একদিকে হাজি রিপন, শফিউদ্দিন প্রধান ও হারুন বাহিনী অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত ভূমিদস্যু নানা অপরাধের হোতা জয়নাল আবেদীন ওরফে আল জয়নাল বাহিনীর বিরোধপূর্ণ ভূমি সংক্রান্ত দাঙ্গা হাঙ্গামায় এবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান প্রীতম । দীর্ঘদিন যাবৎ চলমান ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডস্থ জেলা কারাগারের বিপরীতে মূল্যবান জমি নিয়ে মামলা চলমান থাকার পর হাজি রিপন, শফিউদ্দিন প্রধান ও হারুন বাহিনী জমির দখল নিতে গেলে এমন হাঙ্গামার কবলে পরে ফটো সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান প্রীতম ।
নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান প্রীতমকে পিটিয়ে ও রক্তাত্ব জখম করেছে একদল সন্ত্রাসী। এই হামলার নেতৃত্বদানকারী বহু মামলার আসামী বিতর্কিত হাজী রিপন, কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান ও স্বপ্ননীর হাউজিং এর হারুন অর রশিদকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ নং ২৬০৯, ২৩/০৩/২০২১।
মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় লিংক রোডস্থ জেলখানার বিপরীতে দোকানপাট ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের ছবি তুলতে গেলে এ হামলা চালানো হয় বলে জানায় স্থানীয়রা। গুরুতর আহত মাহমুদুর রহমান প্রীতম দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকার স্টাফ ফটো সাংবাদিক।
ফতুল্লার লিংক রোডস্থ জেলখানার বিপরীতে পাশের একটি জায়গা দখলদারিত্ব নিয়ে ভূমিদস্যু আল জয়নাল ও পরিবহন সেক্টরের হাজী রিপন, কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান ও স্বপ্ননীর হাউজিং এর হারুন অর রশীদ বিরোধ চলে আসছে। তার জেরে আজ দুপক্ষের বিরোধের ছবি তুলতে গেলে হামলার শিকার হয় ফটো সাংবাদিক প্রীতম।
থানায় লিখিত অভিযোগে সাংবাদিক প্রীতম উল্লেখ করেন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধীন লিংক রোডে অবস্থিত জেলা কারাগারের বিপরীতে একটি জমির উপর নির্মিত দোকানপাটে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট চালানোর সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিজের নিকন ডি ৭০০ মডেলের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলেন তিনি। ছবি তুলতে দেখে সন্ত্রাসীরা তার দিকে তেড়ে আসে, পরে সে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলে এক সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী খ্যাত হাজী রিপন তার হাতে থাকা লোহার হাতল দ্বারা সাংবাদিক প্রীতমের মাথায় আঘাত করে রক্তক্ষরণ ঘটায়। একই সময়ে কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান ও হারুন অর রশিদ এবং ৪০/৫০ জন হামলাকারী লোহার রড, লোহার পাইপ, কাঠ, বাঁশসহ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র দ্বারা তাকে বেদম মারধর করে রক্তাত্ব জখমসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে তার সাথে থাকা নিকন ডি ৭০০ মডেলের ক্যামেরা, স্যামসাং এম ২১ মডেলের একটি স্মার্টফোন, পকেটে থাকা আট হাজার ৩০০ টাকা, জাতীয় পরিচয় পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের মূল কপিসহ মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় তার মাথা ফাটিয়ে, হাত ভাঙ্গা, পিঠে অজস্র কাটা, রক্তাত্ব জখমসহ শরীরের সকল স্থানে নীলাফুলা জখম করে।
সাংবাদিক প্রীতম জানান, শুধু ঐখানে ই না, আমি নিজের জীবন বাঁচাতে দৌড়ে এসে চায়ের দোকানে আশ্রয় নেই, সেখানেও সন্ত্রাসীরা আমার উপর হামলা চালায়। এসময় চায়ের গরম পানির ক্যাটলি দিয়ে আঘাত করে আমার কপাল ফাটিয়ে দেয় হামলাকারীরা।
পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আমাকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
এমন হামলার বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে এ হামলার সঠিক তদন্ত করে হাজী রিপন, কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, হারুন অর রশিদকে গ্রেফতারসহ সকল অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবী জানান নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের সাংবাদিকবৃন্দ ও আহত প্রীতমের পরিবার।
ঘটনার পর বিকেলে প্রত্যাক্ষদর্শী কয়েকজন সাধারণ ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বলেন, হামলার আগে হাজি রিপন, কাউন্সিলর শফি ও হারুনসহ তাদের পক্ষের শ্রমিকরা মনে করেছেন, যারা ছবি আর ভিডিও করতেছে তারা জয়নালের লোক । এই মনে করে শ্রমিকদের উস্কানী দেয়ার পর শ্রমিকরা বেদম পিটিয়ে আহত করে ছরি তোলারত এক ব্যাক্তিকে । পরে জানতে পারে এই লোক সাংবাদিক । সাংবাদিক জানার পর রিপন, শফি ও হারুন উত্তেজিত শ্রমিকদের থামিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে । মূলতঃ এই জমি নিয়ে ভূমিদস্যূ জয়নালের সাথে মামলা চলতেছে বলে শুনতে পেরেছি । আর এই ভূমিদস্যূদের হাঙ্গামায় ‘পাঠার বলী’ হইলো এই সাংবাদিক ।
এমন হামলার বিষয়ে বজলুর রহমান রিপন ওরফে হাজি রিপন নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, জমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিলো জয়নাল আবেদীনের সাথে । ট্রাক মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়ন মিলিত হয়ে এই জমিটি অনেক আগেই ক্রয় করে । কিন্তু বিরোধ সৃষ্টি হয় জয়নাল আবেদীনের সাথে । এই জমি তিনি ওয়ারিশ ক্রয় করেছেন বলে মামলা করলে আদালত তার পক্ষে কোন আদশে দেয় নাই । ফলে আমাদের শ্রমিকরা এই জমিতে কাজ করতে গেলে কয়েকজন মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিও করতে থাকে । এই অবস্থায় শ্রমিকরা উত্তেজিত হয়ে কয়েকজনকে ভিডিও করা থেকে বিরত থাকার জন্য বলার পরও ভিডিও করতে থাকায় শ্রমকরাই মারধর করে । পরে আমি শফি ভাই ও হারুন ভাইসহ উপস্থিত সকলে এই ছেলেটিকে উদ্ধার করে জানতে পারি সে সাংবাদিক । আমি নিজে অসুস্থ থাকার পরও মারধরের শিকার এই ছেলেটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি ।









Discussion about this post