অপেক্ষার প্রহর শেষ করে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে পূর্বাচলের স্থায়ী ভেন্যু ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলার ২৬তম আসর।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐদিন মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। সে জন্য সকল ধরনের প্রস্ততি সম্পন্ন করেছেন রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো। তবে হাত কম সময় পাবার কারনে এখনো সব প্রস্ততি শেষ করতে পারেননি মেলায় স্টল বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ী। এজন্য মেলার উদ্ধোধনের তারিখ পেছানোর দাবি জানিয়েছেন অনেক ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের আন্তজার্তিক প্রচার ও প্রসার এবং বিদেশি আমদানি-রপ্তানিকারকদের সাথে বাংলাদেশি আমদানি-রপ্তানিকারকদের মেলবন্ধন ঢাকা আন্তর্জাতিক বানিজ্য মেলা ২৫ বছর রাজধানীর শের এ বাংলা নগরে খোলা আকাশের নীচে আয়োজন করা হলেও রাজধানীর যানজট কমানো এবং ক্রেতা-দর্শনার্থী ও বিক্রেতাদের সুযোগ সুবিধা বাড়াতে পূর্বাচলের এই স্থায়ী ভেন্যু ২৬.১০ একর জমির উপড় নির্মান করা হয়েছে। এক্সিবিশন সেন্টারের মোট ফ্লোর স্পেস ৩৩ হাজার বর্গমিটার। এর মধ্য এক্সিবিশন হলের মোট আয়তন ১৫ হাজার ৪১৮ বর্গমিটার।
ভবনটিতে পার্কিংয়ের জন্য দোতলার স্পেস ৭ হাজার ৯১২ বর্গমিটার, যেখানে একসঙ্গে প্রায় ৫০০টি গাড়ি এবং ভবনটির সামনের জায়গাটিতে আরো প্রায় ১০০০ গাড়ি পার্কিং করার সুযোগ থাকবে।
এবার প্রথম মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য থাকছে ৩০টি বিআরটিসি বাস। কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ থেকে মাসব্যাপী সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত যাতায়াত করবে বাসগুলো। এসব বাসে ন্যূনতম ২৫ টাকা ভাড়ায় দর্শনার্থীরা যাতায়াত করতে পারবেন।
এছাড়া এই প্রদশর্ণী কেন্দ্রে রয়েছে ৪৭৩ আসনের মাল্টি ফাংশনাল হল ও ৫০ আসনের কনফারেন্স রুম। ৫০০ আসনের ফুড কোর্ট, এবাদতশালা, অফিস, মেডিকেল বুথ, গেস্ট রুম, নিজস্ব ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, সেন্ট্রাল এসি, আধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, ওয়াইফাই কানেকশন, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাসহ ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ কন্ট্রোল রুম। নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তায় আছে অটোমেটিক এন্ট্রি ও এক্সিট গেট। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই কেন্দ্রে আরো থাকছে সার্ভিস রুম, প্রেস কক্ষ আর বাচ্চাদের খেলার জায়গা। মেলায় প্রবেশে করা হবে ডিজিটাল এন্ট্রি কার্ড।
এবছর মেলায় দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠানসহ ভারত, তুরস্ক, থাইল্যান্ড, চীনসহ ৮ দেশের ২২৫টি প্রতিষ্ঠানকে স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্যাভলিয়ন সাজাতে মেলায় চলছে ব্যবসায়ীদের কর্মব্যস্ততা। তবে নুন্যতম একমাস আগে থেকে কাজ শুরু করার কথা থাকলেও নিরাপত্তা বলয় তৈরী করতে সময় ক্ষেপণ হবার কারনে ব্যবসায়ীরা হাতে সময় পেয়েছেন কম। তাই তাদের প্রস্ততি সম্পন্ন হয়নি। এ কারনে মেলার উদ্ধোধনের সময় পেছানোর দাবি করেছেন অনেক প্রতিষ্ঠান। সমুদ্রের মতো ঢেউ খেলানো এই দৃষ্টিনন্দন এক্সিবিশন সেন্টারটি বাংলাদেশ এবং চীনের যৌথ অর্থায়নে ২০১৭ সালে চীনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন’ নির্মাণ করে। যার অবকাঠামোগত সব কাজ গত বছরের ৩০ নভেম্বর সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর কাছে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন। অত্যন্ত সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর হিসাবে মেলা দেখতে দর্শনার্থীদের আগ্রহ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। উদ্ধোধনের আগেই বিভিন্ন এলাকা থেকে এখানে ভীড় করছেন মানুষ।
এ ব্যাপারে রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর সচিব ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, দেশ বিদেশে উৎপাদিত পণ্যর প্রদর্শন, আন্তজার্তিক বাজার যাচাই আর ক্রেতা বিক্রেতার সংযোগ ঘটনোর সবচেয়ে বড় আয়োজন হচ্ছে ঢাকা আন্তজার্তিক বানিজ্য মেলা। এতো বড় আসর শের এ বাংলা নগরের ছোট জায়গায় আমরা সঠিকভাবে আয়োজন করতে পারছিলান না। এ কারনে স্থায়ী এ প্রদর্শনী কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। খোলামেলা জায়গায় রাজধানী থেকেও বেশী সাড়া ফেলবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।









Discussion about this post