চীন ও ভারত থেকে বিভিন্ন পন্য সামগ্রী বেচকেনা করতে গিয়ে মরণঘাতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ১৬নং ওয়ার্ডের ফয়সাল সুজননের মৃত্যুর পর পুরো এলাকাবাসী নানাভাবে প্রশাসনের কাছে জোড়ালো দাবী করলেও কেউ কোন কথা শুনতে চান নাই । সদর থানা পুলিশ বারবার পুলিশ সুপারের দোহাই দিয়ে হার্ট এ্যাটাক বলে সুজনের মৃত্যু হয়েছে এমন দাবী করে দাফন করার অনুমতির পর বিকেলে স্থানীয় কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল, সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র আফসানা আফরোজ বিভা, সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শেখ মোস্তফা আলী ও পুলিশকে সাথে নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ও আতংক থামাতে শেষ পর্যন্ত জেলা সিভিল সার্জনা ও সদর থানা পুলিশ নিহতের বাড়ীর সকলকে হোম কোয়ারেন্টানে রেখেছে । একই সাথে ১নং বাবুরাইলের মাঝার গলি লগডাউন করেছে ।
সিটি কর্পোরেশন ২৩ নং ওয়ার্ডের এক নারীর মৃত্যুর পের একই ভাবে এমন অবহেলার কারণে পরবর্তীতে রসুলবাগ, ১৭নং ওয়ার্ডের পাইকপাড়া ও গোদনাইলে কয়েকশত পরিবারকে লগডাউন করে প্রশাসন । একইভাবে বাবুরাইল এলাকার ফয়সাল সুজন সর্দি, জ্বর ও কাঁশি, বমি, পাতলা পায়খানা নিয়ে ১০/১২ দিন অসুস্থ থাকাবস্থায় চিকিৎসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। ঘটনাটি ব্যাপকভাবে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে নারায়ণগঞ্জজুড়ে ।
প্রথমে সুজনের চিকিৎসা ও লাশ নিয়ে নানা টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত নিহত ফয়সাল সুজানের পরিবারের আট সদস্যসহ ১৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে । মৃত ফয়সাল শহরের দুই নম্বর রেলগেইট এলাকার বর্ষণ সুপার মার্কেটে তৈরি পোশাকের ব্যবসা করতেন। একই সাথে তিনি চীন ও বারত থেকে মালামাল বহণ করতেন ।
শুক্রবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। সুজনের মৃত্যুর পর ওই এলাকার মানুষের মধ্যে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে সুজনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র আফসানা আফরোজ বিভা, সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শেখ মোস্তফা আলী ও পুলিশ ওই বাড়িতে যান। পরে ওই পরিবারের আটজনসহ মোট ১৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শেখ মোস্তফা আলী বলেন, রাতে অসুস্থবোধ করায় তিনি শহরের নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালে যান। সেখানে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। হাসপাতালের চিকিৎসক আমাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারপরও যেহেতু এলাকাবাসীর মধ্যে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে সেজন্য এবং সচেতনতার লক্ষে আমরা তার পরিবারের লোকজন, ভাড়াটিয়াসহ ১৩ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র আফসানা আফরোজ বিভা বলেন, ওই পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। তাদের যেকোন ধরনের অসুবিধার কথা জানাতে বলা হয়েছে। আমরা তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল এ সময় উপস্থিত থেকে সখলকে নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করতে পুরো এলাকাবাসীকে করজোড়ে অনুরোধ করতে দেখা যায় ।









Discussion about this post