হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের নামে তাঁর কথিত স্ত্রীর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় করা ধর্ষণ মামলায় ছাত্রলীগ নেতাসহ দুজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আজ (১৭ জুলাই) রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এ নিয়ে ওই ঘটনায় পঞ্চম দফায় আরও দুজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হলো। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে সকাল নয়টার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামুনুল হককে কাশিমপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছিল।
যে দুজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি শাহ মো. সোহাগ ও সোনারগাঁয়ের বাসিন্দা মো. রতন মিয়া। সোহাগ এবার মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকালে কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। দুই সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তাঁকে আবার একই কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আরও দুজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীরা জানিয়েছেন, তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রয়েল রিসোর্টে নারীসহ মামুনুল হককে আটকের খবর জানতে পেরে সেখানে যান। রকিব উদ্দিন আরও বলেন, মামলার বাদী, তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৪৩ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক নয়ন বলেন, সাক্ষীরা আদালতে যে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তার মিল পাওয়া যায়নি। সাক্ষী সোহাগ ফেসবুকে দেখেছেন, কিন্তু কোন আইডি থেকে দেখেছেন, তা বলতে পারেননি। তিনি বলেছেন, তাঁরা তিনজন একসঙ্গে গিয়েছেন। অন্য সাক্ষী রতন বলেছেন, তিনি একা গিয়েছেন। তাঁরা আদালতে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সাজানো সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। তিনি দাবি করেন, মামুনুল হক অসুস্থ। সাক্ষ্য গ্রহণের সময় তাঁর কষ্ট হচ্ছিল। তিনি হেঁটে তিন তলায় উঠেছেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে হেঁটেই নেমেছেন। তাঁর অনেক কষ্ট হচ্ছিল।
গত বছরের ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে একটি কক্ষে কথিত স্ত্রীসহ মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজতে ইসলামের কর্মী ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাঁদের ছিনিয়ে নেন। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ঘটনার ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে তাঁর কথিত স্ত্রী বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। একই বছরের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের নামে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।









Discussion about this post