নারায়ণগঞ্জের তারাবো পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১৬ জানুয়ারী । এমন নির্বাচন কে সামনে রেখে শুরু হয়েছে নাবা আলোচনা সমালোচনা ।
আর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নাসির উদ্দিন ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমানের হাবিবের মনোনায়ন মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
তবে এই বাতিলের পিছনে নাসির উদ্দিন ও হাবিবুর রহমান হাবিবের নাটক হিসেবে উল্লেখ করেছেন তারাবো পৌরসভাবাসী । এছাড়াও হাবিবুর রহমান হাবির রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে পুরে রূপগঞ্জে নানা আলোচনা সমালোচনা রয়েছে ।
তারাবো পৌরসভার নির্বাচন কে ঘিরে সৃষ্ট হওয়া নানা সমালোচনার পর দুই প্রার্থীর প্রস্তাবকারী দিলবর হোসেন দিয়েছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য ।
তারা দুইজন ইচ্ছা করেই সমঝোতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হাসিনা গাজীকে সুযোগ করে দিয়েছেন বলে স্থানীয় পর্যায়ে আলাপ আলোচনা সরগরম রয়েছে।
সূত্র বলছে, আগামী ১৬ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য তারাবো পৌরসভা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাছাই বাছাই করে বৈধ ঘোষণার তারিখ ছিল গত ২২ ডিসেম্বর।
আর এই দিনে জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং অফিসার মতিয়ুর রহমান জানান, তারাব পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছিলেন ৭ জন। এর মধ্যে চার জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এরা হলেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নাসির উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব, আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী হাসিনা গাজী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত আবু সাঈদ।
তাদের যাচাই-বাচাই শেষে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নাসির উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুবর রহমান হাবিবের প্রস্তাবকারী একই ব্যক্তি হওয়ায় তাদের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়।
এছাড়া সকল কাগজপত্র সঠিক থাকার কারনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী হাসিনা গাজী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত আবু সাঈদের প্রার্থীতা বৈধতা দেয়া হয়।
মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার কারণ হিসেবে রিটার্নিং অফিসার মতিয়ুর রহমান জানান, কোন ভোটার প্রস্তাবকারী হিসেবে অথবা সমর্থনকারী হিসেবে মেয়র অথবা সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর বা সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের উদ্দেশ্যে সংশ্লিষ্ট পদে একটির অধিক মনোনয়নপত্রে তার নাম ব্যবহার করলে ওই মনোনয়নপত্রটি বাতিল বলে গন্য হবে। সেই হিসেবে নাসির উদ্দিন ও হাবিবুর রহমান হাবিবের প্রস্তাবকারী হিসেবে রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের তেতলাবো এলাকার নকিবুল মিয়ার পুত্র দিলবার হোসেন একই ব্যক্তি হওয়ায় তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে ।
কিন্তু বাতিল হওয়া এই দুইজনের মনোনয়নের প্রস্তাবকারী একই ব্যক্তি হওয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নাসিরউদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুবর রহমান হাবিব ইচ্ছা করেই একই ব্যক্তিকে দুইজনের প্রস্তাবকারী রেখেছেন । সাধারণত প্রস্তাবকারীর নাম গোপন থাকে। কিন্তু নাসির উদ্দিনের প্রস্তাবকারী ব্যক্তির নাম প্রকাশ হলো কিভাবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
এছাড়াও নাসির উদ্দিন তার ঘনিষ্ট কাউকে প্রস্তাবকারী বানাতে পারতেন। কিন্তু হাবিবুর রহমানের হাবিবের প্রস্তাবকারী ব্যক্তিকে কেন নাসিরের প্রস্তাবকারী বানাতে হবে।
এদিকে স্থানীয় পর্যায়ে সকলেরই জানা, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব নিজেই আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হাসিনা গাজীর মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। সেই সাথে তিনি তারাবো ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি পদে দায়িত্বও পালন করেছিলেন। তাকে প্রায় সবসময় নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর সাথে দেখা যায়। পাশাপাশি হাসিনা গাজীর মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার দিনেও উপস্থিত ছিলেন হাবিব। এ ছাড়াও অন্যান্য নির্বাচনেও হাবিবুর রহমান হাবি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন গ্রহণ / জমা দিলেও নির্বাচনের মাঠে আর দেখা যায় না ।
আর সেই হাবিবুর রহমান হাবিবের প্রস্তাবকারী ব্যক্তিকেই বিএনপির প্রার্থী নাসির উদ্দিনের পক্ষে প্রস্তাবকারী করা হয়েছে। সেই সাথে ওইদিন নাসির উদ্দিন নমিনেশনও আনতে যায় নাই। আর এসকল বিষয়কে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ের বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করছেন নাসির উদ্দিন ইচ্ছা করেই আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হাসিনা গাজীকে সুযোগ করে দিয়েছেন। আর এই সুযোগ করে দিতে গিয়ে নাসির উদ্দিন আর হাবিবুর রহমান হাবিব মনোনয়নপত্র নিয়ে নাটক সাজিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নাসির উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এমন নাটক মঞ্চায়নের বিষয়ে বিএনপি প্রার্থী নাসির উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবির প্রস্তাবকারী দিলবার হোসেনের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করলে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে তিনি বলেন, “আমি শুধু নাসির উদ্দিনের প্রস্তাবকারী হিসেবে স্বাক্ষর করেছি অন্য কোন প্রার্থীর জন্য স্বাক্ষর করি নাই ।” তাহলে আপনি এলাকা ছেড়ে আছেন কেন ? এমন ঘটনায় মামলায় করছেন না কেন ? হাবিবুর রহমান হাবির প্রস্তাবকারী হিসেবে আপনার স্বাক্ষর হলো কি করে ? এমন প্রশ্নে দিলবার হোসেন, “আমি আবারো বলছি শুধু নাসির উদ্দিনের প্রস্তাবকারী হিসেবে স্বাক্ষর করেছি, আর কারো জন্য আমি স্বাক্ষর করি নাই। এর বাইরে আমি আর কোন উত্তর দিতে পারছি না।”
আপনি কি কোন কারণে ভীত – আতংকিত ? প্রতিউত্তরে দিলবর হোসেন আরো জানায়,” দয়া করে আমাকে আর কোন প্রশ্ন কইরেন না । আমি উত্তর দিতে পারবো না ।”
Discussion about this post