নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম ক্রয় করলেন নূর হোসেনের বান্ধবী বহুল আলোচিত সমালোচিত সেই নীলা।
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকালে প্রতিবেশী হিমেল মাহফুজ জয় ও হামিদুল ইসলাম তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
নাসিক ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে (সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড-২) নির্বাচনের জন্য তিনি এ নমিনেশন ফরম সংগ্রহ করলেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় ফোন করে গণমাধ্যমে তার নমিনেশন ফরম সংগ্রহ করার খবর জানিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি এলাকাবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন।
নূর হোসেনের মৃত্যুদন্ডের সাজা হওয়ার পর দীর্ঘদিন তিনি নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন।
সিদ্ধিরগঞ্জের বার্মাস্ট্যান্ড এলাকার আওয়ামী পরিবারের সন্তান সায়েম প্রধানের সঙ্গে বিবাহ হয় জান্নাতুল ফেরদৌস নীলার। সেই সংসারে তার এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
আলোচিত সেভেন মার্ডার মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেন এলাকায় ফিরে আসলে রাজনীতির সূত্রে তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ শুরু হয়। সেই থেকে শুরু ঘনিষ্ঠতার। তারই সূত্র ধরে তৎকালীন প্রভাবশালী নূর হোসেনের সহযোগিতায় ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর নাসিকের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে (সংরক্ষিত ২নং ওয়ার্ড) নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হন তিনি। এরপর থেকেই প্রভাবশালী নূর হোসেনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ে।
এলাকাবাসী জানান, সেই সময় আলোচিত নীলাকে ২৭ লাখ টাকা দিয়ে একটি টয়োটা প্রিমিও গাড়ি ছাড়াও অনেক অর্থকড়ির মালিক করে দিয়েছিলেন নূর হোসেন। নূর হোসেনের প্রভাবে সেই সময় তার দাপটও ছিল দেখার মতো।
২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জের আইউবনগর এলাকা থেকে জুয়েল নামের এক ব্যক্তির দেহ ও পরে মাথা উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার পরদিন ২৭ অক্টোবর থানার এসআই জিন্নাহ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই সময় নূর হোসেনের প্রভাবে তাকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি মো. আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের তখন জানিয়েছিলেন- জুয়েল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল আসামি সোহাগ ও মনা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংরক্ষিত কাউন্সিলর জান্নাতুলের জড়িত থাকার কথা বলে। ২০১৪ সালের ১৮ মে নারায়ণগঞ্জের সার্কিট হাউসে সুশীল সমাজের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠানে এসে সাক্ষ্য দিয়ে ফেরার পথে পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন নীলা।
তবে ডিবি কার্যালয়ে দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে ২০১৪ সালের ২৬ মে নীলাকে গ্রেফতার করে ৩ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। একই সালের ৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান নীলা।
নূর হোসেনের সাজা হওয়ার পর তাকে প্রকাশ্যে খুবই কম দেখা যেত। ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট পূর্বের স্বামী সায়েমকে তালাক দেন নীলা। তখন থেকেই নীলা একাকি জীবনযাপন করছেন।
২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে আসেন নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট পর। যে কারণে তার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেননি রিটার্নিং অফিসার। পরবর্তীতে গত ৪ বছর নীলাকে প্রকাশ্যে খুবই কম দেখা গেছে। কিন্তু গত এক বছর আওয়ামী লীগের দলীয় অনুষ্ঠানে তাকে কখনো কখনো দেখা যেত। আসন্ন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি পূরোদমে সরব হয়ে বৃহস্পতিবার মনোনয়ন ফরম ক্রয় করেন।।









Discussion about this post