নারাযণগঞ্জ মহানগরীর সর্বত্রই নাসিক নির্বাচনকে ঘিরে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা । আশির দশকে আলী আহমদ চুনকা চেয়ারম্যান জীবদ্দশায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার আসামী নগরীর নলুয়াপাড়ার মুকুলকে গ্রেফতারের দাবীতে বঙ্গবন্ধু সড়কে মিছিল করেন তৎকালীন সময়ের উদীয়মান আইনজীবী তৈমূর আলম খন্দকার । ওই সময়ে তৈমূর আলম খন্দকারের জোড়ালো মিছিল মিটিংয়ের কারণে শেষ পর্যন্ত হারাধন দারোগা ধর্ষণ মামলার আসামী মুকুলকে গ্রেফতার করে ইট বেঁধে পিটানোর ঘটনায় আরেক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় । সেই সময় থেকেই চুনকা চেয়ারম্যানের সাথে তৈমূর আলম খন্দকারের গভীর সখ্যতা চলমান ছিলো দীর্ঘকাল । এতো বছর পর ২০২২ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে চুনকা পরিবারের সাথে তৈমূর আলম খন্দকার পরিবারের সখ্যতায় বিশাল ব্যবধানের সৃস্ট করেছে । যা নগরীর সকলের মুখে উচ্চারিত হচ্ছে
আগামী ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের বিরুদ্ধে এবার পাল্টা নির্বাচন আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছে ।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আদিনাথ বসু রিটার্নিং অফিসারের কাছে এই অভিযোগ করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার মিছিল সমাবেশ করে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় ভোট প্রার্থনা করছেন। মসজিদ, মন্দির ও গির্জা সহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখছেন এবং তার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন। এই সমাবেশে তিনি তার বক্তব্যে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন।
আরও উল্লেখ করা হয়, অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, সোনালী ব্যাংক নারায়ণগঞ্জ শাখায় লেনদেন চলাকালিন অবস্থায় দলবল নিয়ে ভোট প্রার্থনা এবং বক্তব্য রাখার মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন। যা নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের সাথে সাথে সরকারি ব্যাংকের নিরাপত্তার জন্য হুমকিও বটে। সেই সাথে তৈমূর প্রতিদিন শব্দযন্ত্র (মাইক) ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জ ৫ নং ঘাট টার্মিনালে পথসভা করছেন যা নির্বাচনী আচরণ বিধির চরম লঙ্ঘন।
পাশাপাশি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের আচরণ বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয় অভিযোগে।
এমন অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আদিনাথ বসু বলেন, আমরা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছি। জেলা নির্বাচন কমিশন আমাদের অভিযোগ গ্রহণ করেছেন।
নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মাহফুজা আক্তার আক্তার জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। আমরা দেখছি এ ব্যাপারে কী করা যায়।
এর আগে আওয়ামীলীগ মনেনীত প্রার্থী ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে নির্বাচনে কমিশনের কাছে লিখিতভাবে সরকারি দল কর্তৃক নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছিলেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। এতে তিনি সরকারি দলের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াত আইভী, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস, সংসদ সদস্য মীর্জা আজম ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন।
রেববার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে তৈমূরের পক্ষে অভিযোগ জমা দেন অ্যাডভোকেট সুলতান মাহমুদ।
এতে তৈমূর উল্লেখ করেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন-২০২১ চলমান অবস্থায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগ কর্তৃক আয়োজিত বিজয় সমাবেশের নামে সরকার দলীয় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও জাতীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু, মৃণাল কান্তি দাস, মীর্জা আজম সরকার দলীয় মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তৃতার মাধ্যমে সরাসরি মেয়র পদে ভোট প্রার্থনা করে নির্বাচনী জনসভা করে নির্বাচনী আচরণ বিধির সরাসরি লঙ্ঘন করেছেন যা নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিবন্ধক।









Discussion about this post