আড়াইহাজার প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক প্রবাসীর স্ত্রী পারভিন আক্তার (৪৩) এর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে আলোচনা এবং সমালোচনার ঝড় বয়ে চলছে। মৃত্যুর ছয়দিন অতিবাহীত হলেও এর কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারে নাই পুলিশ।
উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের দয়াকান্দা কান্দাপাড়া গ্রামের ইদ্রিছ আলীর ছেলে শাহালমের সাথে একই ইউনিয়নের চৈতনকান্দা গ্রামের কুদ্দুসের মেয়ে পারভিনের ২৫ বছর পুর্বে বিয়ে হয়। বর্তমানে পারভিন ৩ ছেলে সন্তানের জননী। স্বামী শাহালম মালয়শীয়া এবং দুই ছেলে আমজাদ এবং পারভেজ সৌদী প্রবাসী। ছোট ৫ বছরের শিশু সন্তান সাফিকে নিয়ে পারভিন বাড়িতে থাকেন।
গত ১১ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে প্রতিদিনের মত বাড়ির কাজ কর্ম শেষে পারভিন গুমিয়ে পড়েন। শুক্রবার ভোরে পারভিনের স্বামীর বড় ভাই আলম ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে বাহীরে বের হয়ে রান্না ঘরের কাছে পারভিনের লাশ দেখতে পান। তিনি লাশ দেখে চিৎকার করলে তার পুত্র বধু জামিনা ঘুম থেকে উঠে আসেন। লাশ দেখে জামিনা ঘরে গিয়ে তার নিজের একটি ওড়না এনে স্পর্শ কাতর জায়গা ডেকে দেন। সে সময় পারভিনের ঘরের একটি দরজা খোলা ছিল। তার পড়নের থ্রিপিছ জামার সাথে যে উড়নাটি ছিল তা সাথে পাওয়া যায় নাই। লাশের মাথার চুলের সাথে জড়ানো ছিল শুকনো চালতা গাছের পাতা এবং শড়িসা গাছের ডাটা। নিহতের গলায় ছিলো দাগ ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে বাড়ির পাশেই রয়েছে একটি চালতা গাছ এবং সরিশার ডাটার একটি স্তুপ। ধারনা করা হচ্ছে পারভিনকে ওখানেই হত্যা করে লাশটি তার বাড়িতে রেখে যায় দুস্কৃতি কারীরা। এ ব্যপারে পাভিনের মা জোহরা বেগম অজ্ঞাতনা আসামী দিয়ে ১২ মার্চ থানায় একটি হত্যার অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ লাশের সাথে পাওয়া পারভিনের ব্যবহারকৃত মোবাইলে ৪ মিনিটের একটি অডিও রেকর্ড পান। সেখানে নিজের মৃত্যুর জন্য নিজেকেই দায়ী করে যাওয়ায় ১২ মার্চ থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা রজু হয়।
এলাকাবাসী জানান, আমরা তার আত্মহত্যা করার মত কোন আলামত পাইনি। সে যদি আত্মহত্যা করত তা হলে সে বিষ পান অথবা ফাঁস দিয়ে থাকত তার লাশ কেন রান্না ঘরে পাশে পড়ে রইলো।
নিহত পারভিনের ছোট বোন পারুল জানান, আমার বোনকে তার পড়নের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে খুনিরা। তার ওড়না কেন লাশের সাথে পেলাম না। এ নিয়ে জল্পনা- কল্পনা আর আলোচনা-সমালোচনার ঝর বেয়ে চলছে এলাকায়।
বিভিন্ন সুত্রে জানা যায়, প্রতিবেশী কবিরের সাথে পরকিয়া, একই গ্রামের চান্দু মিয়ার মেয়ে সনিয়ার পারভিনের বড় ছেলে আমজাদের সাথে প্রেমের বিয়ে মেনে না নেয়ায় বউয়ের সাথে ঝগড়া বিবাদ । পরকিয়ার প্রেমের কারনে প্রবাসী স্বামীর সাথে ঝগড়া হত্যা বা আত্মহত্যার কারন হয়ে থাকতে পারে। মৃত্যুর পর থেকে পরকিয়া প্রেমিক কবির পলাতক রয়েছে।
মামলার তদন্তকারী অফিসার গোপালদী তদন্ত কেন্দ্রের এস,আই মোঃ আসরাফুল ইসলাম জানান, তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। ময়না তদন্ত এবং বিষেরা রির্পোট হাতে পাওয়ার পর এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা বুঝা যাবে।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, পারভিনের ব্যবহারকৃত মোবাইলে অডিও রেকর্ডিংয়ে নিজের মৃত্যুর জন্য নিজেকে দায়ী করায় এ ব্যপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রির্পোট পাওয়ার পরে সব জানা যাব।









Discussion about this post