নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে কলকাঠি নেড়েছিলেন একজন ব্যবসায়ী নেতা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এমনই তথ্য পেয়েছেন। সুনির্দিষ্ট এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই ব্যবসায়ীকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে একটি সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তবে, ওই ব্যবসায়ী নেতার কী নাম তা প্রকাশ না করলেও সূত্র বলছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাবার ভূমিকা ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। তিনি ছিলেন শান্তি কমিটির একটি ইউনিয়ন কমান্ডার। সূত্র বলছে, ওই ব্যবসায়ী নেতা ‘রাজাকারপুত্র’ হিসেবে সর্বমহলে সুপরিচিত। এবং তিনি একটি ব্যবসায়ী সংগঠন ও একটি ক্লাবের নেতৃত্বে রয়েছেন। নির্বাচনকালিন সময়ে তিনি নৌকার বিরুদ্ধে এই দুটি সংগঠনে বসেই সকল প্রকার কলকাঠি নেড়েছিলেন।
সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা ডুবাতে হেন কোনো কাজ নেই সেই ‘রাজাকারপুত্র’ করেনি। নারায়ণগঞ্জে নির্বাচন মনিটরিং করতে এসে কেন্দ্রীয় নেতারাও এসব তথ্য পেয়েছেন এবং তারাও অনেক তথ্য সংগ্রহ করে দলীয়ভাবে সেগুলো উপস্থাপন করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন এজেন্সির তথ্যেও ওই ‘রাজাকারপুত্র’ যে নৌকা ডুবাতে সকল প্রকার কলকাঠি নেড়েছিলেন, সেসব বিষয়ও উঠে এসেছে।
তথ্য সূত্রে জানা গেছে, একজন ‘রাজাকারপুত্র’ দীর্ঘদিন যাবৎ একটি ব্যবসায়ী সংগঠন ও একটি ক্লাবের নেতৃত্বে কী করে থাকে! এ নিয়েও সরকারি দলীয় অনেক নেতা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা জেনেছেন, দুজন প্রভাবশালী ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়াতে ওই ‘রাজাকারপুত্র’ নারায়ণগঞ্জের অনেক সেক্টরই নিজের দখলে রেখেছেন। এবং তাদের ছায়াতেই ওই দুটি সংগঠনের নেতৃত্বে বারবার তিনিই আসছেন। তবে, ক্ষমতাসীন দল বারবারই সতর্ক করেছিল রাজাকার উত্তরসূরিরা যেন কোনোভাবেই এই দেশে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি, গোষ্ঠীর ছত্রচ্ছায়াতে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। এমন কঠোর সতর্কতা থাকার পরও তা আমলে নেয়নি ওই দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি। এই বিষয়টি নিয়ও ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, নারায়ণগঞ্জের বালুমহাল থেকে শুরু করে, রাজউকের জমি বিক্রি করা এবং অবৈধ নানা সেক্টরের কাজ বণ্টন বিষয়ক তদারকি এই ‘রাজাকারপুত্র’ করে থাকেন। সূত্র আরও বলছেন, এই ‘রাজাকারপুত্র’ প্রভাবশালী ওই দুই ব্যক্তি ছত্রচ্ছায়াতে এতটাই শক্তিশালী যে, তিনি একাই এই নারায়ণগঞ্জে তিনজন এমপির পাওয়ার নিয়ে ঘুরে বেড়ান। কারো কারো মতে, তিনি তিনজন এমপির ক্ষমতা একাই রাখেন!
এদিকে এসব তথ্য সংগ্রহ ইতোমধ্যেই প্রায় শেষ পর্যায়ে। আরও কিছু তথ্য ওই ‘রাজাকারপুত্র’ সম্পর্কে নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে। একই সাথে তথ্য সংগ্রহ করতে এসে বিভিন্ন এজেন্সি ও আওয়ামী লীগের নেতারা ‘রাজাকারপুত্র’ এতটা ক্ষমতাধর কীভাবে হলেন সে ভেবেই বিস্মিত। তবে, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের একটি শক্তি যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়, এই সরকার যখন যুদ্ধাপরাধিদেরকেও ছাড় দেয়নি, তখন এভাবে একজন রাজাকার শাবক কী করে ফুলেফেঁপে মোটাতাজা হচ্ছেন, এ নিয়ে দেখা দিয়েছে ব্যাপক প্রশ্ন।
সূত্র : নারায়ণগঞ্জ টু ডে









Discussion about this post