নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুরের সেন্ট্রাল জেনারেল হাসপাতালে কন্যা সন্তান প্রসবের পরে দায়িত্বরত নার্সদের ভুল চিকিৎসায় জননীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সোমবার রাত ১০টার দিকে লাশ নিয়ে হাসপাতাল ঘেরাওসহ বিক্ষোভ এবং ভাংচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা।
সোমবার (১৫ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় খানপুর জোড়া ট্যাংকী সংলগ্ন সেন্ট্রাল জেনারেল হাসপাতালে যেয়ে দেখা যায় রোগী মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালে ভাংচুর করেছে নিহতের স্বজনেরা।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নিহত ওই মহিলার স্বামী শহরের ডন চেম্বার এলাকার বাসিন্দা ফল ব্যবসায়ী জিসান আহমেদ জানান, তার গর্ভবতী স্ত্রী পান্না বেগম (২৮) কে সোমবার দুপুর বারোটায় খানপুর এলাকার সেন্ট্রাল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বিকেল তিনটার দিকে খানপুর ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক মিশকাত জাহান হেনার তত্ত্বাবধানে অপারেশনের (সিজার) মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেন তিনি।
পরে পান্না বেগমের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তার শরীরে একটি ইঞ্জেকশন পুশ করে কর্তব্যরত নার্স। এতে তার অবস্থা আরো খারাপ হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে সেখানে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা দেন।
এ খবর জানার পর নিহদের স্বজনরা ও এলাকাবাসি লাশ নিয়ে এসে হাসপাতাল ঘেরাওসহ বিক্ষোভ ও কাঁচের আসবাবপত্র ভাংচুর করেন। খবর পেয়ে সদর মডেল থানার পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা আরো অভিযোগ করেন, সেন্ট্রাল হাসপাতালে ইঞ্জেকশন দেয়ার পরই ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃৃত্যুর বিষয়টি গোপন রেখে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে। তাদের কর্তব্যে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় রোগির মৃত্যু হয়েছে দাবি করে স্বজনরা এর সুষ্ঠু বিচার চান।
এদিকে, ঘটনার বিষয়ে জানতে হাসপাতালে কর্মরতদের খোঁজ করা হলেও হাসপাতালের কোন নার্স বা কর্মকর্তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে এক পর্যায়ে হাসপাতালের একটি কেবিনের দরজা লাগানো অবস্থায় বাইরে থেকে একজনকে দীর্ঘক্ষন দরজা আগলে দাড়িয়ে থাকতে দেখে গণমাধ্যমকর্মীরা ভিতরে প্রবেশ করলে সেখানে হাসপাতালের পরিচালক মনিরুজ্জামান সহ স্থানীয় এলাকার চারজন ব্যাক্তিকে মিটিং করতে দেখা যায়। সাংবাদিকরা তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তাদের মেহমান বলে পরিচয় দেন।
এসময় ওই চার ব্যাক্তি তরিগড়ি করে বের হয়ে যায়। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে হাসপাতালের পরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, নিহত ওই প্রসুতী মায়ের স্বজনদের সাথে আপোষ করার বিষয়ে তাদের সাথে কথা হচ্ছিলো।
এমন ঘটনায় সদর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মোস্তাফিজুর রহমান জানায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ কাজ করছে । এখন পর্যন্ত এ ব্যাপরে কেউ কোন অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।









Discussion about this post