খালেদ হায়দার খান কাজল কে ঘিরে বিতর্ক যেন কোন অবস্থাতেই শেষ হচ্ছে না । রাস্ট্র ক্ষমতায় আওয়ামীলীগ আর নারায়ণগঞ্জের শাসক দল ও তাদের চেলা চামুন্ডাদের শেল্টারে একজন চিহ্নিত কুখ্যাত রাজকারপুত্র নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যমনি হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়ে জেলার নানা অপরাধের কলকাঠি নাড়ছেন বলে জোড় অভিযোগ রয়েছে । দীর্ঘ দিন যাবৎ এমন অভিযোগ নগরবাসীর মুখে চুপি চুপি উচ্চারিত হলেও এবার খোদ নগরীর (নাসিক) মেয়র ডাক্তার সেলিনা হায়াৎ আইভী সেই খালেদ হায়দার খান কাজলের নানা ফিরিস্তি তুলে ধরেছেন জনসম্মুখে ।
এই কাজল ও ঠিকাদার নিয়ন্ত্রণকারী সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে শীর্ষ কর্মকর্তা (গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসাইন) ফতুল্লা থানায় সাধারণ ডায়রী করেন।
সেই সময় কাজল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসাইনকে হুমকি দিয়ে বলেন, “ তুই কখন অফিসে আসবি, আসার সঙ্গে সঙ্গে তোকে মেরে ফেলবো।”
এমন ঘটনা ছাড়াও অসংখ্য ঘটনা উল্লেখ করে নগরীতে অনেকেই বলছেন, এখনো সেই কাজল নারায়ণগঞ্জ প্রশাসনের মধ্যমনিতেই রয়েছে রহস্যজনক কারণে।
শনিবার ২ অক্টোবর নাসিক মেয়র আইভী তার বক্তব্যে ৬ মিনিটের মন্তব্য লাখ লাখ মানুষ ভার্চ্যুয়াল পন্থায় অবলোকন করছে । যা তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে সর্বত্র

চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল। ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন হিসেবেই তিনি অধিক পরিচিত। এর পাশাপাশি চাষাড়া রাইফেল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকও তিনি। জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে জেলা পুলিশ প্রশাসনেও তার ব্যাপক যাতায়াত। সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তিনি থাকেন অতিথি হিসেবে। ব্যাপক সমাদৃত হোন কাজল।
ইতোপূর্বে তাকে বহুবার ‘রাজাকারপুত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বক্তব্য দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। ইতিহাসবিদ মুনতাসির মামুনের লেখা একটি বইতেও তার পিতা প্রয়াত গোলাম রাব্বানী খানকে শান্তি কমিটির নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে খালেদ হায়দার খান কাজল সাংসদ সেলিম ওসমানের প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মচারি ছিলেন ! তা এতদিন অনেকেই জানতেন না। আবার সেই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে মেরে ধরে বের করে দেওয়া হয়েছিলো, সেই বিষয়টিও অজানা ছিলো অনেকের কাছে।
তবে, এবার সেই তথ্য শহরবাসী জানলেন মেয়র আইভীর বক্তব্যে। শনিবার (২ অক্টোবর) বন্দরের একটি অনুষ্ঠানে আইভী বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাজল সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। যা রোববার (৩ অক্টোবর) টক অব দ্য টাউনে পরিণিত হয় পুরো নারায়ণগঞ্জজুড়ে।
আইভী তার বক্তব্যে সেলিম ওসমানকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘আপনি আপনার কর্মচারি কাজলকে মেরে গলায় জুতার মালা পরিয়ে আপনি বের করে দিয়েছেন। আবার কী কারণে যেন তাকে মাথায় তুলেছেন। ওই রাজাকারের ছেলেকে নিয়ে সমস্ত কিছু লুটপাট করে খাচ্ছেন।’
সিটি মেয়রের ওই বক্তব্যের পর রোববার দিনজুড়েই সর্বত্র ছিলো এ নিয়ে আলোচনা। নানা জনের মুখে শোনা গিয়েছে নানা কথা। অনেকে এমনও প্রশ্ন তুলেছেন, সেলিম ওসমানের একজন কর্মচারি হয়েও তিনি এত প্রভাবশালী কী করে হলেন ? তার প্রভাব, প্রতিপত্তের নেপথ্যে কী এমন রহস্য লুকিয়ে আছে ! তিনি প্রশাসনের মধ্যমনিতে অবস্থান করেন কি করে ?
প্রসঙ্গত, খালেদ হায়দার খান কাজলকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি একটি স্থানীয় দৈনিক একটি সংবাদও পরিবেশন করেছিলেন। যেখানে রাজউকের একটি জায়গাসহ সমবায় ভবনের কথা তুলে আনা হয়েছিলো। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিলো, হাত বদল করেই কোটি কোটি টাকা নিয়ে গেছেন চেম্বার অব কমার্সের ওই সভাপতি। এছাড়াও একই দৈনিকে এর পূর্বে লিখেছিলো, তার অবৈধ প্রভাব বিস্তারের নানা ফিরিস্তি। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির গেল নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন বহিরাগতদের সাথে নিয়ে আইনজীবীদের গায়েও হাত তোলা, লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছিলো তার বিরুদ্ধে । আর এমন সংবাদ প্রকাশ হলে রাজাকার পুত্র ও তাদের স্বজনরা নানাভাবে গণমাধ্যমকর্মীদের হুমকির ঘটনাও রয়েছে অনেক ।









Discussion about this post