নারায়ণগঞ্জের এক সময়ের কলংকখ্যাত টানবাজার পতিতাপল্লির তৎকালীন সময়ের দালাল বর্তমানে সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতাধর বিনা ভোটে নির্বাচিত সদস্য (মেম্বার) ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আইয়ুর আলীর কর্মকান্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে খোদ আওয়ামীলীগ নেতাদের মাঝে । পুরানো দ্বন্ধের জের ধরে একজন অসহায় দরিদ্র বৃদ্ধ ফরিদ আহমেদকে জরিমানা করায় তোলপাড়ের সৃস্টি হয়েছে নগরীজুড়ে । এই আইয়ুব আলী এক সময়ে টানবাজার পতিতাপল্লী উচ্ছেদের সময় বিএনপির তৎকালীন প্রভাবশালী নেতাদের সাথে নিয়ে আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের কুশপুত্তলীকা দাহ করেছিলো, সেই আইয়ুব আলীকে পতিতা পল্লীর দালাল আখ্য দিয়ে অনেকেই করেছেন তীর্য়ক মন্তব্য ।
এমন একজন বিতর্কিত ব্যাক্তির কথায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও আরিফা জহুরা কি করে একজন অসহায় বৃদ্ধকে এমন শাস্তি দিলেন তা নিয়ে সর্বত্র চলছে তুমুল মিশ্র প্রতিক্রিয়া ।
জাতীয় হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়ে খাদ্য সহায়তা চেয়ে হয়রানি করার অভিযোগে শাস্তি হিসেবে ১০০ দরিদ্র পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া ব্যক্তিকে খরচ করা টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক শামীম বেপারিকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গত বুধবার জাতীয় হটলাইন নম্বর ৩৩৩-এ ফোন করে খাদ্য সহায়তা চান সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের দেওভোগ এলাকার ফরিদ উদ্দিন।
রবিবার (২৩ মে) দুপুরে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত হওয়া গেছে ৩৩৩ জাতীয় হটলাইনে কল দিয়ে খাদ্য সহায়তা চাওয়া ফরিদ আহমেদ চারতলা বাড়ির মালিক একা নন। বাড়িটির মালিক ছয় ভাই ও এক বোন। ফরিদ আহমেদ বাড়ির তিনটি রুমের মালিক। যে কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাকে আজকের (রবিবার) মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে যে টাকা খরচ হয়েছে তা ফেরত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এই ঘটনা কী কারণে ঘটলো তা খুঁজে বের করতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ফরিদ আহমেদকে কোন ফান্ড থেকে টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘কোনও একটি চ্যারিটি ফান্ড থেকে এই টাকা ফেরত দেওয়া হবে ।’
উল্লেখ্য, ৩৩৩ জাতীয় হটলাইনে ফোন পেয়ে খাদ্য সহায়তা করতে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন জানতে পারেন সাহায্য চাওয়া ফরিদ আহমেদ চারতলা বাড়ির মালিক এবং তিনি হোসিয়ারি কারখানার মালিক। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও আরিফা জহুরা ৩৩৩ ফোন করে অযথা হয়রানি ও সময় নষ্ট করার দায়ে তাকে শাস্তি হিসেবে ১০০ দরিদ্র লোককে খাদ্য সহায়তা করার নির্দেশ দেন।
এমন বিতর্কিত বিষয়ে জানতে সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আইয়ুব আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট কে বলেন, আমার সাথে ফরিদ আহমেদের সাথে কোন পূর্ব শত্রুতা নাই । আমার কথায় টিএনও (ইউএনও) কেন একজন অসহায় মানুষকে এমন শাস্তি দিবেন। উনি আমার কথায় নাগবাড়ি আইয়্যা পরবো ? বিনা ভোটে নির্বাচিত সদস্য ও টানবাজার পতিতাপল্লীর দালালী করার এমন এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে আইয়ুব আলী কোন উত্তর না দিয়ে আরো বলেন, এলাকাবাসীর মুখ তো আর বন্ধ করা যাইবো না। তৎকালীন সময়ে শামীম ওসমানের কুশপুত্তলীকা দাহ করেছিলেন কিনা (?) এখন তার এলাকায় (নারায়ণগঞ্জ ৪) সরকারের দূর্ণাম করতে এমন কান্ড চালাচ্ছেন কিনা (?) এমন প্রশ্নে কোন উত্তর দেন নাই আইয়ুব আলী ।








Discussion about this post