প্রাচ্যের ড্যান্ডিখ্যাত নারায়ণগঞ্জ যেন অরাজকতার নগরীতে পরিণত হয়েছে । অসাধু অপরাধীদের আস্ফালন যেন মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে ।
আইনশৃংখলা বহিনীর অসাধু কর্মকর্তারা রাজনৈতিক দলের নাম ব্যবহার করে অপরাধী চক্রের হোতাদের সাথে প্রকাশ্যে এবং গোপনে যোগসাজস করে এক সাথে সাত জনকে ধরে নিয়ে খুন করার ঘটনা এখনো ঝলঝল করছে । এমন লোকমহর্ষক ও চাঞ্চল্যকর ঘটনায় আইনশৃংখলা বাহিনীর ২৬ জন সরকারী কর্মকর্তা কর্মসচারী ও রাজনেতিক দলের নেতা চেলাচামুন্ডাদের ফাঁসিসহ মোট ৩৫ জনকে কঠোর শাস্তির রায় দেন ।
এমন দৃষ্টান্তস্থাপনকারী রায়ের পরও থেমে নেই আইনশৃংখলা বাহিনীর অপরাধ । নারায়ণগঞ্জে আইনশৃংখলা বাহিনীর অসংখ্য অসাধৃু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এখনো চলছে সকল ধরেণের অপরাধ ।
রমজান – ঈদকে সামনে রেখে আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ভারতীয় নিষিদ্ধ পন্যে বাজার সয়লাভ করে ফেলেছে । ভারতীয় নিষিদ্ধ পন্য ছাড়াও নারাযণগঞ্জের মজুদদার চক্র কোটি কোটি টাকার নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুদ করে রমজানে দেশবাসীর পকেট কাটতে এমন কোন কর্মকান্ড নাই যা এই চক্রের হোতারা করছেন না।
সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে ভোজ্য তেল নিয়ে তেলেসমাতি চললেও বিশাল মজুদ রয়েছে নগরীর নিতাইগঞ্জের গোপন গোডাউনে। আর চিনি ও লবন কেলেংকারীর চক্রের হোতারা কি করছেন তার খবর কে রাখেন ? আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু কর্মকর্তারা মাস শেষে মাসোযারা পেলেই তো সব শেষ । পাঠার বলি তো অবোধ জনগণ ।
এই নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের কারণে ভোজ্য তেলের তেলেসমাতি ছাড়াও সারা বছর জুড়েই সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লার ডিপো কেন্দ্র করে জ্বালানী তেল চুরির মহোৎসব প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে চললেও ডিবি পুলিশের ক্যাশিয়ার নূরুর তেলেসমাতিতে সকল অপরাধ যেন আইনসিদ্ধ হয়ে গেছে ।
খোদ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার একজন দারোগা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ডিপো এলাকায় প্রবেশ একবারেই নিষিদ্ধ । কোন কারণে যদি শীতলক্ষা নদীর পাড়ে তেল চুরির রমরমা কারবার একবার দেখে ফেললে ওই দারোগার আর রক্ষা নেই । সরকারী চাকরীজীবীদের সার্ভিস বুক তলব করে চাকরীর বারোটা বাজাতে আর দেরী করেন না কোন কোন কর্মকর্তা।
নারায়ণগঞ্জে তেলচুরি, গ্যাস চুরি, চাউল চুরি, চোরাই লবন ছাড়াও চোরাই সূতার কারবারীরা কতটা ক্ষমতাধর তা কেউ অনুমানই করতে পারেন না। বিশেষ করে মাদারীপুর শরিয়তপুর ও ফরিদপুরের ৩০/৩৫ জনের একটি চক্র যারা সারা বছর জুড়েই চোরাই সূতার কারবার করে একেক জন এই নগরীতে বিশাল বিশাল একাধিক অট্টালিকার মালিক। একেবারেই আঙ্গল ফুলে করাগাছ । অথচ এই চক্রের প্রায় সকলেই নারায়ণগঞ্জে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে আসার সময় গায়ে জামা ও পায়ের জুতা ক্রয় করা সামর্থ ছিলো না । চোরাই সূতার এমন ২০ জন কারবারীর বিরুদ্ধে কাস্টমস পৃথক দুটি মামলা করলেও অপরাধীদের টিকিটিও স্পর্শ করতে পারে নাই আইনশৃংখলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ।
মাস শেষে মাসোয়ারার কারণে কাস্টমস কর্মকর্তাদের স্থানীয় প্রশাসন কোন সহযোগিতা করেন নাই । ফলে অর্ধ শত কোটি টাকা ব্যয় করে মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েই আবার পুরোদমে সেই কারবার শুরু করেছে আরো প্রকাশ্যে ।
প্রতি বছেরের ন্যয় এবারো রমজান – ঈদকে সামনে রেখে চোরাই গ্যাসের সংযোগে কোন ধরণে অনুমতি ছাড়া এই নগরীতে অসংখ্য সেমাই কারখানা চালিয়ে যাচ্ছে অসাধু চক্র । এই সেমাই কারখানার খবর কি আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্তারা জানেন না ?এমন মন্তব্য নগরীর অনেকের ।
এমন সেমাই কারখানা ছাড়াও প্রতি বছরের মতো নরায়ণগঞ্জে ২৬/২৭ টি মুড়ি তৈরীর কারখানা বিরামহীনভাবে চোরাই গ্যাসসহ বিষাক্ত ইউরিয়া সার ও হাইড্রোস দিয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম দের জন্য তৈরী হচ্ছে বিষাক্ত মুড়ি। আইনশৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার তালিকায় এমন অপরাধীদের নাম না থাকলেও মাস শেষে মাসোয়ার নেয়ার তালিকায় আইনশৃংখলা বাহিনীর নির্লজ্জ কর্তাদের নাম ঠিক ই আছে ।
একই পন্থায় মেঘনা ও শীতলক্ষ্যা নদীতে দিনে ও রাতে চোরাই সয়াবিন তেলের চোরাই কারবারী একটি চক্র নিয়মিত তেল চুরি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন । এক্ষেত্রেও মাস শেষে মাসোযারার কারণে আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্তারা অন্ধ ও বদিরের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে ।
জেলার এমন অসংখ্য অপরাধীদের সাথে নিয়মিত মাসোয়ারা আদায় করে বিভিন্ন আইনশৃংখলা বাহিনীর অসাধু কর্তাদের টেবিলে টেবিলে বন্টন করে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবির পুলিশের ক্যাশিযার নূরু। কুমিল্লার ১৫ জন শীর্ষ ভারতীয় চোরাইকারবারী থেকে শুরু করে নারায়ণগঞ্জের সুইপার পট্টিতে চোলাই মদ বিক্রেতা সেন এন্ড কোম্পানী থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা আদায় করে যাচ্ছে এই ক্যাশিয়ার নূরু।
ডিবি পুলিশ ছাড়াও র্যাব, সিআইডি, থানা পুলিশ, পিআইবি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটদের নাম ব্যবহার করে বিনা বাধায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কন্সষ্টেবল বৃদ্ধ নূরুল ইসলাম ওরফে নুরু ক্যাশিয়ার চালিয়ে যাচ্ছে অপরাধ সাম্রাজ্য । আর এই সময়ে এই নূরুকে সকল ধরণের আইনী সহায়তা দিচ্ছে মাদারীপুরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা ।









Discussion about this post