নারায়ণগঞ্জ শহরের রেওেয়ের জমির উপর নির্মিত ডিআইটি মসজিদের দায়িত্ব নেয়ার পর তেকে একের পর এক বিতর্ক তুলেনগরীতে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন জেলা হেফাজতের সাবেক আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল । সারা বিম্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের কারণে টালমাটাল অবস্থা এমতাবস্থায়ও বারবার তিনি ( জেলা হেফাজতের সাবেক আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল ) বিরূপ ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন । সেই বিতর্কিত হেফাজত নেতা মাওলানা আব্দুল আউয়াল টিকা বিরোধী চরম বিষোদগার করে এবার তিনিই টিকা গ্রহণ করেছেন
টিকা নেওয়ার বিরোধিতাকারী বিতর্কিত এই হেফাজত নেতা একাধিক জুমার খুতবায় করোনার টিকা বিরোধী বক্তব্য দেওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলা হেফাজতের সাবেক আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল টিকা নিয়েছেন।
সোমবার (০৯ আগস্ট) সকালে টিকা নেওয়ার পর ফেসবুকে পোস্ট দেন তিনি। টিকা বিরোধী বক্তব্য দেওয়ার কারণে তার গ্রেফতার দাবি করে আসছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মাওলানা আব্দুল আউয়াল ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন, সোমবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে টিকা নেন।
টিকার বিরোধিতা করে টিকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, সম্প্রতি টিকা গ্রহণে সতর্ক হওয়ার বিষয়ে জুমার আলোচনায় বক্তব্য দিয়েছি। কিন্তু আমার বক্তব্য সঠিকভাবে অনুধাবন না করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কয়েকজন ব্যক্তি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন। আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, একাধিক দিন জুমার নামাজের আগে আলোচনায় মাওলানা আব্দুল আউয়াল টিকার বিরোধিতা করে বক্তব্য রেখেছেন। তার বক্তব্য এখনও ফেসবুক ও ইউটিউবে আছে। তিনি টিকার বিরোধিতা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। এখন নিজেই টিকা নিয়েছেন। এতে বোঝা যায় নিজের বক্তব্যের ওপর আস্থা নেই। তার নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জে হেফাজতে ইসলাম নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। এখনও তিনি সরকারের বিরোধিতা করে যাচ্ছেন। আমি তার গ্রেফতার দাবি করছি।
উল্লেখ্য, ৩০ জুলাই শুক্রবার ডিআইটি মসজিদে জুমআর নামাজের খুতবার বয়ানে আব্দুল আউয়াল বলেছিলেন, ‘ইদুরের সুরতে যখন গজব আসে এটার মোকাবেলার জন্য বিড়াল দিয়ে কাজ হবে না। আল্লাহ সবকিছু করতে পারে। আল্লাহর গজব কোন আকারে ঢুকবে সেটা বুঝা যাবে না। এখন সারাবিশ্বের মধ্যে আল্লাহ করোনা নামে একটা গজব ছড়িয়ে দিয়েছে। সারাবিশ্ব আল্লাহর নেয়ামত পেয়ে আল্লাহর নাফরমানি করতে করতে চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘টিকা দিবেন দেন কিন্তু এটা দেয়ার পর বিশ্বাস রাখতে হবে। আল্লাহপাক না চাইলে বিড়ালের মতো কিছু দিয়ে মোকাবেলা করা যাবে না। খোদার কসম ! যদি এটা আপনার আমার তকদিরে লেখা থাকে তাহলে এটা থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না। ব্যবস্থাপনা করতেছেন করেন কাউকেই বাঁচাতে পারবেন না যদি তার আয়াত শেষ হয়ে যায়। মৃত্যু কোনোদিন কোনো মানুষকে পিছু ছাড়ে না। যখন হায়াত শেষ এক সেকেন্ড সময় পাওয়া যাবে না। করোনার বাবার ক্ষমতা নেই। মাঝে মাঝে তিন টিকা দেয়ার পরেও করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। তার মানে আল্লাহ তার এভাবে মৃত্যু লিখে রেখেছেন। টিকা একটা কেন একশ ডোজ নিলেও মারা যাবেন। তাকে বাঁচানো যাবে না। ডাক্তাররা স্বাস্থ্য সম্পর্কে ভাল বুঝার পরও করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।’
এর আগে ১১ জুন শুক্রবার ডিআইটি রেলওয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব আব্দুল আউয়াল জুমআর নামাজের খুতবার বয়ানের একটি অংশে বলেছেন, ‘সমস্ত স্কুল কলেজ ভার্সিটির ছেলেরা চরিত্রহারা হয়ে যাচ্ছে। সময় কাটে না। মেয়েদের সাথে বসে টিকটক অমক তমুক কতকিছু পত্রিকায় দেখা যায়। এগুলো দ্বারা পুরো সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সমাজ ধ্বংস করে আপনি কি দেশ বাঁচাবেন। সবকিছু চলবে কি এক অযোক্তিক কথা প্রতিষ্ঠানে গেলে সব করোনা ভাইরাস হয়ে যাবে। আল্লাহর হাতে ছেড়ে দেন। সন্তানের মৃত্যু যদি লেখা থাকে ঘরে বসে থাকলেও মারা যাবে। আর মৃত্যু যদি লেখা না থাকে আরও বেশি করোনা হলেও সে মরবে না।’
মাওলানা আব্দুল আউয়ালের এসকল বক্তব্যকে কেন্দ্র করে গত ১ আগষ্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বাষির্কী ও জাতীয় শোক দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় জানতে চেয়েছিলেন কেউ তাকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে না।









Discussion about this post