জমির নামজারি বা মিউটেশনের ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ সুবিধা দিতে যাচ্ছে সরকার। ১০ দিনের (কার্যদিবস) মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জমির নামজারি করা হবে।
দেশের স্বাধীনতার বীর সেনানীদের এই সুবিধা দিতে চলতি সপ্তাহে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
আইন অনুযায়ী (রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন, ১৯৫০) অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি কোনো জমির মালিকানা লাভ করার পর আগের মালিকের পরিবর্তে নতুন মালিকের নাম সংশ্লিষ্ট খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করা বা তার নিজ নামে নতুন খতিয়ান খোলা বা রেকর্ড হালনাগাদ করাকে নামজারি বা মিউটেশন বলে।
বর্তমান ই-মিউটেশন ব্যবস্থায় নাম জারি করতে ২৮ দিন লাগে বলে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাক্ছুদুর রহমান পাটওয়ারী গণমাধ্যম কে বলেন, ‘আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধা, যাদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে, আমরা তাদের জমির নামজারি ১০ কর্মদিবসের মধ্যে করে দেব।’
তিনি বলেন, ‘এখন তো ই-মিউটেশন কার্যকর। সাধারণ মানুষ যেভাবে আবেদন করে মুক্তিযোদ্ধারাও একইভাবে জমির নামজারির জন্য ই-মিউটেশন ব্যবস্থায় আবেদন করবেন। তিনি যখন তার আবেদনটা করে ফেলবেন তখন সেটা বিশেষভাবে ট্রিট করা হবে। বিশেষ আবেদন হিসেবে গ্রহণ করা হবে। আলাদা রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি করা হবে।’
‘পরে এটা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা, উপ-সহকারী, কানুনগো, সার্ভেয়ার—যেখানে যাকে প্রযোজ্য হয় তার কাছে পাঠানো হবে। তারা মতামত দেবেন। শুনানি হবে। প্রাথমিক অবস্থায় দলিলের ফটোকপি দেয়া হয়, ফটোকপি দলিলের ওপর সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। সেজন্য শুনানির সময় মুক্তিযোদ্ধাকে আসল দলিল নিয়ে উপস্থিত হতে হবে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যেই এসি ল্যান্ড অর্ডার দিয়ে দেবেন। নামজারি হয়ে যাবে।’
ভূমি সচিব বলেন, ‘এখানে দুটি বিষয় হবে- আবেদনটা সঠিক হলে মঞ্জুর হবে, নামজারি হবে। আবেদন সঠিক না হলে নামঞ্জুর হবে। মানে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে নামজারির আবেদনটা নিষ্পত্তি হবে।’
মাক্ছুদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি আদেশ জারি করা হবে। সেটির খসড়া করা হয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যেই এটি জারি করতে পারব বলে মনে করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আমাদের শ্রদ্ধা ও সম্মানটা বেশি। এজন্য ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে তাদের বিশেষ সুবিধা দিতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাদের সময় যেন নষ্ট না হয়, তাদের যেন সেবাটা দ্রুত দিতে পারি। এই লক্ষ্যেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিউটেশন আমরা ১০ কার্যদিবসের মধ্যে করতে যাচ্ছি।’
ভূমি সচিব বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করে। ভূমি মন্ত্রণালয় হিসেবে আমাদের যেটুকু সক্ষমতা আছে সেটুকু দিয়ে আমরা তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।’
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিফা খান বলেন, ‘প্লটের ক্ষেত্রে রাজউক থেকে কাগজপত্রের ভিত্তিতে তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। কিন্তু যেক্ষেত্রে দলিল কিংবা আমাদের সরেজমিনে দেখার বিষয় আছে, সেক্ষেত্রে একটু সময় লাগে। তবে বর্তমান ব্যবস্থায় ২৮ দিনের মধ্যে মিউটেশন হয়। আমরা এই সময়ের মধ্যেই আবেদন নিষ্পত্তির চেষ্টা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মিউটেশনের ক্ষেত্রে সরকার নতুন করে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে আমরা সেই বিষয়েও যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’









Discussion about this post