বাহিনীর লোকজন । এমন নির্দেশে আতংকে রয়েছে অটো চালক ও মালিকরা । এমন ঘটনায় প্রশাসন ও র্যাবের সহায়তা কামনা করেছে অসহায় অটো চালক ও মালিকদের অনেকেই ।









Discussion about this post