এবার ‘খেলা হবে’ ঘোষনা দিয়ে নির্বাচনের মঠে নেমেছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের অন্যতম ব্যাটলগ্রাউন্ড নন্দীগ্রামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে জয় পেয়েছেন তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দোপাধ্যায় ।
নির্বাচনের অনেক পূর্বেই ‘খেলা হবে’ এই ছোট্ট দুটো শব্দকে এক সময় তুমুল জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের ডাকসাইটে রাজনীতিবিদ তথা আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান।
কার্যত তার ‘পেটেন্ট’ করা এই ছোট বাক্যটাকে নিয়েই এখন তুলকালাম সীমান্তের অন্য পারে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে। সে রাজ্যে ভোটের আগে বিজেপি, তৃণমূল, বাম, কংগ্রেস সব দলই অহরহ ব্যবহার করছে এই ‘খেলা হবে’, নানা রঙে ও নানা রূপে।
আর এই ‘খেলা হবে’ শব্দটি সভা সমাবেশে ব্যাপকভাবে প্রচারের পর এবার মমতা বন্দোপাধ্যায় ছিনিয়ে নিলেন জয়
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের অন্যতম ব্যাটলগ্রাউন্ড নন্দীগ্রামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে টান টান উত্তেজনার পর এবার এই আসনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীকে এক হাজার ২০১ ভোটে হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার।
এক সময় মমতার ‘লেফটেনেন্ট’ হিসেবে পরিচিত শুভেন্দু এবারই প্রথম পদ্মফুল নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিলেন।
২০১৬ সালে একই আসনে ঘাসফুলের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হওয়া এ রাজনীতিক গতবছরের ডিসেম্বরেই দল বদলান।
মমতার সরকারে পরিবহন ও পরিবেশ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি লোকসভায় তৃণমূলের প্রতিনিধিত্ব করা শুভেন্দু ১৯৯৫ সালে কংগ্রেসের হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচনে জেতেন।
এবার ভোটের আগে মমতাকে হারানোর ‘চ্যালেঞ্জ’ দিয়েছিলেন তিনি।
তৃণমূলনেত্রী কলকাতায় নিজের আসন ছেড়ে নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে সে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেই জিতলেন।
জয় নিশ্চিত হতেই হুইল চেয়ার ছেড়ে পায়ে হেঁটেই দলীয় কার্যালয়ে ঢোকেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার অপেক্ষায় দুপুর থেকেই সেখানে ছিল নেতাকর্মীদের ভিড়।
অথচ রোববার সকালে ভোট গণনা শুরুর পর অনেকক্ষণ শুভেন্দুই এগিয়ে ছিলেন। এক পর্যায়ে তার সঙ্গে মমতার ব্যবধান ৮ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
এরপর থেকে শুরু হয় দুই প্রার্থীর ‘সাপ-লুডু’ খেলা। একাদশ রাউন্ডের শেষে দেখা যায় মমতা ৩ হাজার ৩২৭ ভোটে এগিয়ে গেছেন। পরের রাউন্ডেই পিছিয়ে যান সাড়ে ৪ হাজার ভোটে।
১৬ রাউন্ড গণনার শেষে মাত্র ৬ ভোটে এগিয়ে যান শুভেন্দু। ফল নির্ধারিত হয় শেষ রাউন্ডের গণনায়।
ইনডিয়ান এক্সপ্রেস লিখেছে, সকাল থেকেই কালীঘাটের বাড়িতে বসে গণনায় চোখ রেখেছেন মমতা।
প্রথম দিকে ভোটে পিছিয়ে থাকলেও তিনি ‘আত্মবিশ্বাসী’ ছিলেন বলে জানিয়েছেন ঘনিষ্ঠরা। ইভিএমের ভোট গণনা শুরু হলেই নন্দীগ্রামে তৃণমূলের পক্ষে ব্যবধান বাড়বে, এই ছিল তার ধারণা।
ব্যাটলগ্রাউন্ড নন্দীগ্রামে তুমুল লড়াই হলেও পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ আসনেই এমনটা দেখা যায়নি। একচেটিয়া জিতে মমতার দলই যে হ্যাটট্রিক তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে তা এখন অনেকটাই স্পষ্ট।









Discussion about this post