‘তোলারাম কলেজে টর্চার সেল রয়েছে’? উত্তরে উপস্থিতি সকলেই হাত তুলে “না“ বলেছে ।
শামীম ওসমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বলছেন তোলারাম কলেজে টর্চার সেল নাই। তাহলে আমরা কারা যারা শহীদ মিনারে বলেন যে টর্চার সেল আছে। শুধু শহীদ মিনার বরং আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাতেও অভিযোগ করা হয়। অথচ কমিটির সভায় প্রিন্সিপাল চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন প্রমাণ করতে পারলে পদত্যাগ করবো।’
‘যারা এসব অভিযোগ করছেন তারা তো আর আফগানিস্তান হতে আসেন নাই। তাদের নামের আগে অনেক বিশেষণ আছে। কেউ সাহিত্যিক কবি ইত্যাদি।’
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
তোলারাম কলেজের টর্চার সেল প্রসঙ্গে এভাবেই উল্লেখিত কথা বলেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে সরকারি তোলারাম কলেজে নবীণ বরণ উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে তিনটি কলেজ খুব প্রিয়। তোলারাম কলেজ, মহিলা কলেজ ও নারায়ণগঞ্জ কলেজ। কিন্তু কষ্ট লাগছে আমার। মেয়েদেরকে বলছি কারণ তোমাদের মা বা মেয়ে হিসেবে বিশ্বাস করি। তোমরা সত্য কথা বলবা তা না হলে আল্লাহর কাছে ঠেকা থাকবা।’
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তোলারাম কলেজে টর্চার সেল কোথায় আছে? যেখানে মানুষ পিটানো হয়। আছে নাকি নাই? যদি না থাকে তাহলে হাত তুলে দেখাও। নাই? তাহলে আপনারা কারা যারা বলছেন শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে যে তোলারাম কলেজে ছাত্রদের নির্যাতন করা হয়।
শুধু শহীদ মিনারে নয় আপনারা জেলা প্রশাসকের কার্যলয়ে দাঁড়িয়ে বলেছেন। আমি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি সাথে সাথে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং বলেছেন, চলেন সমস্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে আমার কলেজে গিয়ে দেখান আমার কলেজে কোথাও একটা ছাত্র নির্যাতন হচ্ছে কিংবা করার জন্য ব্যবস্থা আছে সেখানে। যদি করা হয়ে থাকে তাহলে আমি নিজে পদত্যাগ করবো।’ একজন শিক্ষক হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করেছেন ।
তিনি আরও বলেন, ‘তাহলে যারা বলছেন তারা কি আফগানিস্তান থেকে এসেছেন? তাতো না। আফ্রিকা থেকেও আসেন নাই। সুন্দরবনে জঙ্গলে থাকা কোনো জংলি পুরুষ তারা না। তারা আমার চেয়ে জ্ঞানী মানুষ। নামের আগে পরে অনেক টাইটেল আছে তাদের কারো নামে কবি, কারো নামে সাহিত্যিক। কারে নামে বিপ্লবী, কারো নামে ওমুক সভাপতি, ওমুক সাধারণ সম্পাদক। বলছেন কেন? কার ভবিষ্যৎ নষ্ট করছেন। আপনার বাচ্চা র? তোলারাম কলেজকে যদি আপনি বিতর্কিত করেন, মহিলা কলেজকে যদি আপনি বিতর্কিত করেন, নারায়ণগঞ্জ কলেজকে যদি আপনি বিতর্কিত করেন। কাকে বিতর্কিত করছেন ? আমাকে ? কেন ? এই কলেজের ছাত্ররা আমাদেরকে ভালোবাসে একটু বেশি এই জন্য ? আপনি এতো স্বার্থপর, এতো জঘন্য! আপনি এতো নিচু মানসিকতার লোক! যে আপনি আপনার সন্তানদেরকে টাইটেল দিয়ে দিচ্ছেন খুনি, গুন্ডা, মাস্তান।’
সাংসদ বলেন, ‘একবার চিন্তা করেন তো যদি এই ছাত্ররা যদি আমাদের আমলের ৮১ সনের ছাত্র হতো আপনার বাড়ির ইট থাকতো কিনা এখন পর্যন্ত। আমাদের সময়ের ছাত্র হলে তো বাড়ির ইট থাকার কথা না। গিয়ে বলতো, ওই আমাদের সন্ত্রাসী বললি কেন ?’
শামীম ওসমান বলেন, ‘২০ হাজার ছাত্র যদি রাস্তায় বের হয়। মহিলা কলেজেও ১০ হাজার আছে। নারায়ণগঞ্জ কলেজেও ১০-১৫ হাজার ছাত্র আছে । যদি সবাই মিলে রাস্তায় নেমে বলে শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে মিথ্যা বললি কেন ? কে আপনাদের রক্ষা করবে ? আমাদের বাচ্চাদের আঘাত কইরেন না। এতে আপনার বাচ্চা আঘাতপ্রাপ্ত হবে। ভুল থাকতে পারে। সংশোধন করেন। আপনার মতামত থাকতে পারে। সেই মতামত বলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনে পোলাপানরে স্টুপিড ভাবছেন ? এরা আপনার-আমার চেয়ে স্মার্ট অনেক। এরা সবগুলি কিন্তু চিজ একেকটা। ওরা জানে কোথায় টিপ দিলে কোথায় কি হয়।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ও শামীম ওসমানের স্ত্রী সালমা ওসমান লিপি, সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বেলা রানী সিংহ, উপাধ্যক্ষ শাহ্ মো. আমিনুল ইসলাম, কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শিরিন আক্তার, শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জীবন কৃষ্ণ মোদকসহ অনেক নেতাকর্মী ।









Discussion about this post