বন্দরে ধর্ষিতার পরিবার ও স্বজনদের গ্রামছাড়া করে বাড়ি ঘরে লুটপাট এবং বাদীর ওপর হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় অনিক (২৩) নামের সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
২৩ এপ্রিল শনিবার রাতে চিড়ইপাড়া কলোনীতে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে ওই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
লুটপাট মামলার অন্যতম আসামি মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদ এখনও পালতক রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত অনিক চিড়ইপাড়া কলোনীর ভাড়াটিয়া কাজল মিয়ার ছেলে। সন্ত্রাসী অনিক, চেয়ারম্যান পুত্র শুভ বাহিনীর অন্যতম সদস্য ওই মামলার আসামি আমিনুলের সহযোগী।
মামলা তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই ফয়সাল জানান, গণধর্ষণ মামলার বাদীর ওপর হামলা ও স্বজনদের বাড়িঘর লুটপাটের মামলায় শনিবার রাতে চিড়ইপাড়া কলোনী সহ প্রত্যেক আসামির বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। এসময় অনিক নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এমামলার আসামি মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন সহ অন্যরা পলাতক রয়েছে। চাঞ্চল্যকর পৃথক দুই মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অভিযোগ, বন্দরে ইউপি সদস্যকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে তুলে টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতনের পর গণধর্ষনের শিকার কিশোরীর পরিবার ও স্বজনদের গ্রামছাড়া করে বাড়ি ঘরে লুটপাট চালিয়েছে চেয়ারম্যান মাকসুদ ও তার ছেলে শুভ বাহিনী। এভাবেই স্বাধীনতা যুদ্ধে মাকসুদের রাজাকার পরিবারের দাদা, বাবা, চাচারা লুটপাট, নারী ধর্ষণ, পাকিস্তানী আর্মি বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে লালখার বাগ, আনন্দনগর, বটতলা, গোকুলদাশেরবাগ সহ ১০টি গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয় এবং অসংখ্য মানুষকে নির্যাতনের পর হত্যা করেছে বলে ভুক্তভোগী এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অভিযোগ। স্বাধীনতা স্বপক্ষের দল আওয়ামীলীগ। এ সরকারের আমলে স্বাধীনতা বিরোধী পক্ষ রাজাকার পূত্র ও নাতী বাহিনী মুছাপুর, ধামগড় দুইটি ইউনিয়নে নিজস্ব এক রাজত্ব গড়ে তুলেছে বলে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত বন্দরে গণধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবারকে গ্রামছাড়া এবং স্বজনদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজাকারপুত্র মাকসুদ হোসেন সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার ২২ এপ্রিল বিকালে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে বন্দর থানায় এ মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, আমিনুল শেখ (৪০), ধর্ষক আলমগীর (২৫), তার ভাই আল আমিন (২৮), বাবা শুকুর আলী (৪৮), মা নাসিমা, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ধর্ষক রকির ভাই আসলাম (২২) জিয়াদ (৪৫), শরিফ (১৯), আরিফ (২৫), রনি (২১), অনিক (২৩), সুমন (২৫), নিলুফা (৪০) আবু তাহের (৪১) ও শামীম (৪০)।
মামলার বাদী জানান, শবেবরাতের রাতে তার মেয়েকে আলমগীর ও তার ফুফাতো ভাই রকি মিলে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় দুজনকে আসামি করে বন্দর থানায় মামলা হয়। ঘটনার দুই দিন পর আসামি রকি পালাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পুলিশি হেফাজতে মারা যায়। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।
তিনি জানান, মামলার পর আসামি আলমগীর ও তার পরিবার এবং ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন ও তার ছেলে শুভ হুমকি-ধমকি দিয়ে তাদের বাড়িছাড়া করে। এছাড়া তাদের স্বজনদের পাঁচটি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে।
এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে ২০ এপ্রিল ভিকটিম পরিবারের পক্ষে এক আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলমের আদালতে একটি পিটিশন মামলার আবেদন করেন।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জবানবন্দি ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আদালত তার অভিযোগ থানায় এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বন্দর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে থানায় মামলাটি রুজু করা হয়।









Discussion about this post