প্রবাদ রয়েছে, “হাতি ঘোড়া গেলো তল, মশা বলে তো জল।” এমন প্রবাদের প্রতিফলন ঘটেছে নানাভাবে ডাকঢোল পিটানো নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী কয়েকজন উচ্ছষ্টভোগী অপরাধীদের ক্ষেত্রে। এমন সমালোচনা চলছে বোস কেবিনের আড্ডায় ।
নারায়ণগঞ্জ মাহানগরী জুড়ে নির্বাচন কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন যাবৎ টানটান উত্তেজনার পর এবার টানা দুই মেয়াদ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব পালন করে আসা সেলিনা হায়াত আইভীর হাতেই আগামী নির্বাচনে নৌকার ভার তুলে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ । এমন ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চ্যল্যের জড় উঠেছে নগরীতে । শনিবার ৪ ডিসেম্বর সকাল থেকেই নগরীর ঐতিহ্যবাহী সেই বোস কেবিনের আড্ডায় অনেক নবীন প্রবীন আলোচনা সমালোচনা করে বলেন, আইভী হচ্ছেন নারাযণগঞ্জের শীর্ষ অপরাধীদের আতংকের নাম। মনোনয়নের ক্ষেত্রে আইভীকে পরাস্ত করতে কত যে দৌড়ঝাঁপ করলো আইভীর কাছে পরাজিত একাধিক শীর্ষ নেতা ও তাদের চেলাচামুন্ডরা । আইভীর বিরুদ্ধে কত ই না প্রোপাগান্ডা করলো, কি লাভ হলো এই পরাজিত চক্রের ? এমন নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে এই শনিবার সকাল থেকেই
শুক্রবার বিকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড ও দলের সংসদীয় বোর্ডের যৌথ সভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়।
শক্রবারের বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, “আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সেলিনা হায়াত আইভী। আজকের মনোনয়ন বোর্ডে এই সিদ্ধান্তই হয়েছে ।”
নারায়ণগঞ্জ সিটিতে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চারজন নেতার নাম আসে। এর মধ্যে থেকে আইভীকেই আবারও বেছে নিল আওয়ামী লীগ।
আগামী ১৬ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। সব কেন্দ্রে এবার ভোট হবে ইভিএমে।
২০১১ সালে এ সিটি করপোরেশনের যাত্রা শুরুর পর এটি হবে তৃতীয় নির্বাচন। এর আগের দুই নির্বাচনেই মেয়র নির্বাচিত হন সেলিনা হায়াত আইভী, যিনি তার আগে আট বছর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
পৌরসভা থেকে সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর প্রথমবার ভোট হয়েছিল নির্দলীয় প্রতীকে। সেবার কেন্দ্রীয় নেতাদের আশীর্বাদপুষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানকে হারিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটির প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলী আহমেদ চুনকার মেয়ে আইভী।
২০১৬ সালের নির্বাচনে ভোট হয় দলীয় প্রতীকে। সেবার আওয়ামী লীগের নৌকা নিয়েই আইভী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে তিনি হারান পৌনে ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে।
১৯৬৬ সালের ৫ জুন জন্ম নেওয়া আইভী ১৯৯২ সালে রাশিয়ার ওডেসা পিগারভ মেডিকেল ইনস্টিটিউট থেকে ডক্টর অব মেডিসিন (এমডি) ডিগ্রি নেওয়ার পর মিডফোর্ড হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ করার সময় ছাত্রলীগে সম্পৃক্ত হন।
১৯৯৪ সাল থেকে এক বছর নারায়ণগঞ্জের ২০০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর উচ্চতর পড়াশোনা করতে চলে যান নিউজিল্যান্ডে।
সেখান থেকে ২০০২ সালে ফিরে আসার পরই নারায়ণগঞ্জ পৌরসভায় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সক্রিয় হন রাজনীতিতে। এর পর থেকে প্রায় দুই দশক ধরে তিনি নারায়ণগঞ্জে নাগরিক সেবার দায়িত্বভার সামলে আসছেন।









Discussion about this post