গেলো ২১ জানুয়ারী মঙ্গলবার ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারের পর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ক্রাইমজোন হিসেবে পরিচিত কাশিপুর ইউনিয়ন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জোড়া খুনের মাষ্টারমাইন্ডার আনিছুর রহমান শ্যামল ওরফে চাচা শ্যামল ওরফে দর্জী শ্যামল ওরফে লম্পট শ্যামলকে বহিস্কার করে কেন্দ্রীয় যুবলীগ।
ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলার বাদীকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে আপোষের পর জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেড়িয়ে এসে সেই শ্যামল আর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি না থাকলেও বর্তমানে সে নিজেকে কাশিপুর ইউনিয়ন যুবলীূগের সভাপতি হিসেবে প্রচার চালিয়ে পূর্বের চাইতে আরো অধিক মাত্রায় নানা অপকর্ম করে পুরো কাশিপুর বাসীকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে । শ্যমল ও তার বাহিনীর কারণে ভয়ংকর পরিস্থিতির বিরাজ করছে বলে এলাকার প্রভাবশালীরাও তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস করে না ।
স্থানীয়দের অনেকেও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ফতুল্রা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও কাশিপুর ইউরনয়নের চেয়ারম্যান সভাপতি এম সাইফ উল্লাহ বাদল এবং খোদ সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের নাম ব্যবহার করে এমন অপকর্ম করলেও শ্যামলকে কেউ আশ্রয় প্রশ্রয় দেয় না । তারপরও শ্যামল এলাকায় বিশাল বাহিনী তৈরী করে চালিয়ে যাচ্ছে রাম রাজত্ব । শ্যামলকে ধর্ষন মামলায় গ্রেফতারের পর ফতুল্লা থানায় শ্যামল বাহিনী কি করেছিলো তা সকলেই জানেন। থানার ভিতরেই শ্যামল বাহিনী সাংবাদিকদের উপর হামলাও চালায় তখন ।
তাই শ্যামলের অপরাধ সাম্রাজ্য ধ্বংস করতে হলে র্যাবের কঠোর ও গোপন নজরদারী প্রয়োজন। নইলে পুলিশের অনেক দারোগারাই রাতে ডিউটি করতে আসলে এই শ্যামলের সাথে আড্ডা জমায় এবং সেই সময়ে বিশাল খাবারের ব্যবস্থা থাকে । যা দেখিয়ে এলাকায় আরো তান্ডব চালায় শ্যামল ও তার বাহিনী । তাই র্যাবের হস্তক্ষেপ হলেই এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে ।
এমন ভীতিকর পরিস্থিতির বিশাল অভিযোগ নিয়ে কয়েকদফা গণমাধ্যমকর্মীরা কাশিপুরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় উপস্থিত হলে খোদ শ্যামল ও তার বাহিনীর লোকজন সাংবাদিকদের “কাশিপুরে কেন এসেছেন” বলে প্রশ্ন করেন । একই সাথে শ্যামলের অনুমতি ছাড়া কোন সাংবাদিকরা কাশিপুর আসতে পারবেন না বলেও নানাভাবে হুমকি দেয় ।
চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে কাশিপুর এলাকার অনেকেই বলেন, আনিছুর রহমান শ্যামল এক সময়ে দারিদ্রের কষাঘাতে দর্জীর কাজ করলেও এখন সে কোটি কোটি টাকার মালিক । বিশাল সম্পত্তি । একাধিক লাম্পট্যের ঘটনা সকলের মুখে মুখে । বিএনপি সরকারের সাশনামলে জাল টাকাসহ গ্রেফতার হলেও তৎকালীন সময়ে বিএনপির নেতা কবির প্রধান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে এই শ্যামলকে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে রাখে । এরপর থেকেই পুলিশের সাথে সখ্যতা রেখেই সকল ধরণের অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে অবিরামভাবে ।
যে কোন মানুষ কাশিপুর খিল মার্কেট ও আশেপাশের এলাকায় আনিছুর রহমান শ্যামল ও তার বাহিনীকে ম্যানেজ না করে জমি ক্রয় করলেই সেই জমি,র উপর সাইনবোর্ড টাঙ্গানো হয় ওয়ারিশের নাম করে । এরপর শ্যামলের দপ্তরে বসে চলে দেন দরবার, রফাদফা । পরবর্তীতে এই জমিতে ভবন নির্মান করতে হলে প্রথমে নিজস্ব দালাল দিয়ে রাজউকের অনুমতির জন্য শ্যমলের কাছে দ্বরস্থ হতে হয় । এরপর বাড়ী নির্মানে রড, সিমেন্ট, ইট, বালু সহ সকল ধরণের নির্মান সামগ্রী আনিছুর রহমান শ্যমলের কাছ থেকে ক্রয় করতে হবেই । নইলে বাড়ি নির্মান করা যাবে না । অভিনব এই কায়দায় বিশাল চাঁদাবাজির মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছে আনিছুর রহমান শ্যামল ।
এমন অপরাধ ছাড়াও শ্যামল ও তার বিশাল বাহিনী পুরো কাশিপুর এলাকায় মাদক ব্যবসা ,অটো রিক্সার চাঁদাবাজি, দো্কানে দোকানে দারোয়ানের নাম করে চাঁদা আদায়, ফ্লাট ভাড়া নিয়ে নারী দিয়ে ব্যবসাসহ সকল ধরণের অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে পুরো কাশিপুর ইউনিয়নকে ক্রাইজোনে পরিণত করেছে ।
এমন দীর্ঘদিনের অসংখ্য অভিযোগের বিষয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে অনুসন্ধ্যানে কাশিপুরের বিভিন্ন এলাকায় খোজ নিতে গেলেই মূহুর্তের মধ্যে বহিস্কৃত যুবলীগের নামধারী নেতা আনিছুর রহমান শ্যামল প্রতিবেদকের মুঠোফোনে ফোন দিয়ে “কাশিপুর কে এসছেন বলে জানতে চান।”
উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সকল অভিযোগ বরাবরের মতো অস্বীকার করে প্রতিবেদককে বলেন , আমার অফিসে আসেন , কে আপনার কাছে অভিযোগ দিয়েছে তাকে সামনে নিয়ে আসেন, পারলে আমার সামনে বলুক (!) বলেও হংকার দেন শ্যামল ওরফে চাচা শ্যামল ওরফে দর্জী শ্যামল ওরফে লম্পট শ্যামল ।
অসংখ্য এমন অপরাধের বিশাল কর্মকান্ড নিয়ে আবারো যাচাই বাছাই করতে শুক্রবার ৪ সেপ্টম্বর বেলা ১১ টায় কাশিপুরের বিভিন্ন এলাকার অনেক বাড়ীর মালিকদের সাথে আলোচনাকালে একই ধরণের অপরাধের তথ্য দেয় নিরুপায় বাড়ির মালিকরা । এ সময় খবর পেয়ে শ্যামল বাহিনীর লোকজন প্রতিবেদককে নানাভাবে হুংকার দেয় এবং শ্যামলের অনুমতি ছাড়া কাশিপুরে কোন সাংবাদিকরা আসতে পারবে না বলেও জানায় ।
ভয়ংকর সন্ত্রাসী শ্যামলের অপরাধ সাম্রাজ্যের বিষয়ে জানতে ফতুল্লা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম সাইফ উল্লাহ বাদলের মুঠোফোনে অসংখ্যবার ফোন দিলে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই ।
শ্যামলের এমন ভয়ংকর অপরাধের বিষয়ে ফতুল্রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, কোন বাড়ির মালিক অথবা ভূক্তভোগি কেউ যদি অভিযোগ দিতো তবে কাশিপুরে পুলিশ কাজ করতে সহজ হতো । আমার পুলিশের যদি কেউ শ্যামলের এমন অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত থাকে তবে অবশ্যই তাদের ছাড় দেয়া হবে না ।
(আনিছুর রহমান শ্যামলের এমন অপরাধের বিশাল প্রমাণ সংরক্ষিত রয়েছে নারায়ণগহ্জ নিউজ আপডেট এর দপ্তরে )









Discussion about this post