সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি :
মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে ৪৮ কেজি গাঁজা ও ৯৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ সিদ্ধিরগঞ্জের শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মূলহোতা টাইগার ফারুকের ৮ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩ এর গোয়েন্দা সদস্যরা।
গত ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় থেকে রাকিব, ওমর, সোলায়মান, ফরহাদ ও অয়নকে ৯৬ বোতল ফেনসিডিল ও ১৮ কেজি গাঁজাসহ গ্রেফতার করে।
এ সময় মাদকের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার জব্ধ করা হয়।
অন্যদিকে ২ এপ্রিল শুক্রবার গভীর রাতে নয়াপল্টন এলাকায় একটি বিশেষ চেকপোষ্ট স্থাপনের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী মিলন, তার ভায়রা মোঃ মোশারফ হোসেন ও সহযোগী মোঃ মহিন উদ্দিন হোসেন হৃদয়কে গ্রেফতার কর হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট হতে ২০ কেজি গাঁজা, ১টি প্রাইভেটকার, ৩টি মোবাইল ফোন এবং ৪টি সীমকার্ড উদ্ধার করে র্যাব-৩ এর একটি দল। দু’টি অভিযানের গ্রেফতারকৃত প্রত্যেকেই টাইগার ফারুকের মাদক সিন্ডিকেটের সদস্য বলে জনিয়েছেন এলাকাবাসী।
এ ছাড়াও গত ২০ মার্চ বিপুল পরিমানের গাঁজা ও ফেন্সিডিলসহ আলমগীর হোসেন নামে আরো এক টাইগার ফারুকের সহযোগীকে কুমিল্লা জেলার ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে এলাকায় খবর বেড়িয়েছে। গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে ।
সিদ্ধিরগঞ্জের অনেকের অভিযোগ, টাইগার ফারুক নিজেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট লোক ও যুবলীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে এসব মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। এছাড়াও টাইগার ফারুক প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের বাড়ির পাশে মিজমিজি টিসি রোড ইউরো টাওয়ার এলাকায় একটি অফিস নিয়ে বসেছেন। ঐ অফিসে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের প্রধান কার্যালয়ের সাইনবোর্ড জুলিয়ে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে থাকে। ওই অফিসে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একাধিক অফিসারের যাতাযাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে টাইগার ফারুক মাদক ব্যবসা করে ইতিমধ্যে বহুতল বাড়ি, গাড়ি ও বিপুল টাকার মালিক বনে গেছে। তার ঘনিষ্ঠ সহযোগি মাদক ব্যবসায়ীরাও প্রচুর টাকা ও গাড়ির মালিক। অভিযোগ রয়েছে, তার মাদক সিন্ডিকেটের কোন সদস্য গ্রেপ্তার হলেই তাকে জামিনে বের করতে মুল ভুমিকা পালন করে টাইগার ফারুক।
তবে সিদ্ধিরগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান শুনেছেন টাইগার ফারুক শ্রমিক লীগ করে। সে আমার সংগঠনের কেউ না। আমার আওয়ামীলীগেরও কেউ না। টাইগার ফারুক কিভাবে ৬ মাস ১ বছর, ২ বছর ব্যবসা করে ৮ তলা বিল্ডিং বানাইয়া লায়। আর আমি ৫২ বছর ব্যবসা করে পারি না। আমার একটাই কথা যে যেই কর্ম করবো, তার ফল তাকেই ভোগ করতে হবে।
এদিকে দুই দফা র্যাবের অভিযানে ৪৮ কেজি গাঁজা ও ৯৬ বোতল ফেনসিডিলসহ সিদ্ধিরগঞ্জে মাদক ব্যবসায়ি সিন্ডিকেটের মূলহোতা টাইগার ফারুকের ৮ সহযোগী আটক হওয়ার পর নড়ে চড়ে বসেছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে কথা সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান পিপিএম বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ীরা যে দলের ই লোক হোক না কেন ? তাদেরকে কোন ছাড় দেওয়া হবে না। মাদক ব্যবসায়ীরা সমাজের শত্রু। মাদক ব্যবসায়ীই না শুধু কোন অপরাধীদের সাথে আপোষ না।
উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত মিলন সিদ্ধিরগঞ্জের কথিত যুবলীগ নেতা টাইগার ফারুকের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে আসছে। টাইগার ফারুক নিজেকে সিদ্ধিরগঞ্জের ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে থাকেন। সে সিদ্ধিরগঞ্জের ১নং ওয়ার্ডের মিজমিজি টিসিরোড ইউরো টাওয়ার এলাকায় একটি অফিস নিয়ে সেখানে ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের প্রধান কার্যালয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা হলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি নাসিক প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান মতি জানান, ১নং ওয়ার্ড যুবলীগের কোন কমিটি গঠন করা হয় নি। টাইগার ফারুক আমাদের দলের কেউ না। তার ছোট ভাই ভাই জুয়েল রানা নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের সহ-সভাপতি। সে বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিনের অন্যতম সগহযোগী।
এসব বিষয়ে কথা হলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, এদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই। সে আমার সংগঠনের কেউ না। আমার আওয়ামীলীগেরও কেউ না। শুনছি সে শ্রমিকলীগ করে। যদি সে আওয়ামীলীগও করে আর অন্যায় করে তার বিচার হবে না ? যার জন্য ধরতাছে এটা কিন্তু বোঝা কঠিন ব্যাপার। সে ইপিজেডে ব্যবসা করে, আমরা তো এটাই জানি। এখন যে ভেতরে ভেতরে এ কাজ করে, এটা তো আমাদের জানা নাই। আমাদের নেত্রী কেন্দ্রের বড় বড় নেতাদের কেউরে ছাড় দেন নাই। যে যেই কাজ করবো তার প্রাইপ্য সে পাইবো। আমি ওসির এখানে অনুষ্ঠানে আমি বার বার বলতেছি, শেখ হাসিনা চায় না মাদক সন্ত্রাস, এমপি শামীম ওসমান চায়না না মাদক সন্ত্রাস আমিও চাই না মাদক সন্ত্রাস। আমি তাকে পাত্যাই দেই না। শুনেছি সে শ্রমিকলীগ করে দাবি করে পাল্টা তিনি এ প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, কিভাবে ৬ মাস ১ বছর, ২ বছর ব্যবসা করে ৮ তলা বিল্ডিং বানাইয়া লায়। আর আমি ৫২ বছর ব্যবসা করে পারি না। আমার একটাই কথা যে যেই কর্ম করবো, তার ফল তাকেই ভোগ করতে হবে।









Discussion about this post