রূপগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের এমন অভিযানের খবরে পুরো জেলায় ব্যাপক সাড়[ ফেলেছে । অনেকেই এমন অভিযানের খবর পেয়ে শিল্প পতিষ্ঠান বন্ধ করে পালিয়ে থাকার খবর ছিলো অনেকের মুখে। দুইজন শিল্প মালিক নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বলেন, রূপগঞ্জে এমন অভিযানের কারণ হচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তরের অসাধু কর্মকর্তাদের ঘুষের রেট বৃদ্ধি করা ! ঘুষের রেট (দর) বাড়াতেই চলছে নানা অপতৎপরতা । পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ের মাত্র কয়েক দুই কিলো মিটারের মধ্যে অসংখ্য কারখানা ইটিপি প্লান্ট ছাড়া কারখানা পরিচালিত হলেও তার খোজ কে রাখে ?
নারায়ণগঞ্জে শত শত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ আদলতের আদেশ উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন যাবত ইটিপি প্লান্ট ছাড়াই তাদের কারখানা পরিচালনা করে যাচ্ছে অসাধু কর্মকর্তাদের নিয়মিত মোটা অংকের মাসোয়ারা দিয়ে। মোটা অংকের মাসোয়ারা গ্রহণ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা ইটিপি প্লান্ট পরিচালনা করতে যে ক্যামিকেল ব্যবহার করতে হয় তার ব্যবসাও করছেন কেউ কেউ । একদিকে নারায়ণগঞ্জ জেরা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের নিয়মিত ঘুষ আদায় অপরদিকে ক্যমিকেল ব্যবসা করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন অসাধুরা ………
বিশেষ প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইটিপি প্লান্ট ব্যবহার না করে কারখানা পরিচালনা এবং শীতলক্ষ্যা নদী দখল ও দূষণের অভিযোগে এসিআই সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিসহ সাতটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ৬ কোটি ২৭ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমান আদালত ।
এসময় তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয় । পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগের পরিচালক (উপ-সচিব) ও নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট রুবিনা ফেরদৌসির নের্তৃত্বে সংস্থাটির ভ্রাম্যমান আদালত মঙ্গলবার দুপুর বারোটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত রূপগঞ্জ উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের হাটাব, মিঠাব, মটেরঘাট ও মঙ্গলখালি এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করে।
অর্থ দন্ডপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান গুলোর মধ্যে চারটি পেপার মিল, দুইটি লবন উৎপাদন মিল ও একটি ফ্লাওয়ার মিল রয়েছে।
নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট রুবিনা ফেরদৌসি জানান, রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরবর্তী এই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ আদলতের আদেশ উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন যাবত ইটিপি প্লান্ট ছাড়াই তাদের কারখানা পরিচালনা করে আসছিলো। যার কারণে নদী দূষণের মাত্রা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে । একই সাথে প্রতিষ্ঠানগুলো নদীর বেশ কয়েক একর জমি অবৈধভাবে দখল করে রাখায় নদীর গতিপথ সংকুচিত হয়ে পড়েছে । তাই নদী দখল ও দূষণের অভিযোগে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, অর্থদন্ডে দন্ডিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইউনুস পেপার মিলকে ৩ কোটি ১৬ লাখ ৫১ হাজার ২শ অনন্ত পেপার মিলকে ৪৫ লাখ ২১ হাজার ৬শ’, পূর্বাচল পেপার মিলকে ৪৬ লাখ ৮৭ হাজার ২শ’, হাশেম পেপার মিলকে ৩ লাখ টাকা, এসিআই সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিকে ১ কোটি টাকা, সুপার ক্রিস্টাল সল্ট ইন্ডািিষ্ট্রকে ৯৪ লাখ ৫০ হাজার এবং আফজাল ফুড প্রোডাক্টসকে ২১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তবে জরিমানার অর্থের পরিমান বেশি হওয়ায় কারখানার মালিকদের অনুরোধে তাৎক্ষণিক আদায় না করে স্বল্পসময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে কোন প্রতিষ্ঠান জরিমানার অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হলে উৎপাদনসহ সব ধরণের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়ে আরো কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে বলে জানান নির্বাহি ম্যাজিষ্ট্রেট ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা উপ-পরিচালক মো: সাঈদ আনোয়ার জানান, এ অভিযানের ফলে অন্যান্য শিল্প মালিকরা তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারের নীতিমালাগুলো মেনে চলার ব্যাপারে আরো সতর্ক হবে। আজকের এই অভিযান সবার জন্য সতর্কবাতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণবিরোধী এ অভিযান চলমান থাকবে এবং দূষণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দূষণকারীরা যতো প্রভাবশালী হোক না কেন কাউকে আমরা ছাড় দেবো না।









Discussion about this post