নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধভাবে বছরের পর বছর যাবৎ চোরাই জ্বালানী তেলের কারবার পরিচালিত হলেও সরকারের এতোগুলি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কার্যকরীভাবে এমন অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে স্থায়ী ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় নাই । সব সময়ই লোক দেখানো অভিযান পরিচালিত হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল সংস্থার অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই চলছে এমন রমরমা চোরাই তেলের কারবার ।
এবার আবারো লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল ডিপো কর্তৃপক্ষ জেলায় দায়িত্বরত সকল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বরাবর পত্র দিয়েছে যাতে উচ্ছেদ করা হয় ডিপো প্রবেশের দুই পাশে তেলচোর চক্রের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের সকল দপ্তরে এমন পত্র প্রেরণের ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা ঝড় উঠেছে সিদ্ধিরগঞ্জজুড়ে ।
অনেকেই বলেছেন, খোদ গোদনাইলের মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপো কর্তৃপক্ষের মূল হোতারাই চোরাই তেলের কারবারের সাথে যুক্ত । ডিপোঘেষা শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে আশরাফের চোরাই তেলের বিশাল গোডাউনে থাকে কি করে ? ছোট্ট এই উদাহরণ ই প্রমাণ করে মূলতঃ চোরাই তেলের কারবার পরিচালনা করছে কারা ? যা কোনভাবেই বন্ধ করা যাবে না বলেও প্রশাসনের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, এই তেলচুরির কারবার অটুট রাখতে পুলিশ কে খুন করে আবার ধামাচাপাও দিয়েছে । আর এই চিঠি তো নশ্বি !
খোজ নিয়ে জানা যায়, বিমানের জ্বালানী সহ সকল প্রকার তেল সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষে ডিএনডির প্রধান সড়ক হতে পদ্মা ওয়েল কোম্পানী লিমিটেড এর গোদনাইল ডিপোর মেইন গেইট পর্যন্ত সংযোগ সড়কের দুই পাশের অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা তেলের দোকানগুলো উচ্ছেদ এবং সড়ক যানজট মুক্ত রাখার জন্য গোদনাইল ডিপোর ব্যবস্থাপক নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
২৩ মার্চ উচ্ছেদের অভিযোগ পত্রটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার, র্যাব-১১ অধিনায়ক, এনএসআই এর উপ-পরিচালক ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতার প্রতি অনুলিপি প্রদান করেছে।
লিখিত আবেদনে জানা যায়, পদ্মা ওয়েল কোম্পানী লিমিটেড এর গোদনাইল ডিপোটি রাষ্ট্রীয় কে.পি.আই এর অন্তর্ভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। গোদনাইল ডিপোতে প্রতিদিন প্রায় ৩৭০-৩৮০টি ট্যাংকলরী আসা-যাওয়া করে। উক্ত ট্যাংকলরী অবাধে যাতায়াত করার জন্য মূল রাস্তা হবে ডিপো পর্যন্ত কোম্পানীর নিজস্ব রাস্তা রয়েছে কিন্তু স্থানীয় কিছু লোকের কারণে ডিপোর মেইন গেইট হতে প্রধান সড়ক (ডিএনডি) রাস্তার দুই পাশে অনেকগুলো অবৈধ তেলের দোকান রয়েছে। যাদের কারণে ট্যাংকলরী চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। এছাড়াও রাস্তার দুইপাশে কিছু ট্যাংকলরীর মালিক জোরপূর্বক রাস্তার ওপর গাড়ী পার্কিং এবং মেরামতের কাজ করে।
প্রতিদিন সকালে বিমান বন্দরের জন্য বোঝাইকৃত জেট এ-১ বহনকারী ট্যাংকলরী সমূহ চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়। আরও জানা যায়, এই সড়কে প্রায় অর্ধশতাধিক অবৈধ তেলের দোকান গড়ে ওঠায় আশেপাশের লোকজনসহ ডিপোটিও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় যে কোন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটারও আশংকা রয়েছে।
সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী মেঘনা ডিপো সংলগ্ন ভয়াবহ অগ্নিকান্ডই তা প্রমাণ করে। এছাড়াও পরিবেশেরও ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। গোদনাইল ডিপোর ব্যবস্থাপক (পরিচালন) মোঃ শাহজাহান কবির চৌধুরীর ২২ মার্চ স্বাক্ষরিত অবৈধ তেলের দোকান উচ্ছেদের আবেদনটি ২৩ মার্চ নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে পৌছে। পরবর্তীতে আবেদনটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ২৫ মার্চ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পৌছে।
উল্লেখিত উচ্ছেদের আবেদনটি বর্তমানে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি)র কাছে রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে স্থানীয় এলাকাবাসী পরিবেশ দূষণ রোধে জেলা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।









Discussion about this post