সেলিম প্রধান রূপগঞ্জের ভুলতার মর্তুজাবাদ গ্রামের নান্নু প্রধানের ছেলে এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম ও আলালামিন প্রধানের আপন চাচাতো ভাই। তার আরেক চাচাতো ভাই রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক কাইয়ুম প্রধান। মর্তুজাবাদ এলাকার অনেকেই বলেছেন, সেলিম, প্রধান মূলতঃ অস্ত্রেরে ব্যবসা করতো । তার কাছে আধুনিক সব অস্ত্র দেখা যেতো । এলাকার কারো সাথে না চললেও আনোয়ার সাদাত সায়েম ও আলালামিন প্রধানের সাথে সব সময় সখ্যতা রেখে চলতো । আধুনিক অস্ত্র প্রদর্শন ছাড়াও মন্ত্রীর ষ্টাইলে চলাফেরা করতো সেলিম প্রধান । ক্যাসিনো ডন আটকের খবরে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে আনোয়ার সাদাত সায়েম ও আলালামিন প্রধানসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা । গোয়েন্দা সংস্থা ছাড়াও রূপগঞ্জ তানা পুলিশ তাদেরে বিস্তারিত তথ্য জানতে খোজ নিলেও কাউকেই পাওয়া যায় নাই । সেলিম প্রধানের বাবা নান্নু প্রধান পরিবহণ (মুড়ির টিন) ব্যবসা করতো। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে নান্নু মিয়ার সাথে আর কোন যোগাযোগ রাখতো না ক্যাসিনো ডন সেলিম প্রধান
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
ক্যাসিনো ডন সেলিম প্রধানের মাসিক আয় নয় কোটি টাকা। তিনি ব্যবসা থেকে প্রতিমাসে ৯ কোটি টাকা আয় করতেন। এসব টাকার অর্ধেক অর্ধেক কোরিয়া ও বাংলাদেশের যারা সম্পৃক্ত তারা পেতেন। সিলন ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক এবং কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে পাচার হতো এসব টাকা।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় র্যাব সদর দফতরের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা জব্দকৃত কাগজপত্র ও সার্ভার পর্যালোচনা করে দেখতে পেয়েছি এই অনলাইন খেলার মাধ্যমে তাদের প্রতিমাসে ৯ কোটি টাকা আয় হতো। আমরা সেলিম প্রধানের বাসা থেকে হরিণের চামড়া পাওয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, টাকা জব্দের ঘটনায় মানি লন্ডারিং আইন ও মদ পাওয়ায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা করা হবে। আর এ সব মামলায় সেলিম প্রধান ও তার দুই সহযোগী আক্তারুজ্জামান ও রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সন্ধ্যায় তার গুলশানের বাসায় অনুসন্ধান শুরু করি। অনুসন্ধানে আমরা তার বাসায় বিদেশি ৪৮টি মদের বোতল পেয়েছি। এছাড়া ২৯ লাখ ৫ হাজার ৫০০ নগদ টাকা জব্দ করা হয়। এর মধ্যে তার এখান থেকে পাওয়া যায় ৮ লাখ টাকা।
এছাড়া তার বনানীর অফিস থেকে ২১ লাখ ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে ২৩টি দেশের বৈদেশিক ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা সমমূল্যের মুদ্রা, ১৩ টি ব্যাংকের ৩২টি চেক জব্দ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে জব্দ করা হয়েছে অনলাইন ক্যাসিনো খেলার মূল সার্ভার, আটটি ল্যাপটপ। এছাড়া দুটি হরিণের চামড়া জব্দ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অনলাইনে ক্যাসিনো খেলতে হলে গ্রাহকের নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার প্রয়োজন হয়। সেসব টাকা তিনটি গেটওয়েতে জমা হত। খেলায় জিতলে টাকা গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে ফেরত যেত, অন্যথায় টাকাগুলো গেটওয়েতে থেকে যেত। সেলিম প্রধানের সহকারী মো. আক্তারুজ্জামান প্রতি সপ্তাহে সেসব গেটওয়ের টাকা তুলে সেলন, যমুনা ও কমার্শিয়াল তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করতেন। এরপর সেসব টাকা হুন্ডির মাধ্যমে বা ব্যক্তির সঙ্গে করে বিদেশে চলে যেত।
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, সেলিম প্রধানের সঙ্গে গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সখ্যতা ছিল। তাকে বিএমডাব্লিউ গাড়িও গিফট করেছিলেন সেলিম। এছাড়া আমরা জানতে পেরেছি, বিভিন্নভাবে লন্ডনেও টাকা পাঠিয়েছেন তিনি।
সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, গতকাল রাত থেকে যে অপারেশন শুরু করেছি আজকে সারাদিনব্যাপী আমরা পুনঃনিরীক্ষা করেছি। প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের একটি সাইবার মনিটরিং সেল রয়েছে। সেই সেলে আমরা দেখতে পাই যে, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অনলাইনে ক্যাসিনো গেমিংয়ে নিয়োজিত রয়েছেন। এ অনলাইন গেমিং এর প্রধান সমন্বয়ক সেলিম। সে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করছিল খবর পেয়ে তাকে বিমান থেকে নামিয়ে আনি আমরা।









Discussion about this post