এবার চাঞ্চল্যকর রাসেল হত্যা মামলার সেই ফাঁসির দন্ড থেকে মুক্তি পাওয়া রূপগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বুধবার ২ জুন সোলায়মান মিয়ার (৩৬) ভাই রাজীব মিয়া (৩২) বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় এই মামলা দায়ের করেন।
এই মামলায় এজাহারনামীয় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ ও তারাব পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর মনির হোসেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন উপজেলার গন্ধর্বপুরের আব্দুল মান্নানের ছেলে শাহবাজ, জয়নালের ছেলে ফজলুল হক ও মাছিমপুরের ছানু মিয়ার ছেলে মো. আক্তার।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, সোলায়মান উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের নাশিঙ্গল এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে খামারে মাছ চাষ করে আসছিলেন।
মঙ্গলবার (১ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাছের খামারের বৃষ্টির পানি বেড়ে যাওয়ায় পুকুরের চারপাশে বাঁধ দিতে যান তিনি।
ওসখান থেকে তারাব পৌরসভার এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম মনির ব্যবসা সংক্রান্ত চুক্তির জন্য সোলায়মানকে গন্ধর্বপুর এলাকায় ডেকে নিয়ে যান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
মামলায় আরও বলা হয়, দুপুর ১২টার দিকে সোলায়মান, রাজু, বাবু, এসকে সোলায়মান গন্ধর্বপুর নামাপাড়া মসজিদের পশ্চিম পাশে বালুরমাঠ পাকা রাস্তায় পৌঁছালে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আলমাছ ও চেয়ারম্যানের আপন ভাই রোমান মেম্বারের হুকুমে কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম মনিরসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সোলায়মান ও তার সঙ্গে থাকা রাজু, বাবু, এসকে সোলায়মানকে এলোপাথাড়িভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, এক পর্যায়ে কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম মনিরসহ প্রতিপক্ষের লোকজন সোলায়মানকে লোহার হ্যামার ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়।
সোলেইমানকে প্রথমে ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। ঢাকা মেডিকেলে বিকাল ৩টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোলায়মানের সঙ্গে থাকা রাজু ও এসকে সোলায়মান ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এর আগে ২৮ মে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে মাছিমপুর এলাকায় চেয়ারম্যান সমর্থকদের সঙ্গে সোলায়মানসহ কয়েকজনের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হামলার ঘটনা ঘটে। ওই সময় বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করা হয়।
ওই ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল আহাম্মেদ আলমাছ বাদী হয়ে নিহত সোলাইমানসহ ২৫ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
উপজেলা যুবলীগ সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন বলেন, “সোলায়মান যুবলীগের কেউ নয়। তবে হত্যাকাণ্ডের আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করছি।”
রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, এ ঘটনার মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়ের আহমেদ আলমাছকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে ।
এমন চাঞ্চল্যকর একের পের এক ঘটনার মধ্য দিয়ে রূপগঞ্জের আধিপত্য বিস্তার করতে বিশাল চক্রান্তের অংশ হিসেবে এই হত্যা মামলায় নানা নাটকীয়তা দেখা যাচ্ছে । রূপগঞ্জের অভিজ্ঞজনদের অনেকেই নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, “আলমাছ চেয়ারম্যান যেমন নানা কারণে এলাকায় ব্যাপকভাবে সমালোচিত ঠিক তেমনি অনেকের একক আধিপত্য নস্যাৎ করতে আলমাছ চেয়ারম্যানের ভূমিকা ছিলো মূখ্য । যেমন রূপগঞ্জের সাংবাদিক নেতা আলিম নিজেকে এলাকার ডন মনে করতেন । তার কথায় স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্মকর্তারা উঠতো আর বসতো । অসংখ্য ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে বিগত দিনে ডিসি এসপি, সার্কেল এএসপি, ইউএনও, ওসিদের সাথে বীরদর্পে চলাফেরা এবং বিশেষ বিশেষ বৈঠকেও মিলিত হতেন। সেই একক আধিপত্যও ভেঙ্গে দিয়েছিলো এই বিতর্কিত আলমাছ চেয়ারম্যান । আলমাছ চেয়ারম্যানের অসংখ্য খারাপ কাজের মধ্যেও কিছু কিছু মন্দ কাজ সব সময়ই আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে । বিগত সময়ে নারায়ণগঞ্জের চোরাই গম সিন্ডিকেটের হোতারা রূপগঞ্জের সরকারী ও ব্যক্তিমালিকানা জমি নিয়ে নানা কেলেংকারীর বিষয়ও নস্যাৎ করে দিয়েছিলো এই আলমাছ ।








Discussion about this post