বিভিন্ন গণমাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের নানা পদক্ষেপের সংবাদ প্রকাশের পর আজ ৯ এপ্রিল কালের কন্ঠ ও বায়লাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রায় একই শিরোণামে এসপি হারুনের কঠোর অবস্থানে নারায়ণগঞ্জ সন্ত্রাস মাদকমুক্তের পথে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় থোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে জেলা জুড়ে।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
কালের কন্ঠ প্রকাশিত সংবাদটি হুবহু তুলে ধরা হলো : নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের যোগদানের পর তাঁর কঠোর অবস্থানে সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্বৃত্তদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। নানা কারণে আলোচিত নারায়ণগঞ্জ এখন সন্ত্রাস ও মাদকমুক্তের পথে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশের জোরালো অভিযানে স্বস্তিতে নগরবাসী। অভিযান অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে তারা।
চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের পাগলার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মীর হোসেন মীরুকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। মীর হোসেন মীরুর বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারসহ ১১টি মামলা রয়েছে। মীরু মানুষ খুনের পর লাশ টুকরা টুকরা করে পাগলার পুকুরে মাছকে খাওয়ানোর জন্য ফেলে দিত। মীরু ওই এলাকার মানুষের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। তার গ্রেপ্তারে ফতুল্লা এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছিল। মীরু বিভিন্ন জায়গায় বলে, তার জন্য একজন সংসদ সদস্য তদবির করেছেন।
৭ ফেব্রুয়ারি ফতুল্লার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারি শাহ্ আলম গাজী ওরফে টেনু গাজীকে গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। টেনু গাজী এলাকায় নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলে এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াত। তার অত্যাচারে এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ। তার বিরুদ্ধে এলাকার সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
নগরের ৫ নম্বর ঘাট এলাকা থেকে গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিআইডাব্লিউটিএ এলাকায় জুয়ার বোর্ডে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪১ জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করে। জুয়াড়ি স্থানীয় জনৈক সাংবাদিক রাজু আহম্মেদের তত্ত্বাবধানে জুয়ার আসর পরিচালনা করে আসছে বলে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছে।
১১ মার্চ ফতুল্লার লঞ্চঘাট এলাকায় চোরাই জ্বালানি তেলের আস্তানায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই জ্বালানিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এদের মধ্যে চোরাই তেলের ব্যবসার মূল হোতা ইকবাল হোসেনও ছিল। এই ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা হয়। ইকবাল হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় তেল চুরি ও বিক্রির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকার করে।
গত ২৭ মার্চ ফতুল্লার জামতলা এলাকায় জনৈক ভিকিসহ অন্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরপ্রবাসী আজিজুল গাফফার খানের জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়। এই ঘটনায় প্রবাসী বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় চাঁদাবাজি ও জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত এজাহারভুক্ত আসামি জাহিদুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ১ এপ্রিল রাতে ফতুল্লার পাগলা এলাকায় অবস্থিত মেরি অ্যান্ডারশনে ভাসমান জাহাজে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মাদকসহ ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করে।
নগরবাসী জানিয়েছে, পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশীদ যোগদানের পর থেকে নারায়ণগঞ্জে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি বন্ধ হয়েছে। মাদক কারবারিরা আতঙ্কে আত্মগোপন ও গাঢাকা দিয়েছে। সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভূমিদুস্য, ঝুট ব্যবসায়ীরা চোরাই তেলের কারবারি, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের ছাড় না দেওয়ায় তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘যোগদানের পর থেকে আমি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক কারবারি, ভূমিদস্যু ও গার্মেন্ট ঝুট সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান শুরু করেছি। নারায়ণগঞ্জের মানুষ কোনো সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের কাছে জিম্মি থাকতে পারে না। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও তাদের জানমালের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকবে। পুলিশ যেকোনো পরিস্থিতি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। মাদক কারবারিসহ মাদক সেবনকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান চালানো হবে। মাদক কারবারি যত শক্তিশালী হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
অপরদিকে বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রকাশিত সংবাদের হুবহু তুলে ধরা হলো :
দুর্বৃত্তদের দমনে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার কঠোর অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে জনমনে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, হারুন অর রশীদ পুলিশ সুপার হয়ে আসার পর থেকে সন্ত্রাসী, মাদকের কারবারি আর দখলবাজদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ এখন সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত হওয়ার পথে।
এসপির দৃঢ় অবস্থান বর্ণনা করতে গিয়ে নগরের বিশিষ্টজনরা যেসব ঘটনার উল্লেখ করেন তার অন্যতম হলো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী মীর হোসেন মীরুকে ২০ জানুয়ারি গ্রেফতার। মীর হোসেন মীরুর বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। বলা হয়, মানুষ খুনের পর লাশ টুকরো টুকরো করে ওয়াসার লেগুনে ছুড়ে দিত মাছকে খাওয়ানোর জন্য। তার গ্রেফতারে ফতুল্লার মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে।
ফতুল্লার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক ব্যবসায়ী শাহ আলম গাজী ওরফে টেনু গাজীকে গ্রেফতার হয় ৭ ফেব্রুয়ারি। টেনুবাহিনী নানা অপকর্ম করে বেড়াত। এদের অত্যাচারে লোকজন অতিষ্ঠ ছিল। টেনু সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালাত বলে অভিযোগ রয়েছে।
৫ নম্বর ঘাট এলাকা থেকে ১২ ফেব্রুয়ারি বিআইডব্লিউটিএ এলাকায় জুয়ার আসরে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪১ জুয়াড়িকে গ্রেফতার করে। ধৃত জুয়াড়িরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলে, ‘রাজু সাংবাদিক’ নামে এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে জুয়ার আসর বসত।
১১ মার্চ ফতুল্লার লঞ্চঘাট এলাকায় চোরাই জ্বালানি তেলের আস্তানায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ চোরাই জ্বালানি (৩ হাজার ৬০ লিটার অকটেন, ৩০০ লিটার পেট্রোল, ৭ হাজার ৬০০ লিটার ডিজেল)সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে। ব্যবসার হোতা ইকবাল হোসেনও গ্রেফতার হয়।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, যোগদানের পর থেকে তিনি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, দখলদারি ও গার্মেন্টস ঝুটসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান পরিচালনা করে চলেছেন। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ কোনো সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও দখলবাজের কাছে জিম্মি থাকতে পারে না। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও তাদের জানমালের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকবে। পুলিশ যে কোনো পরিস্থিতিতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। অপরাধীরা যত শক্তিমানই হোক, ওদের কোনো রেহাই নেই। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।









Discussion about this post