বুধবার মধ্যরাত ১১ টা ৩৫ মিনিট । পুরো শহরে সুনসান নীরবতা ।এই মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার মূল ফটকের সামনের দেয়ালে পত্রিকা পড়ার অভিনয় করে মুখ আড়াল করার চেষ্টা করছেন শহরের চিহ্নিত চাঁদাবাজদের মূল হোতা আসাদ ও তার সহযোগী অনিক ।
এই মধ্যরাতে গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে নিজেকে পুরোপুরি লুকিয়ে রাখিতে থানার সামনের সিটি কর্পোরেশনের মার্কেটের পিছনে প্রকৃতির ডাকের অভিনয় করে ফের চাঁদাবাজ আসাদ নিজেকে আড়াল করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে থানার গেইটে৷
প্রথমে আসাদের সহযোগী অনিক ও পরবর্তীতে চাঁদাবাজ আসাদ নিজেই থানার গেইটে দায়িত্বরত কন্সস্টেবল শ্যামল কে জিজ্ঞেস করছেন, ওসি সাহেব কখন আইবেন ? আর কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকোন লাগবো ? উত্তরে কন্সস্টেবল শ্যামল জানায়, ‘ওসি স্যারের কথা কি আমি কইতে পারমু ।’
এ সময় কিছুক্ষণ পরপর মুঠোফোন হাতে নিয়ে চাঁদাবাজ আসাদ অজ্ঞাত নাম্বারে ফোন করছেন আর ফোন রিসিভ না হওয়ায় বিরক্ত প্রকাশ করতেও দেখা যায় ।
এই মধ্যরাতে শহরের দেওভোগ কাঠের দোতলা থেকে আসা সজলের স্ত্রী তার ছোট শিশু কে নিয়ে থানার ভিতর পায়চারি করতে দেখে প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমার স্বামীকে তিন তলার এক অফিসার ডেকে এনেছেন, আমি আমার স্বামীর সাথে এসেছি ।’
অপরদিকে চিহ্নিত চাঁদাবাজ আসাদ ও অনিক কে এই মধ্যরাতে থানায় ঘোরাঘুরি করার এক পর্যায়ে প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে জানায়, ওসির সাথে কাজ আছে তাই অপেক্ষা করতেছি। এই মধ্য রাতে কি কথা – এমন প্রশ্নে কোন উত্তর না দিয়ে উল্টো দিকে ঘুরতে থাকে চাঁদাবাজ আসাদ ও অনিক ।
শহরের কুখ্যাত চাঁদাবাজ আসাদের নারায়ণগঞ্জ থানায় এমন অবস্থানের পুরো দৃশ্য দেখে পুলিশের এক সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, ‘ভাই এই চান্দাবাজ কেন আইছে বুঝেন না ? গত তিন দিন ধইরা শহরের বংগবন্ধু সড়কের ফুটপাতে কোন দোকান বসাইতে দিতেছে না ওসি সাব । এই চান্দাবাজ ওসি সাবরে ম্যানেজ করতেই এই মধ্য রাতে থানায় ঘুরঘুর করতেছে। নইলে আর কি কথা ওসির সাথে এই চান্দাবাজদের ? এর আগের সকল ওসিরাই তো শহরের ১৫/২০ জন চান্দাবাজদের কাছ থেইক্কা চান্দা নিতো ক্যাশিয়ার আজাদের মাধ্যমে।’
শহরের এমন অপরাধীদের মধ্যরাতে থানায় অবস্থানের বিষয়ে জানতে ইন্সপেক্টর তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমানের কক্ষে গিয়ে দেখা যায় তিনি তার কক্ষেই এই মধ্যরাতে নামাজ আদায় করছেন । ফলে অপরাধী চাঁদাবাজ আসাদ ও অনিকের বিষয়ে কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই ।
Discussion about this post