মাসশেষে সরকারের বিশাল রাজস্বে পরিচালিত সরকারি প্রতিষ্ঠান পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্য্য তালিকায় নিজেদের কাজ করার ফিরিস্তি তুলে ধরতেই এমন মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন একজন দালাল । যিনি প্রতি মাসে একবার করে নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি ডাইং কারখানা, ইট ভাটা, বিভিন্ন ফ্যাক্টরীতে ঘুরে ঘুরে মোটা অংকের মাসোহারা গ্রহণ করেন । রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের একটি কারখানা থেকে মাসোয়ারা গ্রহণকালে উল্লেখিত মন্তব্য করেন একজন কারখানার মালিকের কাছে ।
ওই দালাল দম্ভ করে আরো জানায়, এই দেশে সব সম্ভব, এই মামলায় কিচ্ছুই হইবো না । পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলায় এই পর্যন্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মতো কোন শাস্তি কি কারো হইছে ! পরিবেশের এই মামলা ও অভিযান সবই, “আইওয়াস ! মাস শেষে শুধু মাসোহারা আদায় করে পরিবেশ অধিদপ্তর, আর আইওয়াস হচ্ছে অভিযান । কি পরিমাণ চান্দাবাজি এই সংস্থাটি করে তার হিসাব ঠিক মতো নিলেই জেল খাটতে খাটতে জীবন যাইবো এই অপরাধী চক্রের । গত মাসে একই কায়দায় নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান চালায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা । এমন অভিযানের পূর্বেই জানিয়ে দেয়া হয় রুটিন মাফিক আমাদের কাজ দেখাতে হইবো । তবে বেশী জরিমানা হইবো না নিশ্চিত থাকেন। এভাবেই বছরের পর বছর চলছে অভিযান নামের নাটক ।”
তরল বর্জ্য নিক্ষেপ করে নদী দূষণের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের ৪টি ডাইং কারখানার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়।
রোববার ২৮ নভেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শেখ মুজাহীদ বাদী হয়ে এ মামলাগুলি দায়ের করেন।
অভিযুক্ত কারখানাগুলো হচ্ছে, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় অবস্থিত সায়মা নীট ফ্যাশন, সীমা নীটওয়্যার এন্ড ডাইং ও জাগরণ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড এবং ফতুল্লার কুতুবপুরের ওয়াবদারপুল এলাকায় অবস্থিত রাইডার থ্রেড এন্ড এক্সেসরিজ ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড।
পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান,
২৮ নভেম্বর রোববার পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয় কর্তৃক নদী দূষণকারী ৪টি ডাইং কারখানার বিরুদ্ধে স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট নারায়ণগঞ্জে মামলা দায়ের করা হয়। কারখানাগুলি পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ ব্যতীত স্থাপন করা হয়েছে এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে তরল বর্জ্য পরিশোধনাগার বা ইটিপি নির্মাণ ব্যতিরেকে পরিচালনা করা হচ্ছে।
সীমা নীটওয়্যার এন্ড ডাইং, জাগরণ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও সায়মা নীট ফ্যাশন কারখানা তিনটি ২০১২ সাল হতে এবং রাইডার থ্রেড এন্ড এক্সেসরিজ ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড ২০১৮ সাল হতে পরিবেশগত ছাড়পত্র ও ইটিপি স্থাপন ব্যতীত পরিচালিত হচ্ছে। গত ২৪ নভেম্বর কারখানাগুলি সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনকালে কারখানা হতে সৃষ্ট অপরিশোধিত তরল বর্জ্যের নমুনা সংগ্রহ করে সীলগালা করে পরীক্ষার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা গবেষণাগারে প্রেরণ করা হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫(সংশোধিত-২০১০) এর ৪(২), ৯(১ ও ২) ও ১২(১) ধারা লংঘনের অপরাধে এ মামলা দায়ের করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জনাব শেখ মুজাহীদ বাদী হয়ে এ মামলাগুলি দায়ের করেন। আসামীদের গ্রেফতারসহ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়। নদী দূূষণ বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর, নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয় হতে নিয়মিতভাবে মামলা দায়ের প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।








Discussion about this post