নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর বাইরে প্রায়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান দেখা গেলেও সদর উপজেলার কাশিপুর, পঞ্চবটী, ঝালকুড়ির অবৈধ কারখানা পরিচালিত হচ্ছে বিরামহীনভাবে । সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গোপনে পলিথিন তৈরীর কারখানা পরিচালিত হলেও প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তারা নিয়মিত মোটা অংকের মাসোহারা গ্রহণ করায় এমন অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় নাই ।
ফলে সচেতন মহলের অনেকের অভিমত : তবে কি টাকা দিলেই সব হয় !
র্যাবের পৃথক অভিযানে ২ কারখানা সিলগালা করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই কারখানা দুটিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও রূপগঞ্জে নিষিদ্ধ পলিথিন ও ভেজাল তেল উৎপাদনের দায়ে দু’টি কারখানা সিলগালা ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র্যাব-১১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ৩১ আগস্ট বিকেলে র্যাব-১১ এর পৃথক আভিযানে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানাধীন মঙ্গলেরগাঁও এলাকায় ‘সাফায়েত এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি কারখানায় নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদনের দায়ে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ৬ (ক) ধারা অনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ ওই কারখানা সিলগালা করে দেয় এবং ৯১৪ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন ও ১৫০ কেজি পিপি দানা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, সাফায়েত এন্টারপ্রাইজ সরকারি আইন লঙ্ঘন করে দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মঙ্গলেরগাঁও এলাকায় একটি কারখানা ভাড়া নিয়ে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করে আসছিল। এসব নিষিদ্ধ পলিথিন এবং তা তৈরির কাঁচামাল জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
অপর এক অভিযানে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানাধীন তারাব পৌরসভা এলাকায় ‘আরাফ এডিবল ফুড প্রোডাক্টস’ নামে একটি কারখানায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে খোলা ভোজ্য তেল সংগ্রহ করে বিএসটিআই এর অনুমোদন ব্যতীত বিএসটিআই লোগো ব্যবহার করে বোতলজাত ও বিক্রির অপরাধের কারখানা মালিক মো. এবাদত হোসেন খানকে (৩৫) হাতেনাতে আটক করা হয়।
র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আক্তারুজ্জামান খাদ্য নিরাপদ আইন ২০১৩ এর ৩৯ ধারা অনুযায়ী তাকে এক লাখ টাকা জরিমান করেন।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, আরাফ এডিবল ফুড প্রোডাক্টস নামে কারখানাটি সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার অনুমোদন ব্যতীত খোলা ভোজ্য তেল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বোতলজাত করে আসছিল। ওই প্রতিষ্ঠানের বোতলজাত ভোজ্য তেল নিম্নমানের, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ। অনুমোদনহীন এ ভোজ্য তেল নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাজারজাত করতেন তারা ।
নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সচেতন মহলের অনেকের ক্ষোভ থেকে জানা যায়, শহরের চেম্বার রোড এলাকাত জনতা পেপার হাউজ কর্তৃপক্ষ অত্যান্ত গোপনে গত কয়েক বছর যাবত শহরতলীর ফতুল্লা থানার কাশিপুর এলাকায় ইব্রাহিম ব্রিজ সংলগ্ন প্রাচীরঘেরা বিশাল কারখানা চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধভাবে । সম্প্রতি বাবুরাইল খালের নির্মাণ কাজ শুরু হলে খালের উপর নির্মিত প্রাচীর ভেংগে গেলে এলাকাবাসী দেখতে পায় ভয়ানক প্রতারণা । ঠিক একই কায়দায় পঞ্চবটী, ঝালকুড়ি, শহরের নয়ামাটি ও দিগুবাবুর বাজারসহ আশেপাশে কোটি টাকার অবৈধ পলিথিন ও দানা গুদামজাত করে চালিয়ে যাচ্ছে নগ্ন ব্যবসা । যাদের কাছ থেকে পরিবেশ অধিদপ্তর, থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, সিআইডিসহ বিভিন্ন সংস্থার ক্যাশিয়ারদের নিয়মিত মাসোহারা দিয়ে অভিরাম চালিয়ে যাচ্ছে অনৈতিককান্ড। আর এমন অনৈতিক লেনদেনের কারণে অনৈতিক – অবৈধ ব্যবসা বীরদর্পে করার সাহস পাচ্ছে অপরাধী সিন্ডিকেট ।








Discussion about this post