সদ্য সাবেক মেয়র চিকিৎসক সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে গত ৫ বছরে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা আওয়ামী লীগের ইতিহাসে বিরল। একই দলের নেতাকর্মীরাই তার বিরুদ্ধে তুলেছে অভিযোগ এবং তা নিজ দায়িত্বে কেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছেন। আইভী তার জবাব দিয়েছেন খুব কমই। কারণ তিনি জানেন কোন অপরাধ করেননি। আর তাই মুখ না খুলেই অপপ্রচারকারীদের ষড়যন্ত্র ভেস্তে দিতে সক্ষম হয়েছেন। তবে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে বিতর্কিত করতে পারলে কিছুটা ভোটের হেরফের করা সম্ভব হবে, এমন চিন্তা নিয়েই নেমেছে সেই চিহ্নিত পুরানো চক্র। ডিজিটাল এই ষড়যন্ত্র কিভাবে মোকাবেলা করবেন তারা তা এখন দেখার বিষয়।
যে কোন মূল্যে আওয়ামীলীগের ওই শক্তিশালী চক্র দীর্ঘদিনের পরাজয়ের ক্ষোভ মিটাতে এবার আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে ১৬ জানুয়ারীর নির্বাচনকে সামনে রেখে । ওই চক্র যারা মাওলানা আউয়ালকে উসকে দিয়ে অপচেষ্টা করেছিলো, জিউস পুকুর , চুনকা কটিরসহ প্রোপাগান্ডা চালানো আইভী বিরোধী চক্র এবার বিএনপির নেতা এডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের উপর ভর করে কঠিন খেলায় মেতে উঠেছে। যা পুৃরো নগরবাসী খুব ভালো করেই বুঝেন এবং জানেন। সেই কুলাঙ্গার চক্রের এই খেলা চলবে ১৬ জানুয়ারী পর্যন্ত । যা দেখার অপেক্ষায় রইলাম !………এমন মন্তব্য নগরীর অনেকের
সিটি মেয়র থাকা অবস্থায় গত ৫ বছরে দুইবার অডিও ফাঁস করে আইভীকে প্রশ্নের মুখে ফালানোর চেষ্টা হয়েছিলো। একবার জামায়াতের জেলা সভাপতি মাইনুদ্দিন আহমেদের দেয়া বক্তব্য আরেকবার ত্রাণ চাওয়া নিয়ে আইভীর ফোনালাপ। দুটোই বেশ সাড়া ফেলেছিলো বেশ কিছুদিন। তবে আইভীর জনপ্রিয়তার কাছে তা ধোপে টিকেনি। তবে সেই ষড়যন্ত্র এখনও অব্যহত আছে বলে দাবী করেছেন তিনি।
১৮ ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকাবাসীর সাথে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এমনই তথ্য প্রকাশ করেন আইভী। একই সাথে কোন প্রকার গুজব, অনলাইনে অপপ্রচার কান না দিয়ে তা প্রতিরোধ করারও আহবান জানান আইভী। অনলাইনে অপপ্রচারের পাশাপাশি ধর্মীয়ভাবে কুৎসা রটানোর চেষ্টার কথাও তুলে ধরেন।
সম্প্রতি মেয়র আইভী জেলা কার্যালয়ে বসে জয় বাংলা শ্লোগান নিয়ে তার দলীয় অবস্থান প্রকাশ করেন। সেই ভিডিওর কিছু অংশ খন্ডিত করে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আইভি বিরোধী ও বিএনপি পন্থী নেতাকর্মীরা তা শেয়ার করে মেয়রের সমালোচনা করতে থাকেন। এই বিষয়ে কিছুটা বিব্রত হন আইভী শিবিরের নেতাকর্মীরা। শনিবার এই প্রসঙ্গেই নিজের অবস্থান জানান দেন আইভী।
তিনি বলেন, প্রতিপক্ষরা বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেছে দুদকের মামলা দেয়ার জন্য। এই বাড়ি আমার বাবার। এখানে আমার একফোটা জায়গা নেই। আব্বার দুইটা জায়গা বিক্রি করে বাড়ি করেছে দুই ভাই। সেটা নিয়েও অনেক কথা বলেছে। অথচ দুর্নীতি কাকে বলে তা আমার জীবনে আমি এই শহরে কেউ বলতে পারবে না আমার ভাইদের দ্বারা তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমার প্রতিপক্ষ নানা ভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা পারেনি কারন আমি কোন অন্যায় কাজ করিনাই। এখন ধর্মীয়ভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, আমি দলীয় অফিসে সাধারণ একটি বক্তব্য দিয়েছিলাম, সেটাকে কেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে ধর্মীয়ভাবে কটাক্ষ করার চেষ্টা চলছে। বিভিন্ন সময় প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। আমি যাই বলিনা কেন, সেগুলো বিকৃত করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার চেষ্টা করে। এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যের গলা বিকৃত করে প্রচার চালানো হয়। কোন সন্দেহ লাগলে আমাকে জিজ্ঞাস করবেন। আমি কোন মারপ্যাচ রাখিনা, আমি যা বলি তা স্পষ্ট বলি।
আইভী পন্থী আওয়ামী নেতারা বলছেন, আইভীকে দুর্নীতির সাথে জড়িত করতে না পেরে তার ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করছে একটি চক্র। তাদের এসাইনমেন্ট দেয়া হয়েছে তারা যেন এসব খুঁজে বের করতে পারে। এছাড়া সেসব ছবি, অডিও এবং ভিডিও সংগ্রহ করতে পারলে তা দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আইভীকে হেয় করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন তারা। আর সেই কারনেই বাড়তি সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে সকলকে।
যদিও ধর্মীয় ইস্যুতে আইভী জানিয়েছেন, ‘আপনারা সবাই আমাকে ও আমার বাবাকে চিনেন। আমরা আল্লাহওয়ালা লোক। পীর মুর্শীদের খেদমত করে আমরা এখানে এসেছি। আমি সকল তরিকাকে সম্মান করি। কারণ সবার গন্তব্য হচ্ছে আল্লাহকে পাওয়া। কিন্তু একটি শ্রেনী বার বার ধর্মীয় উন্মাদনা তৈরী করে অস্থিরতা তৈরী করতে চায়। আপনারা এর বিচার করবেন।’









Discussion about this post