এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও নানা অবৈধ ব্যবসার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে মারামারির ঘটনায় একাদিক হত্যা মামলায় আসামী নৌকার মাঝি থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক নানা অপরাধের হোতা আলাউদ্দিনসহ কয়েকজন উচ্চ আদালত থেকে ৪ (চার) সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়ে এলাকায় এসেই ফের রামরাজত্ব কায়েম করার চেষ্টায় ফের উত্তেজনা বিরাজ করছে । পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলেও উভয় পক্ষের সন্ত্রাসীরা ফের যে কোন সময় আবারো রক্তক্ষয়ীর মতো লোমহর্ষক ঘটনার জন্ম দিতে পারে ।
আর এমন একের পর এক হত্যাকান্ডের নেপথ্যে নানাভাবে কলকাঠি নাড়ছেন নারায়নগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের এক ইন্সপেক্টর পর্যায়ের এক কর্মকর্তা ।
এই কর্মকর্তা উভয় পক্ষের সাথেই গোপনে লিয়াজোঁ করে একদিকে লাখ লাখ টাকা আদায় অপরদিকে উভয় পক্ষকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাতে উস্কানী দিচ্ছে বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। একই সাথে এক পক্ষের সন্ত্রাসীদের কার্যালয়ে বসে মামলায় সুবিধা করে দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ইন্সপেক্টর পর্যায়ের এই কর্মকর্তা লাখ লাখ টাকা আদায়ের ভিডিও চিত্র সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও এলাকার অনেকের হাতে হাতে দেখা গেছে ।
নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর পর্যায়ের এই কর্মকর্তার শলাপরামর্শ মোতাবেক উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আলাউদ্দিন হাজির নেতৃত্বে সন্ত্রাসী পক্ষ ফের মারমুখি অবস্থানে রয়েছে । আর ওই কর্মকর্তার কারণেই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে বলেও এলাকবাসী জানায়
জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামে একটি কোম্পানির বালু ভরাটের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে গত ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারী দুপক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের তিনজন হত্যাকান্ডের পর উভয় পক্ষের দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
সে মামলার আসামীরা জামিনে আসার পর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে দণন পক্ষের লোকজন ফের একত্রিত হয়ে সংঘর্ষে জড়ানোর চেষ্টা করছে। খবর পেয়ে পুলিশ উভয় পক্ষের লোকজনদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার হোসিয়ারী দিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার জন্য আহবান করে। পরে উভয় পক্ষ পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে কিছুটা শান্ত হয়।
স্থানীয়রা জানান, গত ফেব্রুয়ারী মাসের ১৯ ও ২০ তারিখে বালু ভরাটের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের হাজী আলাউদ্দিনের সঙ্গে একই এলাকার ব্যবসায়ী সাদেকুর রহমান ওরফে সাদেক মোল্লার আধিপত্য বিস্তার ও নূর আলীর মালিকানাধীন একটি কোম্পানির বালু ভরাটের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনায় আলাউদ্দিনের নেতৃত্বে হামলায় সাদেক মিয়া পক্ষের ১০ ব্যক্তি আহত হয়।
পরদিন সকালে ফের আলাউদ্দিনের লোকজন হামলা চালালে উভয় পক্ষের লোকজন মুখোমুখি সংঘর্ষে আলাউদ্দিন পক্ষের সমর আলী নিহত এবং আহত হয় অন্ততঃ ২০ জন। এ ঘটনায় নিহত সমর আলীর ভাই আব্দুল আলী বাদী হয়ে মো. জজ মিয়াকে প্রধান আসামী করে ১৭ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে আহত সাদেকুর রহমানের স্ত্রী শেফালী বেগম বাদী হয়ে হাজী আলাউদ্দিনকে প্রধান আসামী করে ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ।
সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের মধ্যে সাদেকুর রহমানের পক্ষের আলী আহম্মেদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও সাইদুর রহমান নামে এক ব্যক্তি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
এ ঘটনার পর কয়েকদিন ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করলেও গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাদল ও জলিলসহ অপর এজাহারভুক্ত আসামীরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় শোডাউন দেয়। এলাকায় ফের সংঘর্ষ লাগতে পারে শংঙ্কা করে নিহত শহিদুলের বড় ভাই পুলিশকে খবর দেয়। এতে বাদল গংরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাদলের বিডিংয়ের উপর থেকে প্রতিপক্ষের বাড়ীঘরের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে উভয় পক্ষই সংঘর্ষের জন্য তৈরী হয়ে লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে দুই পক্ষই সরে যায়।
সোনারগাঁ উপজেলার নোয়াগাঁও এলাকায় এমন থমথমে পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে জানান, উচ্চ আদালত থেকে হাজী আলাউদ্দিনসহ অপর আসামীরা চার (৪) সপ্তাহের জন্য জামিন নিয়ে এলাকার আসার পর উত্তেজনা বিরাজ করে উভয় পক্ষের মধ্যেই । আমাদের সার্কেল স্যার জনাব বিল্লাল হোসেনসহ আমরা পুলিশের অনেকেই এলাকায় অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে । আর কোন গোলযোগ হবে না বলেও আমরা আশাবাদী ।









Discussion about this post