১০ম বাজেট উপস্থাপনাকালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী তিন মেয়াদে ৩৪ উন্নয়ন পরিকল্পনার তালিকা ঘোষণা করেছেন।
১৩ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কস্থ আলী আহাম্মদ চুনকা পাঠাগার নগর মিলনায়তনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র আইভী।

ওই বাজেটে ২০ বছর সময় সীমাকে বিবেচনা করে একটি পরিকল্পিত, পরিচ্ছন্ন, সবুজ, পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যসম্মত এবং দারিদ্রমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে ৩টি মেয়াদে নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ওই তিনটি মেয়াদের মধ্যে ৫ বছর মেয়াদে ২০টি উন্নয়ন পরিকল্পনা, ১০ বছর মেয়াদে ৬টি উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং ২০ বছর মেয়াদে ৮টি উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে।
৫ বছর মেয়াদী ২০টি উন্নয়ন পরিকল্পনায় যা রয়েছে : ১. শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের সংযোগ স্থাপনের জন্য উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে শহরের ৫ নং ঘাট থেকে ইস্পাহানী ঘাট বরাবর শীতলক্ষ্য নদীর উপর সেতু নির্মাণ। ২. সবুজ ও পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলার জন্য সমন্বিত ড্রেনেজ সিস্টেম, জলাধার সংরক্ষণ এবং সংস্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ। ৩. বিদ্যমান ছোট, বড় ও মাঝারি সড়কসমূহ সম্প্রসারণ, পুন:নির্মাণ এবং প্রয়োজনে বর্ধিত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ। ৪. নারায়ণগঞ্জ নগরীর রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল ও লঞ্চ টার্মিনালের সমন্বয়ে মাল্টিমেডাল হাব নির্মাণ। ৫. স্বাস্থ্যসম্মত নগরী গড়ে তোলার জন্য শতভাগ স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। ৬. সুপেয় পানি পানের জন্য পানি সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপন ৭. সিটি করপোরেশনের নাগরিক সুবিধা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে সব কাজ অটোমেশন করা। ৮. দারিদ্র্য বিমোচনে ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচির পরিধি সম্প্রসারণ করা। ৯. যানজট নিরসনে নতুন বাস টার্মিনাল, ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণসহ সিটি সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয়া। ১০. এনসিসির আয় বৃদ্ধির জন্য নিজস্ব ভূমিতে মার্কেট ও ফ্ল্যাট নির্মাণ এবং কাঁচাবাজারসমূহের উন্নয়ন করা।
১১. কবরস্থান ও শ্মশানের উন্নয়ন করা। ১২. কালচারাল এবং হেরিটেজ পার্কসহ বিনোদনের জন্য শিশু পার্ক নির্মাণ করা। ১৩. স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক, নগর হাসপাতাল এবং অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা। ১৪. প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানসহ মেডিকেল কলেজ, টেকনিক্যাল কলেজ এবং আর্ট কলেজ প্রতিষ্ঠা করা। ১৫. ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া ১৬. নারীর ক্ষমতায়নের জন্য শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেওয়া ১৭. সিটি কর্পোরেশনের সকল স্তরে সুশাসন নিশ্চিত করা। ১৮. জনসেবা নিশ্চিত করার জন্য তিনটি অঞ্চলে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা। ১৯. সিটি কর্পোরেশনের প্রতিটি শাখা কম্পিউটারাইজড করা এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে কম্পিউটার বিষয়ে সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ প্রদান করা। ২০. সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ মনিটরিংসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যমান সিসি টিভি ক্যামেরার পরিধি বৃদ্ধি করা।
১০ বছর মেয়াদী ৬টি উন্নয়ন পরিকল্পনায় যা রয়েছে : ১.আধুনিক সুয়ারেজ সিস্টেম স্থাপন করে ড্রেনেজ সিস্টেমের আরও উন্নতি সাধন করা যাতে কোন প্রকার দূষিত পানি নদীতে পড়তে না পারে। ২. থ্রি-আর (হ্রাসকরণ, পুর্নব্যবহার, পুন:চক্রায়ণ) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত তরে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকে কার্বনমুক্ত, পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা। ৩. শীতলক্ষ্যা নদীর দুই পাড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-মুন্সিগঞ্জ মহাসড়কের সাথে সংযোগ স্থাপনকারী সার্কুলার রোড নির্মাণ। ৪. নারায়ণগঞ্জকে মেট্রোরেলের সঙ্গে সংযুক্ত করে ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধনপূর্বক যানজট মুক্ত নগরী গড়ে তোলা। ৫. শীতলক্ষ্যা নদীর উপর রোপওয়ে এবং ওয়াটার সার্কুলার সার্ভিস চালু করা। ৬. সিটি করপোরেশন এলাকা সম্প্রসারণ করা।
২০ বছর মেয়াদী ৮টি উন্নয়ন পরিকল্পনায় যা রয়েছে : ১. দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস করার নিমিত্তে পানীয় জল হিসেবে ব্যবহারের জন্য ভুগর্ভস্থ পানি ব্যবহার পরিবার করে সার্ফেস ওয়াটার ব্যবহারের জন্য আধুনিক পানি শোধণাগার নির্মাণ করা। ২. গৃহস্থালী এবং পয়:নিস্কাশনের বর্জ্যযুক্ত পানি শতভাগ পরিশোধ করে নদীতে নিস্কাশনের ব্যবস্তা গ্রহণ করা। ৩. ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য সমন্বিত ইটিপি স্থাপন করা এবং এজন্য সমন্বিত পরিকল্পনা প্রনয়ণ করা। ৪. পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। ৫. শতভাগ শিল্প এবং গৃহস্থালি বর্জ্য পরিশোধনের জন্য সমন্বিত ইটিপি এবং পরিশোধনাগার স্থাপন করা। ৬. সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্যে পানি শোধনাগার নির্মাণ করা। ৭. শীতলক্ষ্যা নদীর পানি দূষণমুক্ত রাখা নিশ্চিত করা। ৮. সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা ।









Discussion about this post