নারায়ণগঞ্জ বন্দরে ডিস ব্যাবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে যুবলীগ নেতার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী সহ ৩ জন আহত হয়েছেন। যেকোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এলাকায় থমেথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩ টায় নাসিক ২২ নং ওয়ার্ড খান বাড়ী এলাকায় যুবলীগ নেতা খান মাসুদের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত স্বপ্না বেগম, আসিফ ও অপুকে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কোয়াবর অনুমতিপ্রাপ্ত শ্যামল দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর যাবত ডিস ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। প্রায় একবছর আগে থেকে শহরের পাইকপাড়া এলাকার কাউন্সিলর আব্দুল করিম ওরফে ডিস বাবুর লাইন বন্দরে ঢোকানোর জন্যে বিভিন্নভাবে পায়তারা চালিয়ে আসছে একটা সিন্ডিকেট।
কয়েকমাস পূর্বে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে স্থানীয় সাংসদ সেলিম ওসমানের নির্দেশে ওই চক্রের অপতৎপরতা বন্ধ করা হয়েছিল।
কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত জাপা নেতা আবুল জাহের সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করার পর থেকেই পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠে সেই সিন্ডিকেট। বিভিন্ন এলাকায় ডিসের কেটে দিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা সহ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধানের লোকজন।
ক্যাবল ব্যাবসায়ী শ্যামল জানান, এমন ভীতিকর অবস্থায় স্থানীয় ক্যাবল ব্যাবসায়ী এসএম পারভেজ আলম বাদী হয়ে ছাত্রলীগ নেতা বিন্দু সহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু গতরাতে লাইন টেকনিশিয়ান হাসান ও সাব্বিরকে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে বিন্দু ও দুলালের লোকজন।
যুবলীগ নেতা খান মাসুদ অভিযোগ করে বলেন, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে মাঠে নেমেছে এসব অনুপ্রবেশকারীরা। যেসব ব্যবসায়ীরা আগে থেকে এলাক্য ক্যাবল ব্যাবসা করে আসছেন তাদের পেটে লাথি দিয়ে ডিস বাবুর লাইন বন্দরে ঢুকতে পারে না উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বিষয়টি মিমাংসার জন্য দুই পক্ষকে অফিসে ডাকেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খোরশেদ আলম। কথামতো সার্কেল অফিসে যান। তাদের অনুপস্থিতিতে কাউন্সিলর দুলাল ও বিন্দুর নির্দেশে দুলালের ভাই রিপন প্রধান, জাকির প্রধান, সুমন প্রধান, ভাগ্নে অপু, মাদক ব্যবসায়ী কুদ্দুস, দিলা, জয়নাল, বাঘা ফয়সাল সহ ৩০/৪০ জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা বাড়িতে থাকা একটা মোটর সাইকেল ও দরজা জানালা ভাংচুর করে। বাধা দিলে খান মাসুদের বোন স্বপ্না বেগম ও স্থানীয় আসিফ এবং অপুকে বেদম মারপিট করে আহত করে তারা। আহতদের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
বাদীর অভিযোগ অস্বীকার করে কাউন্সিলর দুলাল প্রধান জানান, শনিবার রাতে তার অফিসের সংলগ্ন ডিস লাইনের মেশিন রুমে ঢুকে সংযোগের তার ও সরঞ্জামাদি নিয়ে গেছে রাজু ও তার লোকজন।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা হাসনাত রহমান বিন্দু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শনিবার রাতে লেজারার্স এলাকায় য়ার অনেক লাইনের তার কেটে নিয়েছে পারভেজ আলমের লোকেরা। দেওয়ান বাড়ী এলাকায় সংযোগের তার কাটার সময় হাসান ও সাব্বিরকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেছে প্রতিপক্ষ।
জানতে চাইলে বন্দর থানার ওসি ফখরুদ্দিন ভূইয়া জানান, ডিস ব্যাবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দু`পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যুবলীগ নেতা খান মাসুদ ও তার চাচা রোকন উদ্দিন খান এবং চঞ্চল খানের বাড়িতে হামলার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। একপক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।









Discussion about this post