স্টাফ রিপোর্টার :
মাদক ব্যবসায়ীদের হোতা, কাশিপুরের জোড়াখুনের মূল হোতা, নারী কেলেংকারী ও ব্যবসা, ভুমিদস্যুতা, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের হোতা যুবলীগের নেতা দাবীদার আনিসুর রহমান শ্যামল ওরফে চাচা শ্যামল ওরফে দর্জি শ্যামলের বিরুদ্ধে এবার ফতুল্রা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে অটো রিক্সা মালিকদের কয়েকজন ।
কুখ্যাত এই অপরাধী শ্যামল ছাড়াও ফতুল্রা থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফ উল্লাহ বাদলের আপন ভাই খোকনসহ আরো কয়েক জনকে আসামী করে ফতুল্লা থানায় বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে অভিযোগ দায়ের করলে গা ঢাকা দেয় চাঁদাবাজ শ্যামল, খোকনসহ অন্যান্য অপরাধীরা ।
অটো রিক্সা মালিকদের পক্ষে সহিদুল, মীর ইকবাল, বাবুল মিয়াসহ ১২ জন অটো রিক্সা মালিক দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, কাশিপুর খিলমার্কেট এলাকার শ্যামল, মৃত তারা মিয়ার পুত্র খোকন, শাহীন, কবির, পঞ্চবটি এলাকার মৃত মোহাম্মদে আলীর পুত্র হুমায়ুন, ভোলাইল এলাকার মোঃ মুক্তার, উত্তর মাসদাইর এলাকার সোহাগ সহ আরো কয়েকজন জোর পূর্বক ফতুল্লা থানাধীন অটো রিক্সা মালিক ও চালক কল্যান সমবায় সমিতির নামে প্লেট ছাপাইয়া প্লেট প্রতি ৫০০ টাকা করে সকল মালিকদের দিতে বলে এবং প্রতিমাসে ৩০০ টাকা চাঁদা দাবী করে।
উল্লেখিত চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মারধর করাসহ রিক্সার গদি ও সীট জোর পূর্বক রাখিয়া দেয়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান ভুক্তভোগীরা ।
থানায় অভিযোগ দায়েরের সাথে সাথে মুঠোফোনে শ্যামল ও খোকনকে অবহিত করে অসাধু পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা। যাদের অনেকেই ফতুল্রা থানার খিল মাকেট এলাকায় শ্যামলের টর্চাল সেল হিসেবে পরিচিত অফিস কক্ষে সারারাতব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনে অংশ নিয়ে আসছিলো । প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশের অনেকেই শ্যামলের আস্তানায় নানা আয়োজনে অংশ নেয়ায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে সকল ধরনের অপরাধ চালিয়ে আসছিলো শ্যামল ও তার বাহিনী ।
নাম প্রকাশ না করার না করার অনুরোধে ফতুল্লা থানা এলাকার অনেকেই বলেন, কাশিপুরের জোড়া খুনের মূল নায়ক এই শ্যামল। বাবুরাইলের মজিদ বাহিনীর সাথে শ্যামল বাহিনীর দ্ধন্ধকে পুজি করে মিল্টন ও পারভেজকে উস্কে দেয় শ্যামল ওরফে চাচা শ্যামল ওরফে দর্জি শ্যামল । এমন জোড়া খুনের নেপথ্যের ঘটনার পর এলাকার সাম্রাজ্য নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে খিল মাকেটের প্রতিটি দোকানী ব্যবসায়ী ও রিক্সার গ্যারেজ তেকে বিভিন্ন অংকের চাঁদাবাজি শুরু করে ।
আনিসুর রহমান শ্যামল ওরফে চাচা শ্যামল ওরফে দর্জি শ্যামল তার হাজারো অপকর্ম অস্বীকার করলেও কাশিপুর এলাকার অনেকেই মুঠোফোনে ও সরাসরি যোগাযোগ করলে সকলেই এক বাক্যেই বলেন,“ এমন কোন অপকর্ম আছে যা শ্যামল করে না ? এক সময় পতিতালয় উচ্ছেদের পর খিল মার্কেটের ঈদগা ও করবস্থানের সামনে বাদলের বাড়ীসহ কয়েকটি বাড়ীতে বাসা ভাড়া নিয়ে পতিতা রেখে কে ব্যবসা করতো ? মিল্টনসহ জোড়া খুনের ঘটনার আগে মিল্টন তার বাহিনী নিয়ে কি শ্লোগান দিতো ? এখনো সরকারী সম্পত্তি বিক্রি করতে কে ড্রেজার স্থাপন করে রেখেছে ?” কাশিপুরের বাচ্চা থেকে বুড়ো পর্যন্ত সকলেই জানেন হাজী শ্যামলের ব্যবসা কি ? কি দিয়ে দর্জি থেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনেছে ? এই ঘৃন্য ব্যক্তি টাকার জন্য সকল ধরণের অপকর্মই করে শ্যামল । সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের কাশিপুরে মাদকের এই বিশাল ব্যবসার নেপথ্যের শেল্টারদাতাকে গোপনে ও প্রকাশ্যে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে র্যাব ও পুলিশের প্রতি দাবীও জানান অনেকেই। এমন অসংখ্য এলাকাবাসীর মন্তব্য রেকর্ড রাখার পর সকলেই করজোড়ে বলেন, ভাই শ্যামল ও তার বাহিনী এতটাই ধূর্ত যে কোন উপয়েই হোক আমাদের নাম প্রকাশ হলে বিশাল ক্ষতি করবে । যেমন বিএনপির নেতা মজিদ ও হাসানের সাথে জমি ভ’মিদস্যুতার কারণে শ্যামলের দ্বন্ধ ছিলো পুরানো। সেই পুরানো জিদ মিটাতে মজিদ ও হাসানের এক সময়ের সন্ত্রাসী মিল্টনকে নিজের কব্জায় নিয়ে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটিয়ে এখন শ্যামল প্রতিপক্ষদের নিয়ে চিন্তামূক্ত। শ্যামল প্রায়ই নিজেদের মাঝে দম্ভ নিয়ে একটা শ্লোক বলে থাকে তা হলো : “শত্রু মারমু, চল্লিশা খামু, যদি শত্রু বাইচ্চা যায়, তবে দুধ কলা নিয়া দেখতে যামু।” এমন শ্লোকের অর্থটা একটু চিন্তা করলেই সহজে যে কেউ অনুধাবন করতে পারবে শ্যামল কতটা ধূর্ত ।
আর এতো সকল অপকর্ম করেও থানা পুলিশের প্রায় সকল কর্মকর্তারা নিয়মিত কোন না কোন কারণে কাশিপুর এলাকায় আসলেই নানাভাবে শ্যামল স্বপ্রণোদিত হয়ে আপ্যায়ণের পাশাপাশি নগদ কিছু উপঠৌকন দিয়ে পুলিশ সদস্যদের সন্তুষ্ট করেই চালিয়ে যাছে নারী কেলেংকবারীসহ সকল অপরাধ সাম্রাজ্য ।
এ বিষয়ে ফতুল্রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন ও ইন্সপেক্টর অপারেশন মুজিবুর রহমান বলেন, অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । তা তদন্ত করছে দারোগা আবেদ হোসন । তদন্ত শেষে জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা ।









Discussion about this post