নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, এ নৌকা আইভীর নৌকা, বিজয়ের নৌকা, বঙ্গবন্ধুর নৌকা। এ নৌকাকে রোধ করার ক্ষমতা কারও নেই।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় আয়োজিত এক পথসভায় তিনি একথা বলেন।
সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি, জনগণের ঘাঁটি । আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়া মিউচুয়াল ক্লাবে। কিন্তু এ শহরকে কলুষিত করা হয়েছিল। সে কারণেই নেত্রী আমাকে নৌকা দিয়েছেন।’
এসময় তাকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ায় আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আইভী।
তিনি বলেন, বিগত পাঁচ বছরে নারায়ণগঞ্জের আনাচে-কানাচে উন্নয়ন হয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন। আমি প্রতিটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখেছি। মাটি ও মানুষ বলছে ‘নৌকা’ ‘নৌকা’। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে অনুরোধ করবো আমাকে পাঁচ বছরের জন্য সুযোগ দিন। যেকোনো সময় অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে। আমি আপনাদের জন্য মৃত্যুকেও বরণ করতে রাজি আছি। আমি ঘর-সংসারের দিকে তাকাইনি। আশা করি, আপনারা আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।
পথসভা শেষে অস্থায়ী মঞ্চে নৌকার স্লোগান ধরেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তার সাথে তাল মিলিয়ে সারা শহরে প্রতিধ্বনিত হয় নৌকা, নৌকা আর নৌকায়। প্রায় অর্ধলক্ষ নেতা-কর্মীকে নিয়ে নৌকা স্লোগানেই শহর প্রদক্ষিণ করেন আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত এই মেয়র প্রার্থী। ডাকঢোলের শব্দ ও নৌকার স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো শহর। সড়কের আশেপাশের মানুষ আইভীকে দেখার জন্য ভিড় করেন। বহুতল ভবনের ছাদ জানালা দিয়ে আইভীকে শুভেচ্ছা জানান নগরবাসী। প্রতি উত্তরে তিনি সকলের উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। গণমিছিলে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও।
সভায় নানক বলেন, আইভী এই শহরে উড়ে এসে জুড়ে বসা কেউ না। অগ্নিপরীক্ষায় পরীক্ষিত তিনি। এই নারায়ণগঞ্জে সন্ত্রাস ও অশান্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে আইভী। নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের জন্য আইভীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করুন। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারদলীয় এই নেতা বলেন, কেউ কেউ অশান্তি করার চেষ্টা কররবে। প্রশাসনকে এই বিষয়ে বলা হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো সন্ত্রাসীর উঁকিঝুঁকি মানা হবে না।
আবদুর রহমান বলেন, আইভী এই শহরে ত্বকী হত্যা, সাত খুনের মত ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দিবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। পাশাপাশি চাঁদাবাজ ও নতুন কোনো গডফাদারের যাতে জন্ম না হতে দিবেন না। প্রয়োজনে জীবন দিবেন তবু এই নারায়ণগঞ্জকে সন্ত্রাসের নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে দিবেন না। আর এ জন্যই সকল অপশক্তি, নৈরাজ্যবাদীরা, সকল রাজনীতির গডফাদাররা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে প্রতিবাদী আইভীর জয়যাত্রা বন্ধ করতে। কিন্তু তারা জানে না আইভীকে রোধ করবার শক্তি তাদের নাই। এই বিপুল জনসমাগমই বলে দিচ্ছে, নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত। বনের হাতি বনে ফিরে যাবে আর নৌকার বিজয় হবে।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আইভী এই নগরীতে উন্নত করেছেন। তিনি পুনরায় বিজয়ী হলে তাঁর নেতৃত্বে এই নগরী আরও সুন্দর হবে, উন্নত হবে। সন্ত্রাসমুক্ত নগরী আইভীই গড়তে পারেন।
সভায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীও বক্তব্য রাখেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তিনি সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের অন্যান্য নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। আইভী বলেন, ‘এ নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের ঘাঁটি, জনগণের ঘাঁটি। আমার বাবা আওয়ামী লীগের একজন কর্মী ছিলেন। তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। মাটি ও মানুষের নেতা ছিলেন। তিনি আমাকে শিখিয়েছেন মানুষের মাঝেই আল্লাহ বিরাজমান। মানুষকে সেবা করলেই আল্লাহকে পাওয়া যায়। আমি দীর্ঘদিন আপনাদের জন্য কাজ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরে নারায়ণগঞ্জের আনাচে-কানাচে উন্নয়ন হয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন। আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে ঘুরে দেখেছি। মাটি ও মানুষ বলছেন নৌকা, নৌকা। আমি নারায়ণগঞ্জবাসীকে অনুরোধ করবো, আমাকে পাঁচ বছরের জন্য সুযোগ দেন। যে কোনো সময় অনেক কিছু ঘটে যেতে পারে। আমি আপনাদের জন্য মৃত্যুকেও বরণ করতে রাজি আছি। আমি ঘর-সংসারের দিকে তাকাইনি। আশা করি আপনারা আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।’
দুপুর তিনটায় শুরু হওয়া পথসভা শেষ হয় বিকেল পাঁচটায়। পরে শহরের প্রধান সড়ক বঙ্গবন্ধু সড়কে বিশাল গণমিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। হাজারো নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণে এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী।
পথসভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, সদস্য সানজিদা খানম, সাবেক সাংসদ কায়সার হাসনাত, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুজ্জামান, আদিনাথ বসু, আব্দুল কাদির, আরজু রহমান ভুঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রানু খন্দকার, যুবলীগের মহানগরের সভাপতি শাহাদাত হোসেন ভুঁইয়া সাজনু, সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহানগরের সভাপতি জুয়েল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আশারাফুল ইসমাইল রাফেল, বিলপ্ত মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু প্রমুখ।








Discussion about this post