রূপগঞ্জে মাদক ব্যবসার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাদক ব্যবসায়ীদের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের বাড়িঘরে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। সংঘর্ষে রূপগঞ্জ থানার ৭ পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ৭২ রাউন্ড রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ ছুড়েন। এ ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। যে কোন সময় আবারো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
গত রোববার রাতে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া বস্তিতে ঘটে এ ঘটনা। এদিকে, আজ সোমবার সকালে পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার এসআই পরেশ বাগচি বাদী হয়ে ২১ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্র থেকে জানাযায়, চনপাড়া বস্তিতে জয়নাল সরকারি দলের পৃষ্ঠপোষকতায় মাদকের সাম্রাজ্য গড়ে তুলে। এদিকে পূর্ণবাসন কেন্দ্রের যুবলীগ কর্মী শাহিন তার ওয়ার্ডে জয়নালকে মাদক ব্যবসায় বাধা দেয়। এ নিয়ে কিছুদিন ধরে দ্বন্ধ চলছিল। গত রোববার সন্ধ্যার পর এ নিয়ে জয়নাল আবেদীনসহ তার লোকজনের সঙ্গে শাহিনের লোকজনের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে রাত ৯টার দিকে উভয় গ্রুপের লোকজন অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ সময় পুরো চনপাড়া বস্তিততে বসবাসরত সাধারন মানুষ ভয়ে ও আতঙ্কে ছুটাছুটি করতে শুরু করে। খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করলে উভয় গ্রপের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এসময় রূপগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির মোল্লা, উপ-পরিদর্শক পরেশ বাগচি, সহকারী উপ-পরিদর্শক বায়েজিদ, কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম, নুরুল আমিন, আবু বক্করসসহ পুলিশসদস্য আহত হয়।
এছাড়া সংঘর্ষে দু‘পক্ষের রায়হান, মোক্তার হোসেন, জিহাদ, সজিব, রিপন, রাব্বি, সাকিব, বাবুসহ কমপক্ষে ২৩ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ৭২ রাউন্ড ফাকা গুলি করে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ চনপাড়া বস্তির ৮নংওয়ার্ডের এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মামুন ও ৪ নং ওয়ার্ডের এলাকার মিন্টুর ছেলে নাঈমকে গ্রেফতার করেছে।
নাম না প্রকাশ শর্তে এলাকাবাসী অনকেইে অভিযোগ করে জানায়, জয়নালের মাদক ব্যবসাসহ নানা অপর্কমে এলাবাসী অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। সে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের সেল্টারে থেকে এসব অপরাধমুলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস টুকুও পায়না। প্রতিবাদ করলে হত্যার শিকারসহ নানা ধরনের মামলা-হামলার শিকার হতে হয়। তার হাত থেকে আইনশৃংখলা বাহিণীর সদস্যরাও রেহায় পায়না। আইনশৃংখলা বাহিনীর উপর বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে জয়নাল ও তার লোকজন।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এসময় রূপগঞ্জ থানা পুলিশের এক পরিদর্শকসহ ৭ সদস্য আহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ৭২ রাউন্ড ফাকা গুলি করে। এঘটনায় নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে। উভয় গ্রæপের অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।









Discussion about this post