‘জাহাঙ্গীর সাহেবও (জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক) আমার বড় ভাইয়ের (শামীম ওসমান) ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। তোলারাম কলেজে পড়ার সময় মারধরের শিকারও হয়েছিলেন। অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে উনি নারায়ণগঞ্জে এখনও টিকে আছেন। অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। ষড়যন্ত্র কিন্তু আজকের নয়। ১৯৯১ সালে দল করেও সাতজনকে জেল খাটতে হয়েছিল। জাহাঙ্গীর সাহেব, রহমতউল্লাহ ভাই, আরাফাত, কামাল মৃধাসহ সাতজনকে জেল খাটতে হয়েছিল। চাষাঢ়ায় বড় ভাইয়েরা দোকান ভেঙ্গে সেই দোকান ভাঙচুরের মামলা দিয়েছে আমাদের দলেরই সাতজনের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রার্থনা করে তাদের জেল থেকে বের হতে হয়েছে। দলের লোকজনকে, আওয়ামী লীগের লোকজনকে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করেছে।’
নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের সংস সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে কঠোর সমালোচনা করে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী উল্লেখিত মন্তব্য করেছে তার বক্তব্যে ।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ফতুল্লার আলীগঞ্জ মাঠে উইনার কাপ টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র বলেন, ‘এই আলীগঞ্জ মাঠ যতদিন থাকবে ততদিন পলাশের কথা মনে রাখবেন সবাই। এই মাঠে খেলা হচ্ছে, কথা বলছি সবকিছুর অবদান পলাশের নেতৃত্বে আলীগঞ্জবাসীর। আমরা যারা এই মাঠের পক্ষে কথা বলতে এসেছিলাম তাদেরও নিয়ে এসেছিল আপনাদের নেতা পলাশ। এই পলাশ না থাকলে এই মাঠ থাকতো না। সত্যিকার অর্থেই সেই ভূমিদস্যুদের কাছে এই মাঠ চলে যেতো।’
আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাড. আনিসুর রহমান দিপু প্রসঙ্গে আইভী বলেন, ‘আদালতপাড়াতে সব দলের মানুষই তাকে সমানভাবে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করে, সম্মান করে। কারণ তিনি তার নিজস্ব একটা ব্যক্তিত্ব গড়ে নিয়েই রাজনীতি করছেন। উনি আমার সাথে এই মঞ্চে বসে আছেন কিন্তু উনি আমার বড় ভাইয়েরই বন্ধু। উনি যে সত্য কথা বলেন এবং বলছেন সেজন্য ওনাকে অভিনন্দন। আমাদের সত্য কথা বলতেই হবে। সত্য ছাড়া কোনো উপায় নাই। মহান আল্লাহ মিথ্যা ও অন্যায়কে কখনও প্রশ্রয় দেয় না। দেরিতে হলেও দিপু ভাই আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এজন্য তাকে অভিনন্দন। আশা করি ভবিষ্যতেও উনি ন্যায়, সত্যের পথেই থাকবেন। আমরাও তার জন্য নিবেদিত প্রাণ থাকবো ইনশাল্লাহ।’
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুম ভাইকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘মাসুম ভাই ত্বকীর হত্যার ঘটনায় একজন প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। উনি নিজের ছেলের মতো ত্বকী হত্যার প্রতিবাদ করে গেছেন। তিনি সাহস করে কথা বলছেন।’
সিটি মেয়র বলেন, ‘আমি অনেক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি। কোনো ষড়যন্ত্র আমাকে রুখতে পারে নাই, ভবিষ্যতেও পারবে না। ফতুল্লা নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নৌকা তুলে দেয়া হয়েছে এমন একজনকে যে জীবনেও নৌকা বলে নাই। তারা নারায়ণগঞ্জে নেতা তৈরিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। কাউসার আহমেদ পলাশকে কীভাবে সরানো যায়, সে যেন এমপি টিকেট না চাইতে পারে। এ জন্য বিভিন্ন ছক আকা হচ্ছে।’
মেয়র আইভী বলেন, ‘ফতুল্লা, কুতুবপুর নিয়া আমি বলেছিলাম, প্রস্তাব করেন। নতুন করে পৌরসভা গঠন করেন। ফতুল্লা সদরের নির্বাচন হতে দিচ্ছে না। ওইখানে আজাদ বিশ্বাসকে বসিয়ে রেখেছে। হাতের পুতুল, যা বলবে তাই। আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকে বিকশিত হতে দিবে না, সেখানে দাঁড়াতে দিবে না। কারণ তাদের কমান্ড কেউ মানবে না।’
আলীগঞ্জ ক্লাবের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহমেদ পলাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুম, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাড. আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বল প্রমুখ।









Discussion about this post