শেষ পর্যন্ত নানা আলোচনা সমালোচনার পর নারায়ণগঞ্জ থেকে বদলী করা হলো পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদকে । নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে একটি বহুতল ভবন ধ্বসে হতাহতের ঘটনায় যতটুকু আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে তার চাইতেও বেশী আলোচনায় উঠে এসেছে এসপি হারুনের বদলী বিষয়টি । যা টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নানা কারণে ব্যাপকভাবে আলোচিত সমালোচিত পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ কে নারায়ণগঞ্জ থেকে বদলী করা হয়েছে। পুলিশের এই কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে ঢাকার হেড কোয়ার্টারে পুলিশ সুপার টিআর হিসেবে বদলী করা হয়েছে বলে আদেশের পত্র মাধ্যমে জানা যায় ।
দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্প গ্রুপ পারটেক্সের কর্ণধার আবুল হাসেমের পুত্রবধূ ও নাতিকে ঢাকার বাড়ি থেকে গভীর রাতে তুলে নিয়ে আসার ঘটনায় তাকে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জেলার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিতেই এমন আদেশ জারি করেছেন বলেই এমন বদলীর আদেশ দেয়া হয়েছে বলে সর্বত্র চাউর হেয়েছে ।
রোববার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে তাকে এই বদলীর আদেশ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র উপ-সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই বদলীর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে ।
এর আগে ১ নভেম্বর দিবাগত রাত ১ টার দিকে পারটেক্স গ্রুপের কর্ণধার আবুল হাসেমের ছেলে আম্বর গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেলের গুলশানের বাসভবন থেকে তার স্ত্রী ফারহা রাসেল এবং পুত্র আহনাফ রাসেলকে তুলে নিয়ে আসা হয়েছে বলে এসপি হারুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন আম্বর চেয়ারম্যান রাসেল।
তার দাবি ছিলো, আম্বর ডেনিম থেকে ৮ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন হারুন অর রশীদ। এই চাঁদার টাকা না পেয়ে বুধবার তার ব্যক্তিগত গাড়ি জব্দ করে নিয়ে আসে। পরে ১ নভেম্বর গভীর রাতে তার গুলশানের বাড়িতে ৫০-৬০ জন ডিবি পুলিশ, থানা পুলিশ ও সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যদের নিয়ে হানা দেন এসপি হারুন।
রাসেল আরও দাবি করেছেন, তার বাড়িতে গিয়ে প্রতিটি রুম তছনছ করা হয়। এক পর্যায়ে তার স্ত্রী ফারাহ রাসেল এবং আনাফ রাসেলকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নিয়ে আসা হয় নারায়ণগঞ্জ । এবং তার গাড়ি চালক সুমনকে মাদক ও গুলি দিয়ে আটক করা হয়েছে বলে নাটক মঞ্চস্থ করেন। এ ঘটনায় দুইটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আম্বার চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেলকেও আসামী করা হয়েছে।
এদিকে রাসেলের বাড়িতে মধ্যরাতে অভিযান চালানো এবং সেখান থেকে তার স্ত্রী-পুত্রকে আটক করে নিয়ে আসার একটি সিসি টিভির ফুটেজ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
এর আগে ২ নভেম্বর পারটেক্স গ্রুপের কর্ণধার আবুল হাসেম ও তার স্ত্রীকে এসপি অফিসে বসিয়ে রাখা হয়েছিলো। পরে বিকেলের দিকে শওকত আজিজ রাসেলের ছেলে ও স্ত্রীকে তাদের হেফাজতে ছেড়ে দিয়ে গাড়ি চালক সুমনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এ ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় শওকত আজিজ রাসেল ও চালক সুমনকে আসামী করে মাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুণ অর রশিদকে বদলীর এমন আদেশের খবর মূহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পরলে পুরো জেলায় নানা গুঞ্জন দেখা দিয়েছে । কোন কোন পক্ষ উল্লাস করতে দেখা গেছে আবার কোন কোন পক্ষ চুপসে গেছে এমন আদেশের খবরে।









Discussion about this post