নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপি ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় পুলিশ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ২৬ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ১০৫ জনকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার রাত ১০টায় আড়াইহাজার বাজারে জেলা বিএনপির সাবেক অর্থবিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ও আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইফতিয়ার হোসেনের সমর্কদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাপাতালে চিকিৎসাধীন।
আনোয়ার হোসেন বলেন, রোববার বিকেলে তাঁর ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম একটি ব্যাংকে সাত লাখ টাকা জমা দিতে যাচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা ইফতিয়ার হোসেন দলবল নিয়ে রফিকুলকে মারধর করে অস্ত্র ঠেকিয়ে সাত লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। এই ঘটনার জেরে রাতে এলাকাবাসী ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
মিছিল শেষ হলে ইফতিয়ার হোসেন দলবল নিয়ে তাঁর বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর পাশাপাশি লোকজনকে মারধর করা হয়। এ সময় তিনি আড়াইহাজার থানার সহায়তা চাইলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছোড়ে। হামলায় তাঁর স্ত্রী কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তারসহ অন্তত ১৫ জন আহত হন। টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনি (আনোয়ার) রোববার সন্ধ্যায় আড়াইহাজার থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইফতিয়ার হোসেন বলেন, রোববার আড়াইহাজার সাবরেজিস্ট্রি কার্যালয়ে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে রফিকুলের সঙ্গে তাঁর বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর জেরে বিকেলে আড়াইহাজার বাজার এলাকায় তাঁকে মারধর করা হলে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাৎক্ষণিক একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। মিছিলটি আনোয়ার হোসেনের বাড়ির সামনে গেলে বাড়ির ভেতর থেকে হামলা চালানো হয়। এতে তাঁদের অন্তত ২০ নেতা–কর্মী আহত হন।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১৩টি গুলি ছুড়েছে। এ ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে ৭ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৬০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। তা ছাড়া এই ঘটনায় ইফতিয়ার হোসেন বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৪৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।
সোমবার মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন আনোয়ার হোসেনের বড় ভাই শাখাওয়াত হোসেন, তাঁর বোনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন ও বাড়ির পাহারাদার মো. জুয়েল।
সোমবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এ ঘটনায় আনোয়ার হোসেনের পক্ষ থেকে কোনো মামলা করা হয়নি। মামলা না করার কারণ জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের টাকা ছিনতাই হয়েছে, বাড়িঘর ভাঙচুর করে লোকজনকে আহত করা হয়েছে। অথচ পুলিশ আমাদের লোকজনকেই গ্রেপ্তার করেছে। আমাদের গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। মামলা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ পাচ্ছি না।’









Discussion about this post