১৭ বছর পূর্বে রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় র্যাবের সাথে ক্রস ফায়ারে নিহত হন নারায়ণগঞ্জের দূর্ধর্ষ অস্ত্রবাজ নানা অপরাধের নিয়ন্ত্রণ কর্তা ৩৩ (তেত্রিশ) মামলার আসামী মমিন উল্লাহ ডেবিড। যাকে তৎকালীন সময়ের মন্ত্রীরাও হিসেব কষে কথা বলতেন । বিএনপির সেই নেতা মমিন উল্লাহ ডেবিডের মৃত্যুবার্ষিকী ছিলো ২৪ নভেম্বর ।
মৃত্যুর পূর্বে নারায়ণগঞ্জের গণপূর্ত, সড়ক ও জনপথ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, হাসপাতাল, ফ্যসিলিটিজ , জেলা পরিষদ, পৌরসভা, এলজিইডিসহ স্থানীয় পরিবহণ সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করে মমিন উল্লাহ ডেবিড কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান । ধরা কে করতেন সরাজ্ঞান। সেই সময় ডেবিড ছাড়াও তার ভাই তপন ও কারাগারে বন্দি দন্ডপ্রাপ্ত আসামী জুয়েলের অত্যাচারে অতিষ্ট ছিলো পুরো নারায়ণগঞ্জবাসী। তৎকালীন সময়ে রূপগঞ্জের অজোপাড়াগাঁ কাঞ্চনের রানীপুরা এলাকার সড়কের ঠিকাদারী কাজ করতে দেখা গেছে ডেবিডের সন্ত্রাসী বাহিনীর চেলা চামুন্ডাদের । ডেবিডের অপর ভাই তপন পরিবহন সেক্টরকে পুঁজি করে বাস মালিকদের প্রকাশ্যে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা এখনো পরিবহণ সেক্টরের সকলের মুখে প্রকাশ পাচ্ছে । আর জুয়েলও ছিলো দন্ডমূর্তের কর্তা । জীবদ্দশায় ডেবিডের বোন যাকে পুরো নগরবাসী দিদি বলে ডাকতেন । সেই দিদি কে নিয়ে আলোচনা ছিলো সকলের মুখে। জুয়েলের স্ত্রী ঝুমুরকে নিয়েও রয়েছে নানা মুখরোচক আলোচনা।
একই সাথে ডেবিডের স্ত্রী ও একমাত্র কন্যা অনন্যাকে সাথে নিয়ে বিশাল টাকায় শহরের এক যুবককে বিয়ে করায় সমালোচনাও রয়েছে সমানতালে। সেই সময় ডেবিডের বিশাল অর্থ ও অস্ত্র ছিলো জুয়েলের স্ত্রী ও ডেবিডের স্ত্রীর কাছে । চাষাড়ার বালুর মাঠের এক চা বিক্রেতা এই বিশাল অবৈধ অস্ত্র ও অর্থ ভাগবাটোয়ারা করে সকলেই সটকে পরে ডেবিডের বাড়ি থেকে। ডেবিড ক্রসফায়ারের সময় যে গাড়ীটি ব্যবহৃত হয়েছিলো সেই গাড়টি শহরের টানবাজার এলাকার দিদির বাড়ির সামনে পরে থাকতে দেখা যায় বছরের পর বছর যাবৎ । এই গাড়ি নিয়েও রয়েছে নানা মুখরোচক গল্প ।
বিএনপির প্রয়াত নেতা ক্রসফায়ারে নিহত মমিন উল্লাহ ডেবিডের কিরণ, মনা মারা গেলেও অপর ভাই রিপন পাগল হয়ে নিরুদ্দেশ রযেছে বলে চাউর রয়েছে । তরে অপর এক ছোট ভাই রবিন স্বাভাবিক জীবন যাপন করেন বলে পুরো শহরে সুণাম রযেছে ।

এতো কিছুর পর ডেবিডের জন্য ১৭ তম মৃত্যুবাষির্কীতে কেউ মনে রাখেন নাই এই ডেবিড কে । যার কারণে শহরে অনেকেই আঙ্গল ফুলে কলাগাছ তারাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ।
ডেবিডের কারণে ভাই তপন শহরে ব্যাপক পরিচিত থাকলেও সেই তপন কেও বুধবার (২৪ নভেম্বর) সকালে শহরের বোস কেবিনে বসে মনের সুখে নাস্তা করতেও দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই ।
এমন ঘটনায় বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, ডেবিডকে কেউ মনে রাখে নাই ঠিক আছে কিন্তু তার অবৈধ অস্ত্র ও বিশাল অর্থ এখন কার কার হেফাজতে রয়েছে ?
সেই ডেবিডকে ঘিরে যত তথ্য !
ভালো ক্রিকেট খেলতেন নারায়ণগঞ্জের মমিনউল্লাহ ডেভিড। ছিলেন শহর যুবদল নেতা। রাজনীতির পথে হাঁটতে গিয়ে ক্রিকেট ব্যাট ছেড়ে হাতে তুলে নেন অবৈধ অস্ত্র। পুলিশও তার কাছ থেকে রেহাই পায়নি। পুলিশকে মারধর ও গুলি ছিনিয়ে নেওয়ারও ঘটনা ঘটান এই ডেভিড। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় তিনি চলে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। কোনোভাবেই তার লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছিল না। অবশেষে দল ক্ষমতায় থাকতেই র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত হন ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের সেই দানবে পরিণত হওয়া মোমিনউল্লাহ ডেভিড। পুলিশের হিসাবে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় খুন, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, হামলাসহ ডেভিডের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা ছিল।
২০০৪ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে ঢাকার মালিবাগ কমিউনিটি সেন্টারে সামনে ডেভিড গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন তথা র্যাবের দাবি ছিল, তাদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে ক্রসফায়ারে পড়ে ডেভিডের মৃত্যু ঘটে।
ডেভিডের পরিবার
ডেভিডের বাবার নাম বশিরউল্লাহ। সে এক সময়ে আদমজীতে চাকরি করতো। তার ৭ ছেলে ও ২ মেয়ে। তার মধ্যে ৩ জন মারা গেছে। তারা হলো কিরণ, মমিনউল্লাহ ডেভিড ও মনা। বেঁচে রয়েছে মাহবুব উল্লাহ তপন, রিপন, শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, রোমান।
অপর ভাই শাহাদাতউল্লা জুয়েল বর্তমানে কারাবন্দী। ২০০৭ সালের ২৭ নভেম্বর শহরের মিশনপাড়ার বাসভবন থেকে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। জুয়েলের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কার্যালয়ের সামনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলার মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত।
এছাড়া ২০০১ সালের ১৬ জুন শহরের চাষাঢ়ায় আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার মামলায় তাকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দেওয়া হয়েছে।
মমিনউল্লাহ থেকে ডেভিড
ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ ক্রিকেট একাডেমিতে। ভালো ব্যাট করতেন। ফলো করতেন অস্ট্রেলিয়ান জনপ্রিয় ক্রিকেটার ডেভিড বুনকে। ডেভিড বুনের ব্যাটিং স্টাইল রপ্ত করেছিলেন ভালোভাবেই। ক্রিকেট একাডেমির কোচ তাকে ডেভিড বলেই ডাকতেন। সেই থেকে তার নাম হয় মমিনউল্লাহ ডেভিড। পরিচিতি পান ডেভিড নামে। এই ডেভিড ক্রিকেট খেলতে খেলতে এক সময় জড়িয়ে পড়েন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে।
ক্রিকেট ব্যাট চালাতে তিনি যেমন ছিলেন পারদর্শী, অস্ত্রও চালাতেন ঠিক তেমনি। এক সময় অস্ত্র আর ব্যাট দুই-ই চালাতে থাকেন। এক সময়ে তিনি হয়ে ওঠেন নারায়ণগঞ্জের অপরাধ জগতের ডন।
১৯৯০ সালে ডেভিড সন্ত্রাসের পথে হাঁটতে থাকলেও সেই সময়ে তিনি খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। সেই সময়ে বিএনপির দুইডজন সন্ত্রাসী বেপরোয়াভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে ছিল। পরে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ওই অপরাধীরা গা ঢাকা দিলেও আড়ালে যাননি ডেভিড। এলাকায় থেকেই গা ঢাকা দেওয়া অপরাধীদের আস্তানাগুলো দখলে নিতে শুরু করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯১ হতে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া ও মিশনপাড়া এলাকার মধ্যে প্রায় সময়েই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটতো। চাষাঢ়ায় এলাকায় ছিল আওয়ামী লীগের লোকজনদের আধিপত্য। আর মিশনপাড়া এলাকার বাসিন্দা ডেভিড স্থানীয় বিএনপি ক্যাডারদের নেতৃত্ব দিত। তখন থেকেই আলোচনায় আসে ডেভিড। সে সময়ে ডেভিড অনেক অত্যাধুনিক অস্ত্র ব্যবহার করলেও তার কোনটিই এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। ১৯৯৬ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময়ে অনেক বন্দুকযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়ে ডেভিড স্থানীয় বিএনপি নেতাদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়। ওই বছরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে পালিয়ে যায় ডেভিড। এ সময়ে সে ঢাকাতে ছিনতাইয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তারও হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ডেভিড আবারো এলাকাতে ফিরে আসে। তখন তাকে শহরের মিশনপাড়া এলাকায় দেওয়া হয় সংবর্ধনা। এতে এলাকার বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে। অভিযোগ রয়েছে, সে সময়ে সরকারের এক প্রতিমন্ত্রী ও নদী খেকো খ্যাত এক এমপি ডেভিডকে ব্যবহার করতো।
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ হিসেবে উত্থান ঘটে মমিনউল্লাহ ডেভিডের। বাঘা বাঘা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও অপরাধীরাও তার কাছে তখন নস্যি। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ডেভিড দ্রুত এগিয়ে যান। তখন তিনি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। খুন, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জে অপরাধ সা¤্রাজ্যের মুকুটহীন স¤্রাটে পরিণত হন। তার কাছে অস্ত্র যেন একটি খেলনা দ্রব্য। প্রকাশ্যেই অস্ত্র নিয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন শহরের এক মাথা আরেক মাথা। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সরকারি অফিস আদালতও তার কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছিল। কোনো কিছুতেই তার এই অগ্রযাত্রাকে রোধ করা যাচ্ছিল না। অত্যাধুনিক অস্ত্রের মজুদ গড়ে তোলেন তিনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে।
মূলত এরশাদ আমলে ১৯৮৮ সালে জোড়া খুনের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন ডেভিড। চাষাঢ়ায় কালাম ও কামাল নামে দুই যুবককে হত্যা করে ডেভিড। বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর কিছু করতে না পারলেও ২০০১ সালের পর তৎকালীন ছাত্রদলের এই নেতা দানবে পরিণত হয়। খুন, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জের সব ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। আওয়ামী লীগের অসহযোগ আন্দোলনে সশস্ত্র হামলা চালায় ডেভিড। এতে পা-া নামে এক যুবক নিহত হন। এ ছাড়া মিশনপাড়া এবং চাষাঢ়ায় গুলি করে হত্যা করে মনির নামে এক যুবককে।
তখনকার এমপিদের দ্বারা ব্যবহৃত
জানা গেছে, বিএনপি ক্ষমতায় থাকা সময়ে ২০০৪ সালের ২৪ নভেম্বর ডেভিডের মৃত্যুর ঘটনার পেছনে দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যর্থতা আর ‘ব্যবহৃত’ রাজনীতিকেই দায়ী করা হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে গত দুই দশকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রসফায়ারে অন্তত দেড়ডজন রাজনীতিক। কিন্তু তাদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল সাবেক যুবদল নেতা মমিনউল্লাহ ডেভিডের ক্রসফায়ারটি। এক সময়ের আলোচিত-সমালোচিত ও আলোচিত ক্যাডার মমিনউল্লাহ ডেভিডকে অনেকেই ভুলে গেছে। কিন্তু এ ডেভিডকে দিয়েই একসময়ে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করতো বিএনপি – শহরে এমন খবর চাউর রয়েছে অনেক আগে থেকেই। বিশেষ করে ১৯৯৬ সালে অসহযোগ আন্দোলনের সময়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের সঙ্গে সংঘর্ষের বেশীরভাগ সময়ে বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন ডেভিড। সে ছিল অস্ত্র চালানোয় দারুণ পারদর্শী। একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে তার খ্যাতি ছিল সর্বত্র।
২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর এ ডেভিডকে নিয়ে সংসদে কঠোর সমালোচনা করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের এমপিরা। বহুল সমালোচিত ডেভিডকে কব্জা করতে সে সময়ের নারায়ণগঞ্জের বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে ছিল নীরব যুদ্ধ। তবে এও অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরোধের কারণেই ডেভিডকে প্রাণ হারাতে হয়েছিল।
২০০১ হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনের এমপি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৫ এ আবুল কালাম, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে গিয়াসউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে রেজাউল করিম, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে আতাউর রহমান খান আঙ্গুর ও নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে আবদুল মতিন চৌধুরী।
তাদের মধ্যে রেজাউল করিম ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই সময়ে রেজাউল করিম ও গিয়াসউদ্দিনই মূলত ডেভিডকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেছিল এমন অভিযোগ ছিল। ডেভিডের জানাযাতে গিয়াসউদ্দিন ও আবুল কালাম উপস্থিত থাকলেও রেজাউল করিমকে দেখা যায়নি।
ঘটনার দিন
২৪ নভেম্বর ড্রেজারের একটি টেন্ডারের সিডিউল জমা নেওয়া হয়। ডেভিডের অনুগতরা সিডিউল জমা দেয় দুপুর ১২টায়। এর পর সে মোটা অঙ্কের টাকা প্রদানের জন্য এক এমপির কাছে যায়। সেখানে টাকা দিয়ে রাতে ঢাকায় যাওয়ার সময়ে মালিবাগ এলাকায় র্যাবের কথিত ক্রসফায়ারে ডেভিডের মৃত্যু ঘটে। তার মৃত্যুর পর শহরের মিশনপাড়া এলাকায় জানাযা অনুষ্ঠিত হলেও তাতে জনরোষের ভয়ে উপস্থিত হতে পারেনি ওই দুইজন এমপি।









Discussion about this post