স্টাফ রিপার্টার :
আদালতের বিরতির পর ফের বিকেল সাড়ে ৪টায় চাচা ভাতিজা বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নাকে নিয়ে আদালতে শুনানীকালে দুইজনই নিজেদের ভূল স্বীকার করে অঙ্গিকার প্রদান করেন । আগামীতে এলাকায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখবেন । এমন অঙ্গিকারে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক কাউসার আলম পৃথক দুই মামলায় গ্রেফতারকৃত ২২ জনকে জামিন প্রদান করেন।
জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ পারিবারিক বিরোধ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জের ব্যবসাসমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত নিতাইগঞ্জের নানা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, মাদকের রমরমা কারবার, ভূমিদস্যুতাসহ সকল অপরাধ সাম্রাজ্যে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শেষ পর্যন্ত মসজিদের হিসাব চাওয়াও মধ্যরাতে লংকাকান্ডের ঘটনায় কাউন্সিলর কবির হোসেন ও সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার দ্বন্ধ চরম আকার ধারণ করে।
হাজার হাজার ইট নিক্ষেপ লাঠি, বাশ ও ধারালো অস্ত্রের মহড়ায় রোববার ১৭ ফেব্রুয়ারী মধ্যরাত ১২ টা থেকে প্রায় দেড় ঘন্টা ব্যাপী চলে সংর্ঘর্ষ। এমন হামলা পাল্টা হামলায় কাউন্সিলর কবির হোসেনসহ প্রায় ১০ জন রক্তাক্ত যখন হলে আহতদের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা দেয় হয় ।
এমন সংর্ঘর্ষ থামাতে পুলিশ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেও শেষ পর্যন্ত কোন পক্ষকেই থামাতে না পেরে সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না ও বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেনসহ দুই পক্ষের আরো ২০ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানা পুলিশ।
রোববার রাতে আহত অবস্থায় কাউন্সিলর কবির হোসেন জানায়, এশার নামাজের পর শহরের দক্ষিন নলুয়া এলাকায় মসজিদের অর্থ সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না ও তাদের লোকজন আত্মস্যাৎ করার ঘটনা নিয়ে মসজিদে আলোচনা চলাকালে হঠাৎ মুন্না উত্তেজিত হয়ে কবির হোসেনের ভাগিনা টিটুকে মসজিদের ভিতরেই মারধর করে বের করে দেয়। এমন ঘটনায় উত্তেজনার এক পর্যায়ে এলাকাবাসী মিলিত হয়ে মুন্নাকে জিজ্ঞেস করলেই মারধর শুরু করে । এই ঘটনায় উভয় পক্ষ নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে ২২ জনকে গ্রেফতার করে সোমবার ১৮ ফেব্রুয়ারী সকাল ৯টায় আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ থেকে আরো জানা যায় জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর কবির হোসেনের সঙ্গে সাবেক কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্নার বিরোধের জের ধরে সংর্ঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষকে থামাতে প্রথমে দারোগা তাহিদ উল্লাহ ও এএসআই সামছুসহ কয়েকজন অবস্থান নিলেও এমন সংর্ঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে সদর থানার পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় দায়ের করা ৩৩(০২)১৯ নং মামলার বাদী কাউন্সিলর কবির হোসেন সাবেক কাউন্সিল কামরুল হাসান মুন্নার বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ আনা হয় । এ মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড আদেন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয় মুন্না ধারালো ছুরি দিয়ে কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করে। এ মামলায় কামরুল হাসান মুন্না, রকিবুল হাসান লিয়ন, হুমায়ন কবির ও শ্যামল শীলকে আসামী করা হয়।
অপর একটি মামলায় কাউন্সিলর কবির হোসেন, বিপু, কালা ফারুখ, আমিন, ওবায়দুল্লাহ, সাহবুদ্দিন, সুজন মিয়া সহ ১৭ জনকে আসামি করে ৩৪(০২)১৯ নং মামরা দায়ের করে সাবেক কাউন্সিলর কামরুল মুন্না। এ মামলায় কাউন্সিলর কবির হোসেনসহ অন্যান্যদের সাত দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, আইনশৃংখরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ২২জনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছে ।
নারায়ণগঞ্জ শহরের ব্যবসা সমৃদ্ধ হিসেবে পরিচিত নিতাইগঞ্জ এলাকায় নানা কারণে দীর্ঘদিনের বিরোধের পর চাচা কাউন্সিলর কবির হোসেন ও ভতিজা সাবেক কাউন্সিলর কামরুল মুন্নাসহ ২২ জনকে গ্রেফতার করে রিমোন্ডের আবেদনে পুলিশ আদালতে পাঠানোর পর দুই পক্ষই এতোদিন পর আপোষ মীমাংশার আবেদন করে। মাত্র কয়েক ঘন্টা গ্রেফতার থাকাকালীন সময়েই উভয় পক্ষ আপোষ মীমাংশা করবে বলে আদালতে অঙ্গিকার প্রদান করলে আদালত জামিন মঞ্জুর করে ।
আদালতের দায়িত্বরত উপ পরিদর্শক কামাল হোসেন নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন অন্য কোন মামলা না থাকায় সকলকে সকলকে মুক্তির আদেশ দিয়েছে আদালত ।









Discussion about this post